কবিতার কালিমাটি ১২৫ |
চুম্বন আর সোঁদাগন্ধ
দীর্ঘক্ষণের
ব্যাকুলতাটুকু রাত্রি মুগ্ধ চোখের মতো পড়ে থাকে পৃথিবীর বিস্তীর্ণ উত্তলে – ডানা মুড়ে
বসার আগে শূন্যতা কমাতে চায় সে, জেগে থাকে কাঁটা কম্পাসের অতিক্রান্তির প্রগতি, সেখানে
মহুয়া গাছের আকর্ষণে কয়েকটা বহুকোষীয় ফড়িং চক্রাকার ঘুরতে ঘুরতে বৃক্ষ ও পাখিদের আশ্চর্য
মিলনে বসিয়ে দেয় পশ্চিমের চাঁদ; তারপর ধ্রবতারার কাছ দিয়ে অস্তমিত হতে থাকে স্বচ্ছ
মেঘের ভিতর
তখনও নাগরদোলাটি
ঘুরছে একঝাঁক মায়া নিয়ে – অথচ নিহত চিৎকারে রাস্তা কী গভীর! ভায়োলেট হতে হতে জন্ম খুঁজে
চলেছে চুম্বন আর সোঁদাগন্ধ, শুঁড় উঁচিয়ে শামুকেরা কুরে কুরে খেয়ে নিচ্ছে সমস্ত বাসক
পাতা, তারা বেঁধে ফেলেছে আমার মধ্য রাত্রিক আভা
হৃদয় অভিমুখের
নক্ষত্রগুলি নীল হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ
কর্কটক্রান্তির বিষণ্ণতা
কীভাবে এই তরঙ্গের
ভিতর রাত পোহায় ফ্রয়েড, ঝমঝম করে ভেঙে পড়ছে নীল তুলির স্পেস – এই তো সাদা হাত, শুকনো
নদীকাটা চর, ইজেল আঁকড়ে কাঁপছে হিয়া ভেজানো বৃক্ষ – আর অদ্ভূত ভাবে প্রচ্ছদ পল্লবের
নিঃশ্বাস বয়ে যাচ্ছে ইটভাটার রাস্তায় – এই
গ্রহ এবং খসে যাওয়া টিকটিকির লেজ নিয়ে কাচের স্বপ্ন ফুটে আছে ক্যালাইডোস্কোপের রঙিন
দেয়ালে
বিশাখা নক্ষত্রের
কড়িকাঠ থেকে মাকড়সার জালে তখনো কর্কটক্রান্তির বিষণ্ণতা, বিন্দু বিন্দু ঘাম জমছে চিবুকের
কিনারায় – এত বড় আকাশ সঙ্গে এত ঠা ঠা রোদ – নিজেকে খুলতে স্পেস চাই আরও; মহেন্দ্রযোগের
দিকে ভেসে যায় সারাৎসার রাস্তা
তাও ঈশান কোনে
বেল চারাটি লাগিয়েছে আস্তিকের বৃষ্টিপাতহীন কর্কট জাতক
চাঁদমালা গাছের ফুল
এমন কি সাঁকোর
মুখটি দুই ভ্রু'র মাঝে আটকে গেল – পরে কী ঘটবে তুমি কি জানো – সামান্য কয়েক পা সরু
উঠোন পেরিয়ে পিছল ললাট তখন প্রসারিত হচ্ছে ধান রোয়া মাঠের শিরায় শিরায় – স্বস্তিক আর্দ্রতায়
আটপৌরে গৃহবধুরা বর্ষাকালের টুকরো নিয়ে বাদামি হয়ে যাচ্ছে ঋতুসম্ভবে – এরই ফাঁকে কয়েকটা
ঘোড়াপোকা এগিয়ে যাচ্ছে পাটপাতার আনন্দ সত্তায়, পাখি আর ঈষৎ ভূগোলের বায়োগ্রাফিতে আর
কোনো পত্তন নেই নাবালের
এইবার কিছু
উত্তাপ সাজাও, লোমকূপের আনাচে কানাচে খাঁজকাটা মসের মনস্তাপ জমে, শিরোনামহীন ভেজা মাটির
গান গড়িয়ে যাওয়া অথই চৈতন্যে দোলে চাঁদমালা গাছের ফুল
সব ভাষা ম্লান
হয়ে গেলে মাইগ্রেনের সামনে জ্বলজ্বল করে সুপারমুন
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন