কবিতার কালিমাটি ১১৯ |
দেখা হবে
কথা ছিল কোনও এক বিকেলে দেখা
হবে। এককাপ চা, আর
কিছু গল্প,
হ্যাঁ কোনও এক আপাত নির্জন
জায়গায়, ভিড়
নেই… লোকজন
কম,
তারপর
দু’জন
ফিরে যাবে যে যার বাড়ি। চলে আসার সময় হয়ত কেউ একজন
মুহূর্ত বন্দি করবে
ক্যামেরায়।
তারপর
হয়ত আর কখনও দেখা হবে না।
এইটুকুই কথা ছিল।
তারপর ঝড় উঠল! তারপর কী
বৃষ্টি! গাড়িটা
তবু চলছে, স্টিয়ারিং-এ হাত।
কথা ছিল দেখা হবে যে। কী যেন
হলো!
তারপর
পরদিন খবরের কাগজে দোমড়ানো
গাড়িতে কালো শিফনে একটা শরীর,
একটা ছবি, একটা
খবর। তখনও হাতের আঙুলে যত্নে লাগানো
নেলপেন্ট, ঠোঁটে
ডার্ক চকলেট লিপস্টিক।
ময়ূরাক্ষী
আগে তো রঙের বাহারেই চোখ
আটকেছে বারবার!
তবে, ময়ূরের চোখের মায়া, আমি
দূর থেকে দেখেছিলাম একবার।
পেখমের রঙ নেই, গভীর এক নদী।
মন বলে ডুব দিই, তল পাই যদি!
যেদিন পথে প্রথম আলাপ হলো,
জানলাম, সে এক ময়ূরাক্ষী
ছিল!
যেদিন প্রথম
অন্ধকার রাস্তায় হঠাৎ চোখে
চোখ রেখেছিলে, সেদিন তোমাকে ঠিকমত দেখিনি আমি।
আসলে অবজ্ঞার দৃষ্টিতে ঝাপসা
হয় ক্যানভাস।
তারপর, বছর দুই পর আবার ভিড়
বাসে, আমার পাশের সিটে তোমার গায়ের গন্ধ…
আমি সেই প্রথম দেখেছিলাম
দুচোখ ভরে, তোমাকে দেখেছিলাম আমি প্রথম।
আমাদের কথা হয়নি কোনও,
নীরবতার কি কোনও ভাষা থাকে?
সে বিষয়ে তর্ক চলছে মনে মনে।
তবে চোখের ভাষা নিয়ে তো তর্ক চলে না।
অবশেষে কথারা করে নিল
বিনিময়, নীরবে, পলকের ওঠা নামায়, ঠোঁটের আধখোলা চাপা হাসিতে।
দুজনের নামার সময়টা আলাদাই
ছিল, যেমনটা হয় আর কি।
একজন নামলে অবুঝ চোখ সামনের
ভিড়ে হারিয়ে যেতে দেখলো
কালো শিফনের আঁচল, হাতখোঁপা…
চুড়ির রিনরিন শব্দ মিলিয়ে গেল ধীরে।
অন্যজনও লুকোলো, পিছন ফিরে
একবার শেষ দেখার ইচ্ছে গোপনে নিয়ে পথে নামল,
থেমে রইল… বাসের গতির পিছনে
চোখের দৃষ্টি ছুটল অল্প।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন