কবিতার কালিমাটি ১১৮ |
হাঁসপালকের রঙ
হেঁটে যাওয়া
নূপুর ছন্দে,
নিক্কন শুনে
বেড়ে ওঠা জীবনে
এখন তুমুল ঢক্কানিনাদ
পরিধির বাইরে
চটুল সঙ্গীত
দর্শন নয়, অগণন
দৃষ্টিসুখ
চপলধ্বনি
নয়ন ভোলানো
রূপ নয় ঠমক, গমক
মনোহরা উড়নচুল
এখন চুল ওড়ে
খনিজ আবহে
শরীরে ত্বড়িতের
বদলে
জড়ানো তাড়িত
অবক্ষয়
দশক চলেছে ছুটে
মনোনিবেশ আদিরসাত্মক
নবপর্যায়ে প্রায়
সার্বজনীন
কাচ ধারণ করেছে
আঙুলে
আত্মপরিচয় ঘোচার
আগে মেখে নাও হাঁসপালকের রঙ
অনাদায়ী
মুহূর্ত ধরে
রাখে প্রতিটি ছবি
বাকিটা অনাদায়ী
ঋণ
এ জন্ম সরসী
এ জন্ম রঙীন
এ জন্মে রাধিকা
কানাই
মিলেমিশে রাধাভাবে
লীন
এ জন্মেই হিটলার,
স্তেফান ও রাঁবো
এ জন্মেই সরোজিনী,
কাম্যুকে পাবো
এ জন্মেই কর্ণ
আর অর্জুনের রণ
জন্মগুলো বেকসুর
বাকিটা স্মরণ
জন্মান্তর মানেনি
ভীম বাহুবল
এ জন্মেই পাঞ্চালী,
দিঘিভরা জল
কর্ষণে উদিত
সকল ধ্রুপদের বিষয় আশয়
অদ্বিতীয়া জাতিকার
দাবিদার হয়
(সপুত্র অর্জুন
ও চিত্রাঙ্গদা, সপুত্র সুভদ্রা, উলুপী এবং ভানুমতী ও দুর্যোধনের বিলাপের মুহূর্ত, ঘোর
অমানিশায় ডেকে আনে যে কৃষ্ণবর্ণা বিদ্যুৎ, হাহাকার নয় তাঁর বুকে যে আগুন দাউ দাউ, এক
পা এক পা হেঁটে ধারণ করে আছে এই কাহিনীচিত্র। পৃথিবীর বুকে যা শেষ মুহূর্ত-সিল্যুট
প্রিয়তমা।)
কচ্ছপজন্ম
দুটো গ্রামের
একটা একটা পাড়া নিয়ে
বানিয়েছি আমার
নিজস্ব ‘পাড়াবাহার’
যেখানে নিজস্বী
তুলে তুলে
ক্লান্ত আমার
প্রতিবিম্ব ধরে রাখে
বলাইদার হাতে
কাটা স্বচ্ছ পুকুর দু'টি
টলটলে জলটাও
আমারই আমারই
অকাতরে বিলোতে
চেয়ে
প্রবল বন্যা
কখনও খরা দেখেছে
আমার সাতপাকের
বন্ধন
দীর্ঘতম ক্ষতচিহ্ন
নির্মাণ করছে এখন
একে একে বাগান,
খামারবাড়ি ও পণ্যঘর
খোদাই ও স্ফূরণে
অজন্তা, ইলোরা, মহাবলীপূরম
অথচ পান্থশালা
নির্মাণই জরুরি ছিল
নরনারায়ণ বলে
কিছু হয় না
আমরা সেবা করছি
শয়তানের
মানুষের ছদ্মবেশে
যারা স্বচ্ছন্দে বাস করছে
আস্তিনে সাপ
ঢেকে রেখে
খরগোশ জন্ম
ঘেঁটে দেখে অস্তিত্বের সংকট
বুঝেছে ওরা
প্রারম্ভেই,
যাদের বন্ধুত্ব
দিয়েছি, তাদের
উচ্ছিষ্ট হাসির
শিরায় ষড়যন্ত্র-লিপি
পাড়া, গ্রাম
বা শহরের হৃৎপিন্ডে
দ্রুত অস্ত্রোপচার
জরুরি-র সংকেত
চকচকে লোভের
কাছে সমর্পণ নয় কখনই
কচ্ছপ জন্মই
কাম্য আমার।
প্রতিটি কবিতাই মুগ্ধ করলো। ভালো থেকো কবি।💖
উত্তরমুছুন