রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

দেবনাথ সুকান্ত

 

কবিতার কালিমাটি ১১৫


ঝুটা

(১)

এভাবেই দিশাহীনতায় হারিয়ে যাব তোমরা কেউ ডেকো না, মিলিয়ে যাওয়ার আগে এই হলুদ পাতার শিরা উপশিরায় যেটুকু নির্জনতা চেয়েছিলাম, তা হয়তো প্রতিটি মানুষেরই নুন পান্তা সামান্য ফোঁড়নের কাছে এতটাই নশ্বর যে সহজ হয়ে আসে মৃত্যু, অন্নময় নিজেকে ভাঙতে থাকে, তারপর অণু পরমাণু হয়ে প্রতিটি ধাপ সে এক নাম না জানা সতীর অক্ষতযোনি, কেউ এলো না, নিজেকে নিজের হাতেই তুলে দিলাম হে অরণি, তোমার কাছে অনেক কিছু বলার আছে একটু মহুয়া দাও, জড়ানো নেশার কক্ষপথে ঘুরে পূর্ণ করবো জীবন, তখন কি আর বলতে পারবে আমাকে ‘ঝুটা’, এই অখ্যাত স্টেশনের বেঞ্চিতে বসে চলে যাওয়া ট্রেনের দিকে তাকিয়ে থাকা, সে যে কি কষ্টের, বলেছিল ফোন কোরো, বলেছিলাম করবো, অথচ সেও জানে আমিও--  

সৌজন্যতায় লুকিয়ে আছে শুকিয়ে যাওয়া নদী, তারপর সে আমার রক্তে বয়ে যাবে-

 (২)

মাইগ্রেটেড পাখিরা উড়ে গেলে, আমিও এগিয়ে যাব মায়ের প্রসবকালীন স্ফীত পেটের দিকে, কুসুম গরম জলে ভাসমান নিজেরই ভ্রূণের কাছে কান পেতে শুনতে চাইবো কখন আত্মা এলো বুকে, কখনই বা মায়া তার অস্ত্র নিয়ে দাঁড়ালো অপরাজেয়, তুমিও এই উচ্ছ্বাস নিয়ে চলে গেলে পাহাড়ের পাকদণ্ডি পেরিয়ে সেই মিথ্যের দিকে, আর জিওন কাঠি হয়ে উঠলো রাত, হ্যাঁ আমি একটি মাত্র চিঠি লিখেছিলাম আর তর্জমা করেছি পৃথিবীর সমস্ত ভাষায়, কোনও ভ্রান্তি না থাকে আর

(৩)  

কত গূঢ় তাপ উত্তাপ, ‘মেলাংকলি স্যাডনেশ’ নিয়ে উড়ে যায় পৃথিবী অন্তিম মৃত্যু পেরিয়ে, ওখানে মুক্তিকামী, ওখানেই নিরীশ্বর, চাঁদের ক্ষত নিয়ে দাঁড়িয়েছে আর তাকিয়ে আছে আমার কালো হয়ে আসা চোখের চারপাশে, তুমি কি মিথ্যেও বলতে শেখনি ভালো করে, দেখো এ জন্মের ‘ছৌ’ নাচে মুখোটার ভিতরে পালিত চোখ, খুঁজে চলেছে এক বিন্দুবিসর্গ থেকে অন্য আলোক পথ, আর ছলকে উঠছে আমাদের যুদ্ধবিগ্রহ, তুমি যে সাজে নিজেকে ঢেকেছ আমিও সে সাজেই রেখেছি লজ্জাখানি, মাঝখানে বয়ে যাওয়া শূন্যতার স্রোত, নিজেদের আয়ু নিয়ে উঠে গেছে আকাশের দিকে--   

আর এই সেতু, সেই শুধু জানে কতটা মিথ্যুক আমি, না সাধক না সংগ্রামী--

 

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন