কবিতার কালিমাটি ১১০ |
অনামিকার কথকতা সিরিজ
(১)
দ্রৌপদী
একা দাঁড়িয়ে ভাবে
জীবন
এক প্রশ্নমালা
উত্তর
মেলাতে মেলাতে ক্লান্ত
অদৃশ্য
রূপরেখা আঁকা
ক্ষণিকের
আত্মাভিমান আঁকড়ে
তীব্র
লড়াইয়ের শঙ্খনিনাদ
অবলুপ্ত
ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে
গাছ
ও পথের বালি-মাটি
দুঃশাসনের
বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়া
হৃত
সাম্রাজ্যের পতন
সম্মান
বাঁচানোর তাগিদে দীর্ঘশ্বাস
আজও
মায়াবী চোখ খুলে
ভীমপৌরুষ
আকাঙ্ক্ষা করে মেয়ে।
(২)
নদীর
অববাহিকা জুড়ে আঁকা হয়
বিমূর্ত
কিছু ছবির কোলাজ
কোমরের
বিছায় লুকানো মায়ামন্ত্র
নারীর
চলনের গতিতে বিদ্যুৎ
কিছুটা
ফুল সজনৈবেদ্যের থালায়
কচুরিপানা
জীবন আদর্শ
তেলের
মত জলে ভেসে থাকা শুধু
কিছুটা
নৈর্ব্যক্তিক-
নিঃঝুম
রাত্রির জানে গোপন ব্যঞ্জনা
ময়ূরাক্ষী
নদীর জলে
চোখ
ধুয়ে নিয়ে আবারও নতুন শুরু।
(৩)
যে
আঙুলে মেহেদি রাঙানো ছিল
তা
কেটে রক্ত রক্ত খেলা
যে
কোন অন্যায়কেই আখ্যা দেওয়া
তালিবানি!
আমার বোনেরা আজ
ভীত
সন্ত্রস্ত, ক'দিনেই উল্টে যায়
মসনদ,
থিকথিকে লোহিত কণিকা
মাছি
ভিন্ ভিন্ করে, কদর্য চাহনি
নারীর
শরীর থেকে চেটে নেওয়া লালা
বৈধব্যের
দুঃখ বুকে এগিয়ে যাওয়া
নাম
ওঠে যৌনদাসী প্রথায়...
(৪)
সত্য
ভাষণে ভয় লেগে থাকে
বিমূঢ়
অস্তিত্ব জুড়ে রোমাঞ্চ
অনিরুদ্ধ
কথার বেড়িয়ে আসে
অলস
দুপুরে টিকটিকির শব্দ
আচমকা
ডুবে যেতে থাকে মন
দিলরুবা
আয়না প্রতিবিম্ব ফেলে
আচ্ছা
আত্মারও ছায়া পড়ে?
লজ্জা
পেয়ে মুখ ঢাকা অষ্টাদশী
প্রেমিকের
মুখ আঁকে অন্তরালে,
শাখা
ভেঙে পতিত যে ফল সেও
মিষ্টি
হতে চায় আহ্লাদি বালিকার মত
এ
যেন দিকচক্রবাল ঘিরে খেলা করা
আপাত
দ্বন্দ্বের মীমাংসা এভাবেই।
(৫)
বাস্তব
এখানে নগ্ন, হাহাকার ধ্বনি
রাস্তার
পাশে শুয়ে থাকা জীর্ণদেহ
রুক্ষ
চুল ভবঘুরের জবানবন্দি চাই
ক্যামেরা
তুলে চলে ওর ক্ষয়িষ্ণুতা
আত্মবিস্মৃত
হতে গিয়ে হোঁচট খাওয়া
শুধুমাত্র
একটি ঝোলা নিয়ে ঘোরা
সেতুর
চলমান প্রক্রিয়ায় ঘুম-
গাড়ির
ছুটন্ত হর্ণেও সারহীন বুভুক্ষু
কিংবা
খোলা ফুটপাতে সংসার
রান্নারান্না,
শিশুপালন এবং
পেট
ও দেহের ক্ষুৎনিবৃত্তি নিলাজ
গাড়ির
আলোয় কিছুটা থমকে যাওয়া
অন্ধকার
গাঢ়তর হলে পৃথিবীর রঙ
বদলে
যেতে থাকে, বদলে বদলে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন