শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২২

সন্তর্পণ ভৌমিক

 

কবিতার কালিমাটি ১২২


সময় সংলাপ

 

আমি কি অস্থির হয়ে আছি

কেননা সময় আজ বিপন্ন অধিক

প্রাণখেকো জন্তু ঘোরে ফেরে

রাত হলে শব্দ হয় পাঁজর ভাঙ্গার

 

শব্দহীন গ‌্রহবাসী, প্রয়াত আত্মীয়

কার ছায়া এরা দেখে ধর্মসংকটে

অতিবৃদ্ধ, অতিদীর্ঘ, কিংবা নুলো

নিঃশ্বাসে দাঁড়ায় এসে জখমি ভীষণ

 

কারা তবু স্থির হয়ে থাকে

পদ্মউপদলে,

অথবা নদীর কোনো স্থবির সংগমে,

আমি রোজ আসি এইখানে মহুয়ার টানে

আর তিন দণ্ড বসে থাকি নগ্ন উপাচারে।

 

 

শব্দহীন কেউ হেঁটে যায়

 

কার শব্দ শোনা যায়

শ্রাব্যতার সীমানা পেরিয়ে

সন্ন্যাসী, মানুষ? নাকি

উদভ্রান্ত খেচর প্রবর?

 

কে হাঁটে ফেরারী যেন

অতিমিহি উদ্দেশ্য প্রবণ

জীবনে শুনেছে কি বাউলগীতি

জীবনের মূল্য কি খর্ব অধিক?

 

কে আসে ধূসর পায়ে

প্রাচীন দেবতা নাকি মৃত্যুসহচর?

নাকি আততায়ী প্রবল বিস্তারে

তোমার ঘ্রাণের কাছে এসে

বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিয়েছে।

 

বস্তু ধাবমান

 

স্তিমিত তোমার কাছে ছুটে আসছে বৃষ্টিমেঘদল

বিধৌত মুখের কাছে ফিকে হয়ে গেছে আজ

পৃথিবীর সব লেনদেন

অতল নিঃশ্বাসে কার পরিচিত ঘ্রাণ থাকে

সে কি আজ ধাবমান শূণ্যশুষ্ক এক বিষম কবরে

 

বৃথা যুদ্ধ, অপেক্ষা, প্রলাপ কিংবা রহস্য বিকৃতি

নিঃস্ব হৃদয়ের জলে হৃদকম্প স্থির থাকে

দৈব অনুগ্রহ দেখি না তেমন

 

রাত কি ধূসর হলো

গল্প হউক রাত্রিপোহানো

ভোর আজ দগ্ধ ও উগ্র হয়ে আছে

ঈশ্বরের অত্যধিক নীরবতা দেখে

মহাপাতকী হও পলায়নরত

 

অতএব সুবিধে যখন

অসংখ্য তস্কর আসে অগোছালো অনুযোগপ্রিয়

নিরিবিলি গ্রাহ্য হলো অস্তিত্ব তোমার

 

তুমি বিবিধ প্রকারে

নিয়েছো আশ্রয় আজ

পুরনো নিশিন্দা গাছে

অথবা পুকুর জলে

 

একান্তে আসছি আমি

বিনম্র ত্রিকালদর্শি

ছুঁয়ে যাব উইঢিবি কৌতুহলভরা

তোমাকে দেখছি ছুঁয়ে সব মিথ্যে, সব প্ররোচনা।

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন