সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

শুক্তি ঘোষ

কবিতার কালিমাটি ১০৯

 


মৌন


শব্দের আঁচল ওড়ে আকাশে বাতাসে,

        আমি তাই

মূক হয়ে যেতে চাই --

স্তব্ধবাক্‌ অন্ধকার রাতে

    মূক হয়ে থাকা 

          অজস্র শব্দের মত।

 

    আমি তাই

            কান পেতে শুনি --

ঘাসেদের ডানায় ডানায়

          আশ্চর্য স্পন্দন জাগে,

নক্ষত্র মুখর হয়,

   মাটি থেকে মেঘ

বেজে চলে সাত স্বর, কড়ি বা কোমল;

 শিমুল পাতারা

        শিউরে শিউরে ওঠে,

      রোদ লাগে,

ঢেউয়ে ঢেউয়ে শব্দের স্রোত!

 

    শ্রুতিহীন কালের ডমরু

           ছায়াপথ পার হয়;

রোদে জলে কানাকানি কথা,

      বাঙ্ময় স্তব্ধতার রাতে

পৃথিবী সজীব হলে আকাশকে ডাকে --

তারপর, নক্ষত্রে যখন

            লেখা হয় স্বরলিপি,

  তখন নিশ্চুপ আমি

মৌনতার গভীর আঁধারে।

                                                                                       

আবহমান


রাগী সকালটা

গড়িয়ে যায় স্নিগ্ধ সূর্যাস্তের দিকে,

ঘাসের ডগায়

টলমল করে শিশির,

বেগুনি হলুদ ঘাসফুলে

তিরতিরিয়ে উড়ে বেড়ায় প্রজাপতি।

জল ছুঁয়ে উঠে আসা ভিজে বাতাসে

ভাসানের গান;

চোখের পল্লবের মত

কুয়াশা ভেজা গাঢ় সন্ধ্যার বুকে

ঢলে পড়ে বিকেলের স্থলপদ্ম --

কাঁচা রোদে,

        বাতাবি লেবুর পাতায়,

                    শিরশিরে উত্তুরে হাওয়ায়

     শীতের নরম গন্ধ।               

 

বারবার ফিরে যাই, ফিরে আসি --

        অগাধ আনন্দ

ঘাসফুল হয়ে  ফুটে থাকে পথের দু’পাশে।

 

“ভালো আছি, ভালো থেকো”

        জীবনের এইটাই

                গাঢ়তম উচ্চারণ!

 

দ্রোহকাল


বিশুষ্ক গাছের সারি

সারি সারি বল্লমের মত

পৃথিবীর বুক ফুঁড়ে

চেয়ে আছে ধূসর আকাশে,

ঊর্ধ্বমুখে;

ডালগুলো ছড়ানো অ্যাণ্টেনা --

কান পেতে কুয়াশায়

তরঙ্গ সঙ্কেত শোনে,

গোপন গভীর

কোন এক যুদ্ধের প্রস্তুতি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন