কালিমাটির ঝুরোগল্প ৯৩ |
মুক্ত ও যুক্ত
ঘুড়ি ওড়ানো উৎসব দেখতে গিয়েছিলাম কাল সন্ধ্যায়। সেখানে আবার মুগ্ধ’র সাথে দেখা হয়ে গেল আচানক। উনিও গেছেন ঘুড়ি ওড়ানো দেখতে। ইশ এর কোনো মানে নেই।।
মুগ্ধ
একবার আমাকে শাড়ি কিনে দিয়েছিলেন। কোমল রোদ রঙের। নাটকের পাশের সরণী থেকে। আমি কিন্তু
যুক্তকে অনেক ভালোবাসি। সত্যি...
মুগ্ধকেও
ভালোবাসি এবং পছন্দ করি। সত্যি…
তরী কিনারায় ভিড়াইয়া
যাবে কি এভাবে
ও দয়াল আমার কী হাল!
যুক্ত ও মুগ্ধকে দ্বিত্ব ভালোবাসা কোনটা কোনটাকে অপমান করে না। ছোট করে না। একটা আরেকটার না থাকার শরতে থাকে না, বসন্তেও না।
আর
যৌনতা বিশেষ ইস্যু না মনে হয়। এ আকর্ষণ একদম অন্যরকম। সত্যি...
আমি তো
অভাবে বা অসন্তুষ্টিতে ভুগছি না বরং যুক্ত মুগ্ধ থেকে বেশি আগ্রহী। তার মানে
এইটাকে একমাত্র কারণ বলা যায় না।
এইটা আসলে
অনুষঙ্গ…
তাহলে
এক নিরপরাধ প্রেম পাশাপাশি অবস্থান করছে বা একসাথেই! সমান্তরাল।
কী
আশ্চর্য এত কঠিন মানুষের মস্তিষ্ক!
উৎসব
দেখতে গিয়ে মুগ্ধ’র সাথে দেখা হওয়া বেশ বিব্রতকর আর পুরো শো জুড়ে অস্বস্তিতে
ছিলাম। আবার সাথে ওর বন্ধুও ছিল একজন। তবু আমি তো খালি পা হয়ে মুগ্ধ’র পায়ের পাতায়
পা রেখেছিলাম!
কেউ
দেখেনি।
আঙুল
দিয়ে আঙুল ছুঁয়েছিলাম। খুব ভালো লেগেছে। কিন্তু একটু অসহায় ও। খুব চুমু করতে ইচ্ছা
করছিল, অন্তত গায়ে
মুখ নাক লাগিয়ে গন্ধ নিতে অথচ কত মানুষ আর কত অস্বস্তি। পায়ের পাতায় পা রেখে খুব ভাব বিনিময় করেছি।
তাতেও যেন কত কথা!
আমাদের
খালি পা যে কত কথা বলতে পারে!
আমার
সমস্যা হচ্ছে আমি সারাক্ষণই ভাবতে থাকি। মুগ্ধ কিন্তু একদম না। হয়ত ভাবে আমি বুঝি
না। তা কেনই বা হবে?
আর
যুক্তকে আপনার গোলালু লেখাটা দেখাইছি। কারণ তখন ও গোলালুর মতই আচরণ করছিল... একদম আল্লাদি। ভালো... ও আমার কত ভালো বন্ধু ও বর! প্রাণেশ্বর।
আর
মুগ্ধ'র সাথে তো
সবকিছুই আনন্দের। ও মসলিন চমৎকার।
তাহলে আমি কিন্তু এদের দুজনকেই ভালোবাসি। এরা দুজনই চমৎকার। ভালো মানুষ।
কিন্তু আপনার গল্পের ক্যারেক্টাররা কিন্তু কেউ এরকম হয় না, জানেন এটা? এরকম হলে কেউ লাইক দেবে না। সবাই তো মধ্যবিত্ত বা মধ্যবিত্তের স্বভাবী! আর এই পরিস্থিতিটা আপনি লিখতে গেলে দুটোই ভালো প্রেম বলে একটাকে ম্লান করে দু:খ দিয়ে আরেকটাকে মহৎ বানানোর চেষ্টা হয়ত করতেন। আর তা না করে লেখা তো কঠিন...*
*(প্রিয় বন্ধুরা, ঘটনার চরিত্র তিনজন। দুজন পুরুষ: যুক্ত ও মুগ্ধ। মেয়েটির নাম: ফুলেশ্বরী। লেখাটা পড়েই বুঝতে পারছেন এই তিনজন মানুষের
আন্ত:সম্পর্ক নিয়েই লেখা। আমার কোনো হাত বা অজুহাত নেই। লেখাটা ফুলেশ্বরীর বয়ান।)
সংসারে
কত কী অলক্ষ্যে ঘটে যায়…
হয়তো
কোথাও কেউ বাউলের গান শুনতে শুনতে কাঁনচা বাঁশের বেড়া পার হচ্ছে… কেউ অপেক্ষা
করে মুগ্ধের জন্য, কেউ যুক্তের
জন্য, কেউ বা ফুলেশ্বরীর জন্য।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন