প্রতিবেশী সাহিত্য
নাওমি শিহাব নাই-এর কবিতা
(অনুবাদ : বাণী চক্রবর্তী)
কবি পরিচিতি : নাওমি শিহাব নাই-এর জন্ম ১৯৫২ সালে। তাঁর বাবা ছিলেন একজন ফিলিস্তিনের রিফিউজি, মা ছিলেন আমেরিকান। মাত্র
৬ বছর বয়স থেকে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। বহু পুরস্কারে ভূষিত এই কবি এখন টেক্সাসের
বাসিন্দা।
বিজেতা
সে আমাকে বলেছিল
যদি খুব দ্রুত লাফিয়ে গড়িয়ে স্কেটিং
করতে পারে—
তবে নিঃসঙ্গতা তাকে ছুঁতে পারবে না!
আমার আজ পর্যন্ত শোনা সবচেয়ে অভূতপূর্ব
কারণ ছিলো এটা... বিজেতা হওয়ার চেষ্টা
করার জন্য।
আজ রাতে আমি এই ভেবে অবাক হই
নীচের কিং উইলিয়াম স্ট্রিট-এ কষ্টকর
প্যাডেলিং সেটা যদি বাইসাইকেল হয়
সেটাও একটা জয়!
তার হাঁফানো নিঃসঙ্গতাকে
সে কোনো পথের এক কোণে ছেড়ে দেয় ছোট্ট
নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য। তার থেকে
অনেক পেছনে!
তখন সে মুক্ত মনে ভেসে বেড়ায়...
হঠাৎ ঘিরে আসা আজেলিয়া-মেঘের ওপর
তাদের গোলাপি পাপড়িগুলো কখনো
নিঃসঙ্গ হয় না--
যতই ধীরে ধীরে তারা ঝরুক না কেন!
কাঁধ
এক ব্যক্তি রাস্তা পার হচ্ছে বৃষ্টির
ভেতর।
খুব ধীর পদক্ষেপে সন্তর্পণে উত্তর
দক্ষিণ দুবার দেখে-
কারণ কাঁধে তার ছেলে ঘুমাচ্ছে।
কোনো গাড়ি যেন তাকে ধাক্কা দিতে না
পারে...
কোনো গাড়ি যেন তার ছায়ার কাছেও
না আসে।
লোকটি পৃথিবীর সবচেয়ে দামী এবং সংবেদনশীল
মালবাহী জাহাজ
কিন্তু চিহ্নিত হয়নি। কোথাও তার জ্যাকেট
এ লেখা নেই
‘ভঙ্গুর - সাবধানে হ্যান্ডেল করবেন’!
তার কান ভরে আছে গভীর নিঃশ্বাসে...
সে শুনতে পাচ্ছে ছেলেটার স্বপ্নের
অবিরাম মৃদু গুঞ্জন!
আমরা এই পৃথিবীতে বাঁচতে সমর্থ নই
তবে এখানে একে অন্যের সাথে
কী হাসিল করছি!
আমাদের জন্য
শুধুমাত্র এ সড়ক আরও প্রসস্থ হতে
পারে
আর এমন বৃষ্টিও অবিরাম ঝরতে পারে!
অদৃশ্যতার পাঠ
যখন তারা কেউ প্রশ্ন করবে
তোমাকে কোথাও দেখেছি!
বলে দিও, ‘না তো’!
যখন তাদের কেউ তোমাকে অনুষ্ঠানে
আমন্ত্রণ জানাবে... সম্মতি দেয়ার
আগে
জেনে নিও কেমন সভা।
কেউ তোমাকে উচ্চস্বরে তার কোনোকালে
লেখা কবিতা শোনাবে আর তেলতেলে সসেজ
বল পেপার প্লেটের ওপর দুলবে!
এবার সিদ্ধান্ত নিও।
যদি কেউ বলে… চলো একসাথে মজা করি...
প্রশ্ন কোরো, ‘কেন?’
এটা নয় যে তুমি তাদের আর ভালোবাসো
না
তুমি মনে করার চেষ্টা করবে কোনটা না ভোলা তোমার জন্য
গুরুত্বপূর্ণ!
সবুজ সতেজ গাছপালা... মঠের ভেসে আসা
সান্ধ্যধ্বনি!। বলে দিও আমার একটা নতুন
প্রকল্প আছে... যেটা চলতেই থাকবে!
যদি কখনো র্যাশন শপে তোমায় কেউ
চিনে ফেলে... সংক্ষিপ্ত হাসিতে মাথা
নাড়িয়ে
নিজেকে গুটিয়ে নিও। কখনো দশ বছর পর
দেখা হওয়া লোককেও নতুন করে গল্প শোনাতে বোসো না।
কারণ এরপর তুমি তাকে আর ধরতে পারবে
না।
তুমি বিচরণ করো একটা পাতার মত অনুভবে
যে কিনা যে কোনো মুহূর্তে ঝরে যেতে পারে...
তারপর ভাবো... সময়ের সাথে তুমি কী
করবে!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন