প্রতিবেশী সাহিত্য
ইলিয়াস নন্দিনো-র কবিতা
(অনুবাদ : বাণী চক্রবর্তী)
কবি পরিচিতি : ইলিয়াস নন্দিনো
মেক্সিকোতে জন্মগ্রহণ করেন ১৯ শে এপ্রিল, ১৯০০ এবং তাঁর মৃত্যদিবস ২ অক্টোবর, ১৯৯৩।
তিনি কবি হওয়ার সাথে এক সার্জনও ছিলেন। তাঁর কবিতায় রোমান্টিসিজম এবং সিম্বোলিক উপমার
বিশেষ প্রয়োগ দেখা যায়। সনেট ফর্মে প্রায়ই
লিখেছেন। ‘ইরোটিসিজম অফ বার্নিং হোয়াইট’ কালেকশনটির
জন্য তিনি মেক্সিকোর সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার পান ১৯৮৩ সালে।
নির্বাচিত কয়েকটি কবিতা
আকাশের নীলে যে প্রমাণ লুকিয়ে আছে
তার মাঝেই তোমার অবিস্মরণীয় মুখ
আবিষ্কার করেছি…
কষ্ট পেয়েছি তোমার অনুপস্থিতির
নীরব উপস্থিতিতে!
******
আমি ঘুরে বেড়াই…
নিজের থেকে অনেক দূরে।
যখন তোমার চোখের তীরে পৌঁছে যাই
বর্ধিত হৃদ স্পন্দন আমাকে
সবকিছু ভুলিয়ে দেয়!
*******
আমি আর তুমি সেখানে নেই
যেখানে কখনো একসাথে দাঁড়িয়েছিলাম।
আমরা অন্য কেউ এই লুকোনো ক্রসে
কম্পিত, ক্রন্দনরত, জীবন-রহিত,
উদাসীনতা মুছে দিয়েছে সে স্বপ্ন
যা কখনো আমরা দেখেছিলাম!
আমাদের আত্মার গ্রন্থি
যন্ত্রণায় পরিণত হয়েছে যা
দুজনকেই বিক্ষত করে চলেছে!
তবে আমি নিশ্চয়ই বেঁচে থাকবো
তোমার আকাঙ্ক্ষার মাঝে!
********
আমি দুটো জীবন যাপন করি,
প্রত্যেকটাই তাতক্ষনিক এবং ক্ষণস্থায়ী।
বিশেষটি স্মৃতিগুলো প্রজ্জ্বলিত করে
আমাকে পোড়ায়!
অন্যটি যা ধ্বংস করে ফেলেছি
নিজের যাপন দিয়ে…
আরও অনেক স্মৃতি তৈরি করে
যেগুলো প্রথমটির ইন্ধন হয়ে যায়।
একটা জীবন থেকে
অন্য জীবন তৈরি করি…
এবং এই দুটো মিলেই আমার অস্তিত্ব।
*******
তোমাকে আবিষ্কার করেছি
আমার স্বপ্নের স্বর্ণভাণ্ডারে…
পরিয়েছি অবিশ্বাস্য পোশাক
চোখের পল্লবে লিখেছি কবিতা
এবং সুউচ্চ সিংহাসনে সাজিয়ে রেখছি
তোমার প্রতিকৃতি!
*******
গভীরতম প্রদেশ থেকে
আমাকে নিঃশ্বাস বায়ু দাও
হতাশায় যে মাতাল হতে পারছিনা
তোমার প্রজ্জ্বলিত শিখায় আমি তরলিত
জীবনের উত্তাপে জ্বলে গিয়েছি!
*******
যদি আমার কাছে শব্দ থাকতো
আরও আরও শব্দ
জাহির করতে পারতাম যন্ত্রণা
আমার অনন্ত তৃষ্ণা…
শব্দগুলো প্রতিবিম্বহীন শূন্য আয়না
অথবা জল, যাতে প্রতিচ্ছায়া পড়ে না!
******
আমার মনে আছে…
শুধুমাত্র তোমার সাথেই বলতাম
ভালোবাসার জীবনের বিরুদ্ধে মৃত্যু
কেমন করে প্রচার চালাতে পারে!
আমরা কথা বলতাম
অনুমান করতাম
উত্তর খুঁজতাম
পরিশেষে হেরে যেতাম
মৃত্যুর চিন্তায় জীবনে মরে যেতাম।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন