কবিতার কালিমাটি ১২৫ |
বুনো পিউমের দিনে
(১)
সংহারের
বাঁশি বাজে। নদী আর ফেরে না ঘরে। ভেঙে পড়ে সংসার সাম্রাজ্য। স্রোতের ভেতর, কান্নার
কী এক ম্যাজিক। ভুলে যাই কবে আমাকে কোলে নিয়েছিল নিরুত্তাপ মৃত্যুসায়রের ঢেউ।
সে
ঢেউ আলগা হয়।
ভেসে
আসে বুনো পিউমের ঘ্রাণ। মনে পড়ে রক্তস্রোতে মিশে যাওয়া তোমার উন্মাতাল ওই মুখ। মরুরেখা
ধরে চাররকম উড়ন্ত আলোর পিছনে ছুটতে ছুটতে সহসা সংঘর্ষ। সূর্যের আঁচ লেগে পুড়ে যায় আমাদের
জীয়নলতা।
(২)
যেভাবে
সন্ধ্যা নামে নগর ইস্পাতে তেমনই মৃদু আলোয় তোমাকে দেখেছি। উলবোনা ছেড়ে উদাস দু’হাত
মেখেছে সূর্যাস্তের রং। বর্ণিক নই, অলৌকিক দৃশ্যকে ধরতে শিখিনি। কেবল ডুবতে চেয়েছি
গভীর সে মুখে। উত্তরের হাওয়ায় ভাসতে চেয়েছি।
তৃষ্ণার্ত
বড়, চেয়েছি তুমি পান্থপাদপ হও।
মাঝরাতে
ঝড় এলো। বাগান ভাঙচুর। রিডভাঙ্গা হারমোনিয়ামে হাতড়ে বেড়াচ্ছি রাগ চন্দ্রকোষ। হেয়ার
রোড ভেসে যাচ্ছে বিরতিহীন কান্নায়।
(৩)
ব্যাসবাক্য
ছেড়ে কখন ঢুকে পড়েছি যাত্রা শেষের নৌকায়। স্বপ্নের তৃতীয় অধ্যায়। উপচে পড়া জীবন এখানে
থমকে গেছে স্মৃতি এ্যালবামে। আগা গোলুইয়ে বসে আছে দেখি মৃত্যুর অনুধ্যান।
আমার
হাত ধর তুমি। পথ দেখাও। ঢালের দিকে যেটুকু আলো দৃশ্যমান, তাকে বলো আত্মানুসন্ধানের
এই রাত বড় বাঙ্ময়। যেমন তুমি। বর্ণহীন অথচ চিরভাস্বর। নিরবয়ব তবু তোমার সৌন্দর্যে আমি
সদা বিমোহিত।
তোমাকে
বলি, পৃথিবীর সব গান থেমে যাবার পরও কোনো না কোনো এক প্রান্তে অপেক্ষা করবে আমার ট্যুইন
ফ্লেইম। অদেখায় আজন্ম। তার পদধ্বনি তবু শুনতে পাই। কেবল জানি না, পাখি ওড়ানো শেষে পিউমের বনে আমার
ফেলে যাওয়া দীর্ঘশ্বাসগুলো কখনও সে কুড়াবে কি না...
যদি
দেখা হয়। তাকে দিও তৃষ্ণার জল। এ জীবনে একবার তাকে নিঃস্তব্ধ দুপুর দিও…
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন