কবিতার কালিমাটি ১২০ |
উপলব্ধি
(১)
অবাক বিস্ময়ে
দেখি, আজো
লুকোতে হয় আশ্চর্য
সেই নদী, দিতে হয় বাঁধ। বড়
বেশি বিপন্ন
বোধ করি।
জানি, ছোট্ট
একটি আলোড়নের
প্রয়োজন কেবল;
‘কেমন আছো তুমি?'
তারপর
ভেঙ্গে পড়ে
সবকিছু, ভেসে
যায় দু’কূল
চরাচর;
চোখের কোণে
জমে দু’ফোঁটা
অশ্রু স্ফটিকের
মত,
দ্যুতি ছড়ায়,
দ্রুত পড়তে থাকে
চোখের পলক,
আর
সন্তর্পণে পড়ে
কয়েকটি দীর্ঘশ্বাস।
(২)
আমি একটু দূরে
যাই—
দেখি তার অবিমিশ্র
আনন্দ। সে পেয়ে গেছে
সেই অলীক পথের
সন্ধান—
যেখানে সময়
ছড়িয়ে থাকে খন্ড খন্ড হয়ে—
আর সে কুড়োতে
থাকে, তার
আঁচল ভরে উঠে। তার নিত্য আসা যাওয়া
সেই পথ ধরে।
এখানে পাহাড়ি
ঝর্নার কুলুকুলু
শব্দে যেন অনন্ত সঙ্গীত—
আমি দূর থেকে
শুনি।
এখানে বাতাসে
মোহন সুর, থমকে দাঁড়িয়ে
কাল তার হাত
ধরে।
বিষাদের ভারে
দুলে উঠে মন, জানি কোনো
ছবিই চিরস্থায়ী
নয় —
স্মৃতিরাও একদিন
ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
(৩)
আটপৌরে দিন,
অবাক করার
মতো কিছুই নয়,
একেবারে আড়ম্বরহীন;
পানসে, একঘেয়ে
প্রাতরাশ, মনে
রাখার মত কিছুই
নয়। বাস ধরা, কাজে
যাওয়া, ঘন্টাখানেক
নিজের ভেতর
নিমজ্জন অথবা
অন্যের জীবনে উঁকিঝুঁকি;
সহানুভূতি,
ছোট ছোট বার্তার
আদানপ্রদান,
এই তো হয় প্রতিদিন। কিন্তু
আজ হঠাৎ করে
বেগুনি নীল
ছাইরঙা মেঘে
ঢাকা আকাশটা হাতছানি
দিয়ে বললো,
‘এই মেয়ে, এদিকে
এসো’! আকাশ
চিরে একটা দরোজা খুলে
গেলো, একটা
মই-এর মতো সিঁড়ি
নামলো। বাস,
যাত্রী, তাদের কলরব সব
আস্তে আস্তে
দূরে মিলিয়ে গেল,
আর আমি ধীরে
ধীরে এক পা দু পা করে
সিঁড়ির দিকে
এগিয়ে গেলাম।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন