কালিমাটির ঝুরোগল্প ৯৩ |
ভয় পেয়ো না
তারিখঃ আজ
ফাইভ জি টেকনোলজি। রাস্তার ওপর জায়ান্ট স্ক্রিন। নীচে সারি সারি গাড়ি যাচ্ছে। আমি রাস্তার এদিক থেকে ওদিক যাব।
সিগন্যালে আটকে জায়ান্ট স্ক্রিনের দিকে চোখ যায়। স্ক্রিনে একটা তিন-সিং প্রাণী ভেসে ওঠে। কিছুটা আমার মতো আবার আমার মতো নয়ও। বুকে লোম। হাতদুটো আমার মতোই, পায়ের থাবা আলাদা। ইয়েতি…
ইয়েতি কেন… ইয়েতি… ইয়েতি কী? আমরা কেন… বুঝতে পারি না।
তার পুরো চেহারা ভেসে ওঠে স্ক্রিনের ওপর। হাতের মুগুর দিয়ে মারল স্ক্রিনের ওপর। ঝনঝন করে স্ক্রিন ভেঙে পড়ল। আর ইয়েতি মুগুর নিয়ে লাফিয়ে পড়ল আমার সামনে। আমি ছুটতে গিয়ে পড়লাম রাস্তার ওপর। পেছনে তাকাতে ইয়েতি নেই। রাস্তায় ভাঙা কাচ নেই। অবাক।
স্ক্রিনের ভেতর থেকে ইয়েতি বলল, সত্যি বলছি তোমায় আমি মারব না। মনটা আমার বড্ড নরম হাড়ে আমার রাগটি নেই। আমরা তোমায় ভালো রাখব। তোমরা নব যৌবন পাবে। সোনাদানায় মুড়ে রাখব। ধন সম্পদ ভরিয়ে দেব।
ছড়ে যাওয়া হাঁটু, লেংচে ভাবি ইয়েতি কি
ভালো!
তারিখঃ আজ (তবে সেদিনের আজ নয়, অন্য
এক আজ)
টেকনোলজি সিক্স জি-র দিকে। আমরাই বানিয়েছি। সেই রাস্তার মোড়ে।
ইয়েতি গাইছে - আদর ক’রে শিকেয় তুলে রাখব তোমায় রাত্রিদিন…
এবারো আমি রাস্তা পার হচ্ছি। স্ক্রিনটা হঠাত ভেঙে পড়ল। আমি ভয় পেলাম না। ভয় পাবার মতো কিছু নেই। আগেরবার আমাকে পালাতে দেখে অনেক লোক হেসেছিল। আমি আর লোক হাসাতে রাজি নই। দাঁড়িয়ে রইলাম। ইয়েতিটা লাফাল, আমার ব্যাগ শুঁকল। ওতে আমার দুপুরের খাবার। সবাই এবারও খুব আনন্দ পেল। আমি সবাইকে খুশী করতে দুপুরের খাবারটা ওর মুখের কাছে ধরলাম।
পরদিন আবার। এবার ওর পছন্দ হল আমার মোজা জোড়া। এতো মিষ্টি ও, মোজাতে নাক ঘষছে, আমি মোজাটা খুলে ওকে দিলাম।
পরদিন ও পছন্দ করল আমার…
তারিখঃ ****
ইয়েতিকে কেন খাওয়াবেন না? কেন খাওয়াবেন না? ভালো প্রশ্ন! ইয়েতির খিদে পায় না বুঝি! ইয়েতি বলে… ইয়েতি আগেও বলেছিল… আমরা ভুলে যাই…
তাকে আমরা তৈরি করি, ভুলে যাই … মদত
দিই… ভুলে যাই… তাকে… শক্তিশালী করি… ভুলে যাই… সোনাদানা নেই ভুলে যাই… ব্যাঙ্ক নেই
ভুলে যাই... জামা কাপড় নেই ভুলে যাই… চাষবাস নেই ভুলে যাই… খাবার দাবার নেই ভুলে যাই…
কী ভুলে যাই? তাকে… ভুলে যাই
আর হঠাৎ একদিন সে বলে বসল, অভয় দিচ্ছি,
শুনছো না যে?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন