কবিতার কালিমাটি ১০৮ |
জীবাণু সন্ত্রাস
আজকাল অসমাপ্ত
গানের মত আপ্ত বিষাদ রোদ খায় পড়ে পড়ে
সময়ের চরে
গড়ে তোলা সুরম্য
আশ্বাস ভেঙে পড়ে গভীর মুদ্রায়
অন্ধকারে জেগে
থাকে অলিখিত ত্রাস
ছড়িয়েছে বিষাক্ত
জারণ জীবাণু সন্ত্রাস
তবুও আশা রাখি
আবার আগের মতই
উৎসব আয়োজন
আবার সহাস্য
মিলন
সাদর সম্ভাষণ
আবার...
তত দিন...
একশ দিনের কাজ
দুঃখ দুর্দশা
তো সবার থাকে
তাই নিয়ে পা
ছড়িয়ে কেঁদে কী হবে?
বিষাদ মেঘ জল
ঢেলে এক হাঁটু কাঁদায় হাঁটাল যে বছর
হইহই করে একশ
দিনের কাজে নাম লেখালাম
সে বছরেই সে
রাস্তায় মোরাম পড়ল
ব্যাস
এখন দিব্যি
হাঁটছি দুহাত মাথায় তুলে হেসে হেসে
তাই বলে কী
দুঃখ দুর্দশা নেই?
ও তো রোজ রাতে
ঘুমের আগে আমার বালিশে এসে মাথা দিয়ে শোয়
আমার মরচে ধরা
ক্ষতবিক্ষত হৃদপিন্ডটাকে টেনে বার করে
শিরিষ কাগজে
ঘসে ঘসে ঝকঝকে তকতকে করে যায়
আমি আবার সকাল
থেকে একশ দিনের কাজের জন্য প্রস্তুত হই
আম্ফানের পর সোঁদরবনের সুন্দরীরা
সম্পূর্ণ নয়
ওরা আংশিক ভাবে বেঁচে আছে মাটি জল আগুন বাতাসকে স্পর্শ করে
শব্দে আছে,
বর্ণে আছে, গন্ধে আছে, সর্বোপরি আছে, তবুও আংশিক ভাবেই।
বিশ্বাস না
হয় মাটিকে জিজ্ঞেস করো, মাটি দেখাবে ওদের স্বপ্নের গোরস্থান
যেখানে আম্ফানের
আবাদি নুনকাটা, শস্যহীন নিরবতা, বাঘে মানুষে এক ঘাটে পান ।
জলকে জিজ্ঞেস
করো, জলও বলবে ওরা হাঁটছে মাইলের পর মাইল,
কোথায় সুপেয়
জল? অসহ্য হয়রানি।
আগুনকে জিজ্ঞেস
করো, ও শোনাবে পুরুষহীন গ্রামে আগুনহীন রাতের কাহিনী,
স্ত্রী শিশুকে
ফেলে পুরুষ যে ভিনরাজ্যে কাজের সন্ধানী,
আর বাতাস? সে
তো হিসাব রাখছেই
কতটা ফুঁসছে
ওরা, কতটা আগুন জ্বলছে ওদের পেটে,
কুমির সাপ বাঘ
আর ভয়ঙ্কর অভাব
এই নিয়েই ঘর,
ওরা তবুও বেঁচে,
ওদের এই অস্তিত্ব
বাঁচানোর লড়াই চলছে, চলবে জারি,
ওরা যে দুর্জয়ী,
ওরা যে বাঘিনী, ওরা যে সোঁদরবনের সুন্দরী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন