মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০

প্রণব বসুরায়

 

কবিতার কালিমাটি ১০৭


খুব আবছা

অপেক্ষা করছি, আর কাউকে অপেক্ষায় রেখে

নিজে চলে গেছি উত্তরের শীতল শহরে...

সভ্যতার সংকট কী এটাই তাহলে!

শিক্ষিত নই, টীকাকারের বই বাঁধাই করে

যাপনের রসদ জোগাই--

ছোট ছোট সুখ ও বিলাস

কিনতে হয় চড়া মূল্যে, আমাদের এই বিপন্ন সংসারে...

 

শীতল শহরে আমি আগুন খুঁজেছি তন্ন তন্ন করে;

উত্তাপ নয়, হ্যালোজেন আলো

আমাকে প্রকট করে দিলো বিমূর্ত্ত কৌশলে...

তিস্তা ও রঙ্গিতের জল ঠান্ডা হয়ে আসছে

আর দূরের গুম গুম শব্দে ভয় পেয়ে যাই

 

অপেক্ষায় রেখেছি যাকে তার কাছে যাবার রাস্তা

খুব আবছা মনে আছে...

 

 

ছায়া হাত  

 

কিছুটা পাগল হলেও আমি কিন্তু শরণার্থী নই

তাই, দ্যাখো পংক্তি ভোজনে বসিনি কখনও।

আমাদের আপাদমস্তকে লেগে আছে লবণের স্বাদ

ছিন্ন পোশাক শীত প্রতিরোধী নয়...

আমাদের পায়রা রাস্তা থেকে খাদ্য খুঁটে নেয়

তারপর সরল শিশুর মতো উড়ে যায় তাদের কার্নিশে...

 

যতই হাস্যমুখর দেখাক তাদের

ঝিলিক শব্দে ছবি তুলে ভরিয়ে দিক অনেকের পাতা,

লুকোনো ছুরিটা দেখি বাঁধা আছে পৈতে সুতোয়--

ছায়া হাত গোলাপ বিলোয়, চা ও বিস্কুট...

তারা বই থেকে কবিতা পড়ে-- শুধুই অক্ষরমালা

অর্থহীন জ্যামিতিক কারুকাজ মলাটে লাগায়।

মনে মনে আমি তাদের দশে দুই দিই

তারাই প্রকৃত ভিখিরী বলে চিহ্নিত হয়ে যায়...

 

রঙের বালতি হাতে কেউ ছুটে এলে

নিঃশব্দে আমি দেয়াল সরিয়ে নেবো

 

 

রাতের চিঠি  

 

কতকাল ঘুমোইনি বলো শিমূল বালিশে মাথা রেখে

মুখের মধ্যে থেকে যায় এলাচের গাঢ় ঘ্রাণ

তুমুল পিপাসায় আজ রাত্রে জেগে উঠি...

 

নার্স কোয়াটার্সের পরে পথ গেছে বেঁকে

ওটা সেই গঞ্জের পথ যেখানে বেলোয়ারি চুড়ির দোকান

আছে মদন-পল্লীর মেয়েরা-- হাইলাইটেড বিষণ্ণ আলোয়

 

নেট আছে, উত্তরের জানলা খুলে দিই

কিছু শীত আসুক এঘরে, আমি তো পথিক নই

 

একটা বালিশ চাই একটা চাদর--

মৌরির গন্ধ নিয়ে এসো ঘরে

 

 

 

 

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন