শুক্রবার, ১২ নভেম্বর, ২০২১

নীপবীথি ভৌমিক

 

কবিতার কালিমাটি ১১২


চেনা

 

সব আলো নিভে গেলে

আবার জ্বলে ওঠে মন।

চরাচরে জাগে ঘুমঋতুর গান

মধ্যবর্তী সঙ্গীত ভেসে আসে

ধান থেকে ধানের বুক ছুঁয়ে যাওয়া

হৈমন্তিক বিরহের সাথে।

 

এই যে এখন সন্ধ্যা,

মাঠ থেকে ‌মাঠের হিম গভীরে

ভেসে যাওয়া রাত পাখির আহ্বান!

কাকে খোঁজে তাঁরা?

ঠোঁটের বুকে লিখে রাখা চিঠিতে

কোন ঠিকানা সাজানো থাকে ‌তাদের?

 

‌জানি না। হয়তো জানি না

বলেই, জানাকেও প্রলাপ বলে

ধার্য করি আজ!

শিশিরের গানে ভিজে যায়

অশ্রুনদীর ঢেউ,

অনাহুত কেউ কি চায় ফিরে

পেতে সেই সঙ্গীত, সেই মিথ্যে

জন্মের খেলা!

 

এসব বিরহ জানো আসলে!

আর‌ বিরহের প্রেমিক আমি,

তাও ‌কী জানো তুমি?

 

স্বপ্ন

 

এই সমস্ত স্বপ্নের মাঝেই আবার জন্মান্তর খোঁজা

দৃশ্য জুড়ে ধূ ধূ নেমে আসা অজানা জলরাশি

 

যার শিরায় শিরায় লেখা আছে

মৃত্যু আর জীবনের মধ্যবর্তী সংগ্রাম

 

পট ভাঙে। দৃশ্য জোড়ে।

ক্ষণকাল‌ আর দীর্ঘকালের অসীম শূন্যতা নিয়ে

 

আসলে আমি তো জানি

এ জীবন শুধু লিখে রাখা ইতিকথা নয়,

জল‌ ছোঁয়া মাঝি খুঁজে নেয়

জন্মান্তর এভাবে প্রতিটি অলিখিত জীবনে।

 

রুটির দোকান

 

এইসমস্ত জীবিকার নেপথ্য কাহিনীকার

এক একটা আটার রুটি।

 

বেলান আর চাকির বৃত্ত রেখায় যখন

জন্ম নেয় এক একটা মেয়ে রুটি

 

কিশোরী কন্যার আঙুল স্পর্শ করে

মাটির আগুন ছুঁয়ে ছুঁয়ে জেগে ওঠে যুবতী বেলা।

 

বাবা এসে সাজিয়ে তোলে তাকে

খবর কাগজের বসনে। হাত ঘুরে ঘুরে…

 

এই সমস্ত জীবনের নেপথ্যে কতগুলো আটার রুটি

দাম মাত্র দু'টাকা!


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন