রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

জয়িতা ভট্টাচার্য

 

কালিমাটির ঝুরোগল্প ১০৫


শোকগাথা

ঠাকুমা বলতেন একটা পয়সা পয়সা নয়। তাই লোকের কাছে তখন অনেক পয়সা থাকত। পাঁচ, দশ, আট হামেশাই।

দু-একটা টাকা খোয়া যেত, তাতে ক্ষতি ছিলো না।

সেই সময়কার অনেক সেজজ্যাঠা, ছোটকা, রাঙাপিসি অথবা ছোটো-মেজ- সেজ মাসিরা এখন ডোডোপাখি।

মাথায় সাদা কদম ফুল নিয়ে রোদে আচার দিত কোনো  বিশুদ্ধ নারী, তাদের স্বামীর মুখ আর মনে ছিলো না। রোদে বসে রসের কথা বলতে বলতে লুটিয়ে পড়ত হেসে;

আমরা খুব হিসেব করে খরচ করি রস...

ভালো থাকার রকম ফেরে তুমি বলছিলে, ‘তোকে মেরে ফেলব আজ’

আমি বললাম, ‘প্রতিবার তাই তো করো’। সেদিন অশোক অষ্টমী ছিলো। দুটো হাত আষ্টেপৃষ্টে চেপে আছ, তোমার চোখে চোখ রেখে দেখলাম বিশ্বরূপ। তোমার হাতে বাঁধা লাল সুতোয় বন্ধক রাখা আমার সমস্ত কামনার ঘুম।

বড় হতে হতে ফিরে আসতে লাগল একেকটি সাদাখাম যার এক কোণে বইত গঙ্গা। সাদা পায়রার মতো ওরা সব দল বেঁধে চলে গেল সমুদ্র দেখতে।

তোমার কাছে ফুল চেয়েছিলাম তুমি আনলে বিরিয়ানি, হয়ত ফুল তোমার সিলেবাসে ছিলো না। তোমার ভাই বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর কখনও ফিরে আসেনি। মা তোমার চাঁদ দেখে রোজ, ফুল তোলে।

সেই সময়ে একটি থালার থেকে সবার ভাতের গরাস। সেই সময়ে একজন  স্তালিন সব পরিবারে। সাম্যবাদ ছিলো বইতে লেখা। তোমার মুখের ভাঁজ, গায়ের তিল আর বুকের লোম সবটাই জানা তবু আমি তোমাকে স্বপ্ন দেখি রোজ। দেখি

কেমন করে নদী সরে যায় আর শূন্য বালির চর পড়ে থাকে ডোডোপাখি হয়ে।

আমরা তারপর একদিন খুব ব্যস্ত হয়ে পড়লাম কাজে-কর্মে।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন