কবিতার কালিমাটি ১০৪ |
নীল ফিঙ্গে
বিকেলটা যখন
খুব মৃদু পায়ে হেঁটে আসছিল
জলতরঙ্গের গুনগুন
আবেশের মতো;
মনে পড়লো অস্তরাগের
কথা।
যে নদীর স্রোতে
দোলে মেঘমালা কালোকাজলের মতো;
ঢেউয়ে ঢেউয়ে
নাচে মেঘভারানত আকাশের ছবি;
আমিও সে নদীর
নাম রেখেছি -- কাজল নদী।
দীর্ঘবিষাদমগ্ন
দুপুরের পরে
অপেক্ষায় থাকে
স্নিগ্ধ জল ছলছল নদীকলস্বরা।
নদী যাচ্ছে
বিকেলের কাছে--
নাকি বিকেলটাই
এগিয়ে আসছে!
আজ সারাদিন
কেটে গেল একটা নীলফিঙ্গের খোঁজে;
এই একটা নাম
দিনভর বেজে বেজে গেল। জুড়ে রইল।
সে কোথায় থাকে?
খুঁজবো?
চাঁদ ডুবে গেলে
আমাদের একটা
ছায়াঘর ছিল--
খুব রোদ্দুরের
দিনে চুপচাপ পাতাঝরার শব্দ শোনার জন্য
তখন--
আবছাম্লান নীহারকণার
মতো স্বপ্নেরা উড়ে উড়ে যেতো চারপাশে।
আমি রাতকে বলেছি
আরো কিছুটা সময় থেমে যেতে;
নীলজোনাকীরা
যেটুকু সময়--
সোনালীআগুন
জ্বালিয়ে রাখে মুঠোর ভেতরে।
ঝিঁঝিপোকারা
কথা দিয়েছিল কন্ঠে তুলে দেবে গুনগুন গুঞ্জরণের
ঝিনিকিঝিনি
সুর।
খুব ভীরুতায়
রাত বললো--
সেও থাকতে পারেনা
চাঁদের পাহারা ছাড়া;
চাঁদ ডুবে গেলে
সেও চলে যাবে।
থেমে গেল নক্ষত্রের
সব কোলাহল।
চাঁদ ডুবে গেলে
রাত নিভে যায়।
কেন যে--
স্বপ্নলেখার খাতা
মেঘাচ্ছন্নআঁধার
থেকে একটা ঝলমলে দিনের স্বপ্নই তবে উঠে আসুক।
স্বপ্নলেখার জন্য আমার চাই গোলাপীসুগন্ধী মাখা খাতা। যেখানে সেখানে স্বপ্ন লিখতে নেই।
সোনার পালঙ্ক
চাই।
সোনারূপার জিয়নমরণকাঠি।
ময়ূরপুচ্ছের
কলম।
এইসব প্রাসংগিক
আয়োজন শেষ হলে -- একটা স্বপ্নপুরাণ লিখবো
প্যাপিরাসে
পাওয়া হাজার বছরের কেচ্ছাউপাখ্যান।
দৈত্যগুলো সব
পাথরখোদাই।
মাঝরাতে জীবন্ত
হয় -- হাতীশালে হাতী আর অশ্বশালার ঘোড়া ধরে ধরে খায়।
ডাইনীরা থাকে
রূপবতী রানীর ছদ্মপোশাকে। আসল রানীরা ঊড়ে যায় পাখি হয়ে;
বনেজঙ্গলে।
রাজাগুলো সব
যুগে খুব অর্থগৃধ্নু। কবরেও নিয়ে যায় হীরেজহরৎ;
এসব লিখা আছে
শিলালিপি ও তাম্রফলকে।
স্বপ্নখাতায়
থাকবে না কোন চেঙ্গিস-তৈমুর
বরং বিজনগহন
অরণ্য থেকে রানীকেই উদ্ধার করে আনি।
আলো ঝলমল সিংহাসনে
রানীর অভিষেক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন