কবিতার কালিমাটি ১১৫ |
ছায়া
তোমার ছায়ার
আড়ালে থাকাই মনস্থ করলাম
দূরের পথ, এখনো
অনেকটা বাকি,
সুনিবিড় ছায়ারা
একে একে যে যার নিজের
ঘরে চলে গেছে
শুধু তোমার ছায়া ছাড়া।
দ্যাখো, ওই
দূরের পাহাড়টা কেমন দাঁড়িয়ে
ওর গায়ে জন্ম
নিয়েছে হাজার হাজার গুল্মলতা
ও তাদের পালন
করে, তাই ভেঙে পড়ে না।
পাহাড় ভেঙে
পড়লে ওই লতাপাতাদের কী হবে?
তুমি এভাবেই
ছায়াটা রেখো চিরকাল
শ্রান্ত, অবসন্ন
আমি একটু জিরিয়ে নেব।
কাজলনয়না মেয়ে
আইভিলতার ফাঁক
দিয়ে রূপসা নদীর ধারে
তোমায় দেখেছিলাম
কাজলনয়না মেয়ে।
তোমার চলার
পথে ফুটেছিলো টগরফুল
শালুকপাতা সরিয়ে
রেখেছিলাম তোমার হাসি
মৌটুসী গান
গেয়ে বলেছিল কবিতা দিও একরাশি
যে কবিতায় না
থাকে কোনো দ্বন্দ্ব শুধু শিশুর সরলতা।
এমন কিছু দিয়ে
যেও যা পড়ে এক ব্যথিত মন
আবার হেসে উঠে
ফের উল বুনতে বসে,
স্পন্দিত আবেগে
হেসে ওঠে কদমের পাপড়ি,
বোগেনভেলিয়ার
ঝাড়, এমনি কিছু দিয়ে যেও মেয়ে।
সাঁওতাল মেয়ে
মেঠোপথের আল
ধরে আঁকাবাঁকা পথ দিয়ে
হেঁটে আসে সেই
সাঁওতাল মেয়ে ~
মাথায় তার চুড়ো
করা খোঁপা
ঠোঁটে পানের
লাল,
কাঁধে ঝোলা
রুপার দুল,
নাকে তিলক মাটির
ফোঁটা,
দুগালে দুটো
আলতার ফোঁটা
পায়ে রুপোর
নূপুর
মেঘলা দূপুরে
আলুথালু বেশে গান গেয়ে
রিনিঝিনি পায়ে
হাঁটে ওই সাঁওতালী মেয়ে~
ত্রস্তনয়ন কাজলে
আঁকা
টিকোলো নাকে
চকচকে ফোঁটা
আলতায় রাঙা
ছোট পা দুটি ফেলে
একরাশ খুশি
রেখে গেল ওই সাঁওতাল মেয়ে ~
বাঁশপাতা সরসর
করে কেঁপে ওঠে
সর্ষেফুল ঢেউ
তুলে মিলিয়ে যায়
একঝাঁক পাখি
নীল আকাশের বুক চিরে
এলোমেলো হাওয়ায়
দাগ কেটে যায়
সব কিছু ছাড়িয়ে
কোমল পা দুটি ফেলে
বনপথে হারালো
ওই সাঁওতাল মেয়ে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন