শনিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৩

গাট্রুড স্টেইন

 

প্রতিবেশী সাহিত্য

 

আমেরিকান কবি গাট্রুড স্টেইনের পাঁচটি কবিতা

 

(অনুবাদ: সম্রাট লস্কর)

 

Getrude Stein_Picasso Painting

 

কবি পরিচিতি: গাট্রুড স্টেইন / Gertrude Stein (১৮৭৪-১৯৪৬): আমেরিকান সাহিত্যিক ও চিত্র-সংগ্রাহক যদিও জীবনের অধিকাংশ সময় তিনি ফ্রান্সেই অতিবাহিত করেছেন। লিখেছেন কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, আত্মজীবনী। বিংশ শতকের শুরুর দুই দশকের ‘মর্ডানিস্ট’ আন্দোলনের অন্যতম মুখ্য চরিত্র ছিলেন স্টেইন। তাঁর লেখায়, বিশেষত কবিতায়, সাহিত্য সমালোচকেরা পেয়েছেন ‘অটোমেটিক রাইটিং’-এর স্পষ্ট নিদর্শন। যদিও স্টেইন নিজেই তার প্রতিবাদ করে বলেছেন "there can be automatic movements, but not automatic writing. Writing for the normal person is too complicated an activity to be indulged in automatically." প্যারিসে স্টেইনের ডেরায় একসময় নিয়মিত আড্ডায় বসতেন হেমিংওয়ে, ফিটজেরাল্ড, এজরা পাউন্ড, পিকাসো, মাতিসেরা। উপরে গাট্রুড স্টেইনের প্রতিকৃতিটা পিকাসোরই আঁকা। স্টেইনের কবিতায় পিকাসোর ‘cubist’ চিত্রধারার প্রভাবও বেশ প্রকট। ১৯১৪ সালে প্রকাশিত স্টেইনের ব্যতিক্রমী ও পরীক্ষামূলক (কাব্য)গ্রন্থ ‘Tender Buttons: Objects, Food, Rooms’ থেকে পাঁচটি কবিতার অনুবাদ করার চেষ্টা এখানে করা হল।          

 

তামা নয়, ধুলো

 

(মূল কবিতা: Dirt and Not Copper)

 

তামা নয়, ধুলোই কোনো রং-কে কালো করে। ধুলোই আকারকে করে ভীষণ ভারী

অথচ কোনো সুরকেই কঠিন করে তোলে না।

এটাই তৈরি করে করুণা ও নিরুদ্বেগ অবসর এমনকি সেই শক্তি যা দিয়ে টেবিল

প্রস্তুত হয় ডিনারের জন্য। অনেক জায়গা এখন যেগুলো আর ফাঁকা নেই। ওরা শুধু আচ্ছাদন দেখে।

 

মার্জিত নয় তেমন

 

(মূল কবিতা: Nothing Elegant)

 

কোনো আকর্ষণ, বিশেষ আকর্ষণ, শুধু দ্বিধাই বয়ে আনে। লাল যদি গোলাপ হয় আর তার চারিদিকে

থাকে প্রবেশ পথ, প্রবেশের সুযোগ যদি হয় আর পরিবর্তিত হয়ে যায় স্থানের চরিত্র তাহলে তো মানতেই

হয় কিছু জিনিস ঠিকঠাকই আছে। ব্যাপারটা কিন্তু বেশ আন্তরিক।

 

মিলড্রেডের ছাতা

 

(মূল কবিতা: Mildred’s Umbrella)

 

একটি কারণ বক্রতাহীন, একটি কারণ সজোরে উচ্চারিত, একটি কারণ আর এক অতিরিক্ত সংঘর্ষের

তীব্র আওয়াজ, আর এক অতিরিক্ত ওয়াগন, অতিরিক্তের চিহ্ন, থলি ছোট্ট থলি,

আর একটি প্রতিষ্ঠিত রং, ধূর্ততা মাখা, হালকা ধূসর রিবন-হীন,

এর মানে ক্ষয় মহাক্ষয় পুনরুদ্ধার।

 

একটা লম্বা পোশাক

 

(মূল কবিতা: A Long Dress)

 

বলতে পারো ওটা কোন স্রোত যা কলকব্জা বানায়, আওয়াজ হয় চড়চড় চড়চড়,

ওটা কোন স্রোত যা এনে দেয় লম্বা এক রেখা আর এক আবশ্যিক কটিদেশ

 

ওটা কোন স্রোত

ওটা কোন বাতাস, কোনটা ওটা?

কোথায় সেই নির্মল দৈর্ঘ্য, ওখানেই আছে তো, মনে রেখো কোনো অন্ধকার জায়গাই

আসলে অন্ধকার নয়, শুধু সাদা আর লাল হয় কালো, হলুদ আর সবুজ হয় নীল,

গোলাপি আসলে টকটকে লাল, আর রংধনুতেই থাকে সব রং। একটা রেখা

পার্থক্যটা জানান দেয়। একটা রেখাই শুধু জানিয়ে দেয় পার্থক্যটা ঠিক কোথায়।

 

ভয়ানক মুক্তি

 

(মূল কবিতা: A Frightful Release)

 

একটা পরিত্যক্ত ব্যাগ, কুড়িয়ে নিয়ে আবার ছুড়ে ফেলা সেই ব্যাগটি আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। জায়গাটা

দেখে মনে হয় আগের মতোই আছে অবিকল। টুকরো অংশটার কোনো পরিবর্তন হয়নি, একটি কণাও নয়,

ওটা বরং পড়েই আছে আগের মতো। বাকিটা নিতান্তই অব্যবস্থার ফল।   

 

 

 

 

     

           

 

        


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন