কবিতার কালিমাটি ১২৫ |
জমিয়েতোলা
লটবহর
(১)
লটপট করতে-করতে
সূর্যটা সেই উঠেই পড়ে
অগ্রহায়ণিক কুহা টু হাসি
রোদ, দড়ো
আলোলতা
দুলদুল চেপে আমার কুহোরে
ঢুকে কেমন দারুবুদ্ধ
জপে পশ্চিমের সন্ধ্যারাগ
চলি-চলি ডিসেম্বর
সাত কী ফসল তুলে আনে
মাটি-জল-বাতাস থেকে!
হিরে, গর
ঈপ্সু আমি
চিনতে পারি না ফারাক
উজ্জ্বলতা ক্ষণিকের,
হলাহলে মজে দীর্ঘ অনুরাগ
নিচাঁদ আকাশ,
থাকলে ভালো হত চাঁদিমাছায়া
টেনে নিত বিষ ও কূট
প্রাণারাম
মায়া আমি
সত্যি আমার ভাণ্ডে জমা
করি ধুতুরার
ফুল, কানারেজগি, আর অন্ধবাল্ব
(২)
পুরনো কাঁথা-বালিশ-লেপ
আমার মধ্যে জমতে-জমতে
তোশক হয়ে উঠল কবে
জানতে পারিনি
চাপ-তাপ আর
শ্লেষ্মা রক্তরস দানা বেঁধে
তামরসে পূর্ণ
কঠিনীভবনে নাম-কাম বদলে নিয়েছে সে
ভেবেছিলাম তোশকটাও
থেকে-থেকে নাম-ধাম বদলাবে
সে কিন্তু একইরকম থেকে খোলস
বদলায় শুধু
আমার হয়ে এখন
ফুল তোলে, ছাতা শুকোয়, বড়ি দ্যায়
ফুরসৎ পেয়ে
আমি লিখতে বসি রূপান্তরের গল্পসিরিজ, প্রকাশিতব্য
বাইরে ও ভেতরে
দুটো তোশক আমাকে জড়িয়েমড়িয়ে স্বমহিমায়
ভেতরে যখন বারুদের গন্ধ
বাইরে ন্যাপথলিন
আমার হয়ে ওরাই
জমায় পারানিধুলো খইবাতাসা কাঠ
এত মালিকানার
যে স্বত্ত্ব ভোগ করি, কিছু কম করে দ্যায়নি তোশক
(৩)
বাজারের ব্যাগ
হাতে জলে নেমে যাই
জল আমার গলা ছুঁয়ে দ্যায়
একদম ডোবায় না
জলে জমাই অনেক
ক্ষুদে মাছ, আমার
নিম্নাংশের ক্ষত সব খুটে খায়
দুর্বোধ্য অনুভূতি শরীরে
ব্যাগে ভরে
নিই ওদের, অধিকাংশই পালিয়ে বাঁচে
জলে জমানোর প্রাণান্তে ডাঙায়
ক্ষুদেদের মৃত্যু, লাশ
কেউ আমাকে বলে
দ্যায়নি এসব, বাপ-ঠাকুর্দাকে
দেখিনি কস্মিনকালেও এমনে
বাজার যেতেন সওদা
করতেন, ব্যাস্—
আমিও বাজারে
যাই, সওদা করি, মাঝেমধ্যে গিরগিটি খেলি
একটা আলু দুটো সিম তিনটে মটরশুঁটি
জমে ওঠে সওদার বাড়তি
আমিও বাজারে
যাই, দাম চেখে দেখি, এ-দোকান ও-দোকান
প্রিয় গান গোটাটা শুনে বলি ভাল্লাগচ্ছে
না
গান জমাই শুনে-শুনে
আমি জলে নামি,
ডুবে যাই, এত জমিয়েছি
আমি ডাঙায় ঘুরে বেড়াই, উড়তে পারি না
এত জমিয়েছি, আমি গর্তে পড়ে যাই,
উঠতে পারি না, এত জমিয়েছি…
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন