কবিতার কালিমাটি ১০৮ |
নদী ভেঙ্গে বাসস্থান
আর কতক্ষণ সবাইকে
সন্তুষ্ট করে
যেতে হবে এই পাঁজর উপড়ে?
ভাবতে ভাবতে
চতুর্দিকের গর্জনবিলাসিতা সরিয়ে,
নিঃশব্দে বিষণ্ণতার
ছুরিতে শান দিয়ে
সব কটা হাড়
পাথরের মত সাজিয়ে রাখা।
এবং সর্বাঙ্গে
অজস্র চলাচলের ব্যথাদাগ জড়িয়ে
একাগ্রচিত্তে
এই ক্লান্তিহীন বয়ে চলা,
এই দু’য়ে মিলে
গড়ে ওঠে জীবননদীর একমাত্র ঘরবসত।
এক আঁজলা জল
সরিয়ে পোঁতা ভিত
বর্শার মত বালি-কাদা
উপড়ে ভূ-কেন্দ্র দখল করে।
দেখেশুনে চোখ
ভেসে যায়।
অতঃপর স্রোত
ভেসে যায়।
দূরত্বে পোত
ভেসে যায়।
নদীর বাড়ি আগুনে
পোড়ে না,
দেহ রাখলেও
শব পড়ে থাকে।
জলের মত শব
বয়ে চলে।
চাঁদের অবয়বে
অজস্র নদীর
অবয়ব ভেঙ্গে
ভেঙ্গে
ক্ষয় বয়ে চলে।
জলের পোশাক
সমস্ত পরিবর্তন
পেরিয়ে
বাহ্য পোশাক
দাবানলে পুড়িয়ে
এক জলের পোশাকে
লজ্জা নিমজ্জিত রাখি।
জিহ্বার যত
কাঁটাছেঁড়া,
শুধুমাত্র কাটা-ঠোঁট
কেটে
সম্পর্কের মত
জলের দামে শোধ দেওয়া যায়।
জলের মত স্বচ্ছ
বিদ্যুতে
সহস্র গোপনীয়তা
ছত্রভঙ্গ হলে,
সাত্ত্বিক মাছেরা
নিরাভরণ ঘুরে বেড়ায়।
তাদের রঙিন
ঠোঁটে অজস্র চুম্বন জেগে উঠলে
খণ্ডে খণ্ডে
ভেসে যায় নৈসর্গিক লজ্জা।
ব্যক্তিগত বসন্তের কাব্য
শীতের অঙ্গার
জ্বালিয়ে রেখে
গভীর ভণিতার
প্রসন্ন দৃষ্টি
নির্জনতম পানশালায়
মরশুমি স্মৃতি নিয়ে আসে।
দীর্ঘদিন সমুদ্রহীনতার
দাবদাহ
রোমকূপে ঢেউয়ের
শলাকা ছোঁয়ায়।
ছুরিকে কলম
ভেবে ঢেউ না গুনে
গোটা সমুদ্রকে
ক্যানভাস বানালে,
চরম দীর্ঘশ্বাস
চিবুক অথবা গ্রীবায়
নির্মম বসন্তবিলাসী
হয়ে ওঠে।
পলাশফুল আর
আইরিশ কফি
ধোঁয়া ওঠা বসন্তের
জ্যামিতি
মিলেমিশে আকার
দিতে সাহায্য করে।
সরলরৈখিক বা
গোলার্ধভেদী
এই সব ভ্রাম্যমাণ
বসন্তসেনারা
একান্ত ব্যক্তিগত
এপ্রিলের কাব্যবিশারদ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন