বুধবার, ১৩ জুলাই, ২০২২

ইন্দ্রনীল চক্রবর্তী

 

কবিতার কালিমাটি ১১৯


মোহিনী

 

গাছের আকাশ থেকে নামা

মোহিনী মেঘ। অস্থির হাওয়া যেটুকু পার করে গেল -

কুয়ো, হাওয়া মোরগের বিকেল। একফোঁটা জলের খা খা করা নিকানো উঠান।

একলা জ্বরে মা-ছাড়া ছেলেকে

নিয়ে নেমে আসে হেমন্তের সন্ধ্যে। চালায় লেগে থাকা দুপুরের বৃষ্টি।

সলতে জ্বলে, জ্বলে বিকেলের প্রাণ।

 

আসওয়াগ

 

কাছাকাছি ছিল যে সমস্ত অক্টোপাসের দিন,

রাতের গায়ে থাকা ঘুমন্ত নিথর এক একটি খাদ্যত জ্ঞান।

সন্তান সম্ভব বিকেলগুলির হাওয়া চুরি করে যাওয়া

জ্যোৎস্নার গাছ।

বৃষ্টি পড়ে না, শব্দ ঝরে না, কফি জমে থাকে, বিছানায় লেগে থাকে

রক্ত আজ।

 

ঠিক দুপুরবেলা

 

ঠিক দুপুরবেলা তোমার চিরায়তের দেশে নিয়ে আসে

আকাশ থেকে নির্বিকার কল্পে, দু তিনটে চিল। এখন বিলম্বিত জেগে

মাছের চোখে প্রাণ, ইতিহাস, সান্নিধ্য।

ঘুমিয়ে পড়ছে ঠাকুমার

বলা গল্প, বিস্তীর্ণ মাঠ, নিঃসঙ্গ গাছ বাড়ি, ছলাৎ ঝিল, ঝাঁ ঝাঁ করা

দুপুরগুলি।

টুকরো মাছি, হাঁ করা মুখ, উল্টে যাওয়া চোখ, গড়িয়ে যাওয়া

নারকেল মাথা, স্থান-কাল নির্বিচারে বধ্য।

 

আদি রাক্ষস

 

হাহাকার করে যে পৃথিবীর সমস্ত দাবানল,

অরণ্য হে অরণ্য, আকাশচুম্বী গাছের জড়।

খিদের কাছে, ছায়ার কাছে, আদি পাপের কাছে

পুড়তে থাকে ফসিলের ঘর।

সমস্ত কাল হতে ধূর্ত শেয়ালে -

নিছক রক্তে ভেসে যায়

সভ্যতার ভড়।

বর্ণাঢ্য আকাশ, অতীন্দ্রিয় কাক, ছায়া আকাশ,

ঝরা পাতার সনেট গুচ্ছে

আদি রাক্ষস নিদ্রিত থাকে

আমাদের উপর।

 

ওড়নার রঙ লাল

 

সূর্যের কাছে আলোর হেতু খুঁজতে খুঁজতে দাঁড়িয়ে গেল,

পৃথিবীর সমস্ত হাওয়াকে সঙ্গী করে নিমগাছের ডালে ছিল ওড়নার রঙ লাল।

সমস্ত দুপুর এখানে আটকে গেছিল, পুরনো ঘণ্টা ধবনিতে-

টুঁ শব্দটি না করে এক পায়ে পার হয়ে গেল ষোড়শীর স্বপ্ন।

ভুল চোখে টের পেল জেগে ওঠা  স্বপ্নের রঙ  লাল।

 

 

 

 

 

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন