কবিতার কালিমাটি ১০৬ |
উড়ান
ভূমি থেকে অনেক
ওপরে উঠে ভেসে চলা
যেভাবে স্বপ্ন
ভাসে মনের চেতনার স্তরে স্তরে
মদির চিন্তার
রেশ কাটতে না কাটতেই-
রাতজাগা চোখে
ক্লান্তি জড়িয়ে ধরে ঘুমোলে!
গুচ্ছ গুচ্ছ
মেঘ ছিটিয়ে থাকা আকাশ বড় রিক্ত
শূন্যতা ঘিরে
ধরে মনের দ্রাঘিমাংশ,
রূপকথার বুড়ির
চরকায় সুতা কাটার মত মেঘিয়া সজ্জা
আচমকা ডুবে
যেতে গিয়ে খাবি খেয়ে বেঁচে ওঠা
মৃত্যুকে দেখেছ
কখনো কালো ঘোমটা ঢাকা?
চমক টুটলেই
অবতরণের পালা, মাটি ছোঁয়া
ভালবাসি সেই
অখণ্ড সময় ছুঁয়ে মৃত্তিকা মানবী।
দৃশ্যপট
ধীরে ধীরে যবনিকা
উত্তোলন আর অভিনয় শুরু
বক্তার মুখের
ভাবে দৃশ্য রচনা আর শব্দের নির্গমন
অযথা অনুভূতি
প্রকাশের অতিরঞ্জন বাদ দিয়ে
পাত্র পাত্রীর
কথোপকথন গল্পের প্লট নির্মাতা!
শুধু কি নাট্যমঞ্চের
দৃশ্যপট রচনায় সব শেষ হয়?
না, প্রতিটি
যাপিত জীবনের কতকথা একটু আলাদা
তবু দৃশ্যশিল্প
দেখা যায় আচরণের তীব্র প্রকাশে,
অণু অণুতে ছড়িয়ে
যাওয়া মদির আবেদনের মত
জীবনের ক্রমোসঞ্চরণ
সামনের দিকে-
আলোকবিধৌত এক
ভাব পরিমণ্ডলে লেখা হয়
পৃথিবীর বৃহৎ
নাট্যকথা আমাদের নিয়ে,
অগুন্তি তারার
মালা গলে আকাশের সুনীল সীমানায়
আঁকা থাকে অবিনাশী
মীড়ের সঙ্গতে তান আর কিছু নয়...
সাধনা
বৈরাগীর আখড়ায়
গভীর সাধনা চলে
দেহের অমৃতভাণ্ডে
সিদ্ধিলাভের মউ,
একতারায় মায়াবী
রাত সহজিয়া গান
ত্যাগের আলখাল্লার
মাঝে পরম্পরা।
আসমানের তলায়
যজ্ঞের সমিধ -
ক্রমে ক্রমে
আহুতির ঘৃতে লেলিহান পাবক
হে অগ্নি পরম
অগ্নি মুছে যাক সব পরিচয়,
পূর্বাশ্রম
আকুলতা দুঃখ ও প্রাপ্তির অজপা সুর
অনুপুঙ্ক্ষ
উদযাপিত হোক সাধনার লগ্নজিতা
জেগে উঠি জন্মান্তরে
উদাস বাতাস মেখে গায়ে।
নশ্বর জীবন
বেঁচে থাকার
পাসওয়ার্ড জানো তুমি?
উষ্ণ বুকের
মাঝে ধুকপুকানিটুকু সম্বল
একমুঠো ভালবাসা,
এক আঁজলা মায়া
কিংবা সুনিবিড়
আলিঙ্গনে আঁকড়ে ধরা
হাতের মুঠোয়
ভরসার কিছুটা আশ্রয়!
জীবন তো ক্ষণিকের
বাতায়ন পাশে প্রদীপ শিখা
ছড়িয়ে থাকা
আলোয় খুঁজে পাওয়া নিরাপত্তা,
বোহেমিয়ান সময়
সাক্ষী রেখে এগিয়ে যাওয়া
আসলে গন্তব্য
বলে হয়তো কিছুই হয়না-
সবই পরিযায়ী
প্রাণের নশ্বর অভিনিবেশ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন