কবিতার কালিমাটি ১১৮ |
লাশকাটা ঘর
একদিন আমার
বদলে বিছানায়
শুয়ে থাকবে
আমার লাশ।
একদিন আমিও
নিশ্চিন্তে
শুয়ে থাকব ওই
লাশকাটা ঘরে,
অন্যান্য লাশের
পচা গলা গন্ধ
বেমালুম ভুলে
গিয়ে।
যতবার হেঁটে
গেছি মর্গের রাস্তায়
নাকে চেপে ধরেছি
রুমাল
পেরিয়ে গিয়েছি
খুব দ্রুত।
যতই এড়িয়ে চলি,
যতই ছুটি না কেন
একদিন ঠিক পৌঁছে
যাব
ওই লাশকাটা
ঘরে।
পোড়া
যতদিন প্রাণ
ছিল পুড়িয়েছি মন
তিলেতিলে মন
পোড়া, ওটাই জীবন।
আজ আর মন নেই,
মন পুড়ে শেষ
চিতাতেই মহাসুখে
শুয়ে আছি বেশ।
পোড়াবে? পোড়াও
তবে, আজ আমি স্থির
পুড়বে না মন
আর, পুড়বে শরীর।
শ্মশান
ফিরতি ট্রেনের
যাত্রীরা সব জড় হয়েছে
এখানেও খুব
লম্বা লাইন।
এক এক করে সব
উঠে পড়ছে
রিজার্ভ স্লিপার
কামরায়।
চিচিং ফাঁকের
মত দরজাটা ঝপ করে বন্ধ হল
তারপর সাদা
ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে
ট্রেনটা চলে
গেল দূর থেকে দূরে
সেই নীল তারাদের
দেশে।
জীবনের জয়গান
মৌমাছিরা গাইল
গুঞ্জন
ফুলে এসে বসল
প্রজাপতি
পাতালের গভীরে
শিকড় চলল জলের সন্ধানে
সন্ধানী পাতারা
খুঁজল সূর্যালোক
পাখিরা ধরল
গান
উড়ে চলল আকাশের
বুক চিরে
মৃত্যুর শীতল
ছোবলকে নস্যাৎ করে দিয়ে
সবাই চলল জীবনের
জয়গান গাইতে...
মৃত্যু
বিদ্যুৎ উৎপাদন
কেন্দ্রের কনডেনসারের মতো
পার্থিব জীবনে
মৃত্যুও এক খুব প্রয়োজনীয় ক্ষতি।
নতুন মুখের
শিশু, টাটকা গোলাপ
কিছুই থাকত
না, মৃত্যু না থাকলে।
মৃত্যু না থাকলে
আজ পৃথিবীটা ভরে যেত
বৃদ্ধ বৃদ্ধায়
আর বৃদ্ধাশ্রমে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন