কবিতার কালিমাটি ১০৮ |
চিলেকোঠা
প্রথমদিকে ওটা ছিল তিন দিক
খোলা বারান্দা। দেয়াল তোলাতে
হ’য়ে গ্যালো চিলেকোঠা। জানলাও
ছিল একটা। সাদা দেয়ালে অপটু
হাতে বাঁধানো ছবি আর টিকটিকি।
টেবিলে ফুলদানিতে রজনীগন্ধা,
পাশে মোমবাতি। গভীর ছায়া ফেলে
স্মৃতির চিলেকোঠা, দুর্দম স্মৃতিগুলি
বারবার টেনে নিয়ে যায়, খুনসুটি
করে; পুরাতনের সাথে নতুন মেশায়,
আর আজীবন নেশার রসদ যোগায়।
বৃত্তের বাইরে
উড়ুউড়ু শব্দহীন দুপুর,
মাঝে মাঝে কাকের ক্লান্ত করুণ ডাক
আর দেয়াল ঘড়িটার টিকটিক শব্দ। মনে
নেই তার ভুরু কেমন, হাসলে ঠোঁট কতটুকু
বাঁকে; হঠাৎ কোনো কোনো ঘ্রাণে কেবল
কেজো সময়ের ফাঁক গলে মন চলে যায়
উড়ে।কিছু জানার আদৌ কোনো
প্রয়োজন নেই আর:
শুধু জানি চেনা
সময়ের ওপারে, অচেনা বিস্ময়কে থমকে
দিয়ে সে এসেছিল কোনো একদিন।
অন্য কোনোখানে
নাটাই-এর সুতোয় মাঞ্জা দিয়েছি,
লাল নীল হলুদ ঘুড়ি কিনেছি,
বিশাল আকাশে উড়াবো ব’লে।
রেলিংহীন ছাদে ওঠা যদিও বারণ,
তবুও মাঝে মাঝে উঠে যাই চুপি চুপি;
খোলা মাঠ, মুক্তাঙ্গন এখন অলীক
ভীষণ। প্রহরগুলি কাটে এক উৎসুক
অপেক্ষায়; অগণিত রাত্রির তপস্যায়,
মোহনীয় অন্ধকারের অপার অতল
নির্জনতায় কল্পনার ডানাদুটি কাঁধ ফুঁড়ে
বেরোবে, আমি বারান্দার গ্রিল গলে
সবকিছু পেছনে ফেলে রেখে বাতাসের
সমুদ্রে ভেসে যাবো। মাঝে মাঝে ভাবি
খুব দায়িত্বহীন আচরণ করি; তুড়ি মেরে
উড়িয়ে দিই যাবতীয় শাসন আর
অপশাসন; জীবনকে আকন্ঠ করি পান;
শিকড় উপড়ে ফেলে চলে যাই অন্য
কোনোখানে, অন্য কোনোখানে!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন