কবিতার কালিমাটি ১২০ |
মাত্রাজ্ঞানহীন
ভালোবাসার
নামে
মোজাইক
করা ঘরে পা রেখেছো,
চিকচিক করা জিনিসের প্রতি
তোমার কী লোভ!
প্রবেশাধিকার
পেয়ে--
সবখানে
তোমার অধিকার,
মাত্রাজ্ঞানহীন!
রেলের
গতিও কমিয়ে ও থামিয়ে,
কাকে তুলছো?
কাকে ভুলছো?
বৃষ্টিতে
ভেজোনি একদিনও উচ্ছাসে!
নীল
আকাশও তাকিয়ে দেখোনি?
পুকুর পাড়েও বসোনি?
সেই
তুমি ভালোবাসার নামে রক্ষক হয়ে
যক্ষপুরী
তৈরি করে আজ কত রকমের
সর্বনাশ ডেকে আনছো!
নিজেরই
টিকিট ছিল না!
ছিল না প্রবেশপত্র!
এখন
কী অধিকার পেয়ে
যা
খুশি যা কিছু ছুঁয়ে দেখছো,
হীরে-জহরত
দেখে চোখও চড়কগাছ!
এ্যাকুরিয়ামের
মাছও--ভাজা করে খাও!
পই
পই করে উঠে যাচ্ছো মই পেয়ে!
ন্যাংটা
হয়ে পড়ছো--খেয়াল নেই!
কবিতা স্বয়ম্ভু
পদ
ও পদবী নিয়ে
কবিতাকে
কতদূর নিয়ে যাবে?
চেয়ারের
ক্ষমতায়
কবিতা কখনো ঐশ্বর্যমণ্ডিত হয় না,
শুধু
মমতায় মমতায়--
সে প্রাণ পায়।
টেনে-হেঁচড়ে
ও জোর করে
জোড়াতালি
দিয়ে কবিতাকে বড়জোর,
দোর পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারো
--পদকের জন্য,
পদককেও
পদাঘাত করে
কতজনের
কাছ থেকে
সে চিরদিনের জন্য চলে এসেছে,
আর ফিরেও তাকায়নি!
যেমন-তেমন
আবরণ ও আভরণ দিয়ে
কবিতাকে
রঙকরা দেওয়ালের পলেস্তারা
করা
যায় না কখনো।
নিজেরই
রঙে সে আপনাআপনি
উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
অন্য
কোনো উজ্জ্বলতায় সে কখনো
নিজের উজ্জ্বলতা হারায় না!
কিংবা
উজ্জ্বল হয় না!
গাঁজার
ধোঁয়ার মধ্যে কবিতাকে নিয়ে গিয়ে
রাখতে পারবে না,
ঘড়েল
ডিপ্লোমেটের আওতায়
কবিতা কখনো থাকে না!
যে
কোনো জাহাজের প্রপেলার হয় না!
কবিতা
এমনই যুদ্ধবীর--
তীর
লাগা বুকেও--শ্বাস নিয়ে উঠে দাঁড়ায়,
যায়
অন্তঃসলীলার কাছে--অন্তঃপ্রাণ নিয়ে!
কোনো
খেয়াঘাটে কবিতা কখনো অপেক্ষায় থাকে না,
রেলষ্টেশনেও না!
সে
তার নিজস্ব স্বাধীন পথ খুঁজে নিয়ে চলে।
তাকে
মাদুরে বসিয়ে যা তা গিলাতে পারবে না,
পাটিসাপটা
পিঠার জন্য দাঁতের পাটি সে দেখায় না।
কবিতা
থাকে তার নিজের প্রাণশক্তিতে
কবিতা
থাকে তার নিজের ঘ্রাণশক্তিতে!
কবিতা
হাঁটে তার নিজের পায়ের শক্তিতে!
কবিতা নিজেই স্বয়ম্ভু,
তার কোনো প্রভু লাগে না!
পরিপাটি
যে
ডিটারজেন্ট পাউডারে
জামাটা
পরিষ্কার করতে চাইছো,
তাতে সম্পূর্ণ ভালোমত পরিষ্কার হবে না!
বেশি
ময়লা হওয়া জামা
বেশিক্ষণ
ডিটারজেন্ট পাউডারে
ভিজিয়ে রাখলেও চলবে না!
কচলাতেও
হয়--জোরে কাচতেও হয়!
কলারের
ময়লা যাবে না!
হাতার ময়লা যাবে না!
হাঁটতে
গিয়ে যে দাগ লেগেছে--তা যাবে না!
অজানা
উড়ন্ত পাখির বিষ্ঠার দাগ লেগেছে--তা যাবে না!
সাবানও
মাখতে হয়--ক্ষারজলেও ভেজাতে হয়!
জামা
পরিষ্কার করতে হলে
আরও মনোযোগ দাও,
না
হলে জামার কিছু কিছু জায়গায়
ময়লা
থেকে যাবে--পরিষ্কার হবে না!
ইলেকট্রিক
বা কয়লার ইস্ত্রিতে--ইস্ত্রি করার পরও,
ময়লা তার নখদন্ত দেখাবে--অশালীন হয়ে উঠবে,
--বিদঘুটেও দেখাবে!
ও
জামা পরে পরিপাটি হয়ে থাকতে পারবে না!
পাপোষে পা
আপোষে
পাপোষে পা রাখি
যারা মুনিয়া পাখি ভেবে
--আমাকেও পোষে!
তারা
তো চাইবে--
তাকে
নিয়ে গুনগুন করি--গান করি,
হুকুমে
হুকুমে
বেহালাটাও হাতে ধরি!
ধাতু
ও প্রত্যয়ে থাকা ধাই ফুল
খনিজ
ধাতুতে তৈরি ফুলদানিতে রাখি!
অবশেষে
তার পদপাদে সেই ফুল রাখি!
আপোষের
এমনি স্বভাব!
ধানগাছ কেটে সেই মাঠে
ধুতরার বীজ বপন করি!
ধামালিতে মেতে উঠি!
উঠানওয়ালা
ঘরের বাসিন্দা হওয়ার পরও--
পরের
ঘরের পাপোষে পা রাখি!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন