রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

তৈমুর খান

 

কবিতার কালিমাটি ১১৫


হিসেব

 

ভ্রষ্ট পথে নষ্ট আলোর শব

আমরা সব কষ্ট পাওয়া জীব

সন্ধে সকাল ব্যর্থ কলরব

চোখের জলে ভেসে যাওয়া শিব

 

ঘরবাঁধা ও ঘরছাড়ার গল্প

অতীত এবং ভবিষ্যতের সেতু

মরার চেয়ে বেঁচে থাকি অল্প

দ্বিখণ্ডিত সত্তা নিয়ে যেমন রাহু কেতু

 

কার তরবারি কোথায় গিয়ে নামে

ছিটকে আসে গরম গরম রক্ত

মাথা পড়ে দক্ষিণে ও বামে

ভক্তির রথ টানতে থাকে ভক্ত

 

নিজেকে আজ ডেকে ডেকে ফিরি

রাস্তায় রাস্তা খুঁজে খুঁজে

নৌকাও আজ নয়কো পারের তরী

আঁধারেও সব দেখি চোখ বুজে

 

দীক্ষা

 

সমস্ত পুরুষইচ্ছাগুলি দীক্ষা নেয়

আদিম অরণ্য লীলাময় প্রেমভূমি

সেখানেই উড়ে আসে সোনালি যুবতী

অনন্ত যৌবন নিয়ে বয়ে চলে সময়ের নদী

 

মাংস

 

মা নরম মাংস ছিঁড়ে ছিঁড়ে দিচ্ছে

আমার যেন দাঁত নেই, লেজ নাড়ছি

শিকারের মৃত চোখ চাটছি জিভ দিয়ে

হৃদয়ের গান থেমে গেছে

রক্তে ভিজে গেছে মেঘ

 

অরণ্যের পর অরণ্য, কোথাও সমাজ নেই

বিকেলের লাল হ্রদ, জল খাচ্ছি

হিংস্র সভ্যতার পড়শি সবাই

 

মা এক একবার থাবা তুলছে

এক একবার ঊর্ধ্বে চেয়ে দেখছে

আমি ঘ্রাণ পাচ্ছি

আর সেসব ঘ্রাণের ব্যাকরণ জানি না বলে

এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে সব

 

চারিপাশে গর্জন ঝরে পড়ছে

আমিও হুংকার দিতে শিখছি এবার

 

নরম মাংস বেশ সুস্বাদু কল্পনার

আদিম কবিরা এভাবেই মাংস খায়।

 

কেউ-ই জানে না কিছুই

 

কোনদিকে বল গড়ে যাচ্ছে

কেউ-ই জানে না

সবাই খেলতে এসেছে

খেলতে খেলতে গড়াচ্ছে বেলাটুকু

 

উঠোনের চারিপাশে সমাজ রাষ্ট্রের মেহগনি

উদ্বাহু হাত তুলে দাঁড়িয়ে আছে

পরিযায়ী হলুদ পাখি বসেছে গাছে

সমস্ত দুর্দৈব বাতাস এসে হাততালি দেয়

 

বল গড়ে গড়ে যাচ্ছে

আর সব শিরাকাটা গাছেদের হাতে রক্ত গড়াচ্ছে

শেষ সূর্যের হাসিতে ভেসে যাচ্ছে মেঘ

 

দোলাচল নৌকায় বসেছে আবেগ

সনাতন ঘোড়াগুলি ছুটছে কোথায়

কিছুই জানে না কেউ

রাতের ভেতরে লুকিয়ে যাচ্ছে কোন্ রাত!

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন