কালিমাটির ঝুরোগল্প ৯২ |
জ্যোতির্ময় লিঙ্গ
তপোমনের আজ ছুটির দিন। অন্যান্য দিন সপ্তাহের যা হোক কাজের মধ্যে দিয়ে চলে যায়। কিন্তু ছুটির দিন মানেই এক বিরক্তিকর ব্যাপার, সময় আর কাটতে চায় না। সুম্পি দূরত্ব তৈরি করে নিয়েছে। কোনো এককালে উঠোনের আমগাছের কোটরে টিয়াপাখি বাসা বেঁধেছিল। টিয়াপাখি একটা ধরবে বলে সে অনেক দিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। একদিন স্নানের আগে কুয়োতলায় দাঁড়িয়ে আছে, আর একটা টিয়া ফেলে দেওয়া পরোটার টুকরোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে পা পা করে। ও শুনেছিল আঁচল গামছা এসব ঝপ করে ফেলে দিয়ে ধরতে হয়। হাতের কাছে গামছাটা নেই। ও ফট করে সাদা সুতির অন্তর্বাসটা খুলে মেলে ধরে চলল পাখির দিকে। সেইক্ষণেই সুম্পি তাদের দোতলার জানলাটা খুলে তাকাল। পাখি তো উড়ে গেলই। তপোমন দ্রুত পিছন ফিরে অন্তর্বাস পরে নিল। তারপর চোঁচাঁ ঘরের দিকে দৌড়।
একদিন সুযোগমতো তপোমন বেশ অধিকার বিস্তার করে বলল - দ্যাখ সুম্পি তুইই আমার সবকিছু দেখেছিস প্রথম। তোর একটা দায়িত্ব আছে না নিজেকে পবিত্র রাখার! তোর সেই চোখমুখ আমি ভুলতে পারছি না। সুম্পি কোনো আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। কন্যাশ্রীর টাকা সুদে আসলে বেড়ে পুরনো মদের ব্যারেল হয়ে আছে। বিয়ের পাঁচ বছর পরে তপোমন এখন ওষুধের খালি শিশি। শিশির চোখের পাতায় যা জমেছিল সব উধাও। সন্তান আসে নি তারা দোষে। কম্পিউটার টিভি রিপেয়ারের সময় তার মনে হয় রিপেয়ার অযোগ্য একটি মেসিন সে বয়ে বেড়াচ্ছে শরীরে। পোষ্যসন্তানও সুম্পি নেবে না। ফুটপাতের বাচ্চাগুলোর দিকে হাঁ করে তাকিয়ে থাকত তপোমন। এক সময়ে বাচ্চা চুরির কথাও ভেবেছে। যা ভাবতে ইচ্ছে করে না এমন স্বপ্ন সে গতরাতে দেখে ফেলল। পাড়ার এক দাদাকে সে জোর করে সুম্পির ঘরে ঢুকিয়ে দিয়ে দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে। ভদ্রলোক নিজের উত্থিত লিঙ্গ চেপে ধরে চিৎকার করতে চাইছে। আর চিৎকারটা গলা দিয়ে না বেরিয়ে লিঙ্গ দিয়ে বেরোচ্ছে। বৌটি ভয়ে দরজায় আঘাত করে যাচ্ছে। তপোমন দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে অ্যালসেসিয়ানের মতো ডাকছে। তপোমন ঘরের ভিতরটা আর দেখতে পাচ্ছে না। বুঝতে পারছে দাদার লিঙ্গমুন্ডটি টর্চের মতো জ্বলানেভা করাচ্ছে সুম্পি নিজেকে বাঁচাতে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন