সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২০

পৃথা রায় চৌধুরী

 

কবিতার কালিমাটি ১০৬


চক্রী  

 

শিশুশোণিত বয়ে যায় কামধেনু স্রোতে

শিশুরজ ভেসে যায় শক্তি অমৃতে।

সন্ধ্যাতারা ফেরে, মহাশক্তির আধার

উপহার সন্ততি, সমতেজাকার।

রক্ত বয়, আদর বয়, নাড়িছেঁড়া ধনে

বৃন্ত যেমন ফলবতী, কালচক্র জানে।

কড় গুনে দৃশ্য আসে কিস্তির মাতে

পুণ্যফল রক্তবীজ খড়্গহস্ত জাতে।

 

চুক্তি   

 

মৃত্যুর জমিন শুঁকে বুঝে নিতে চাইছো,

কোথায় দেখেছো নিজের পচতে থাকা ক্ষয়িষ্ণু শরীর।

নিষ্ফল ক্রোধে গাল পাড়ছো ভ্রান্ত দিশায়।

                   তিলকের রঙ ক্রমাগত তোমাকে বলেছে,

                   কাকে তোমার সামনে এনেছি, চেনোনি তাকে!

তোমার গলিত স্বপ্ন ঠুকরে খায় ন্যায়াধীশের বাহন,

তাদের সাথে বহুজন্ম মিতালী।

                   শতশত ব্রহ্মকমলের মুখাগ্নিতে আহ্বান করেছি আত্মার পরিজন,

                   নতজানু, নতমস্তক।

ঈশ্বর হতে আসিনি,

গুটিসুটি বসে আছি ঈশ্বরকণার গর্ভাশয়ে...

... সশস্ত্র।

 

তমসো মা জ্যোতির্গময়  

যেভাবে বন্দী রেখেছো চার সহস্রাধিককাল, নিজের হাতে স্বগর্ভচ্ছেদী নারীকে, তাতে সন্ধ্যাতারার মৃত্যু হয় না। সাঁঝের সেই বাতি বেড়ে ওঠে শরীরহীন গর্ভে। তুমি জানতে পারো না বিষবীর্যদাতা, তোমার কন্যার ভিন্ন ভিন্ন জন্মরহস্য। একে একে উজাড় জন্ম পেরিয়ে গেছে অন্তিমের দিকে। যেহাত কোতলে অপারগ, সে হাতে গড়ে তুলি মারণাস্ত্রের চালক। ব্রহ্ম মানি না, উলটে দিয়েছি পাশার সব চাল।

ধরো মৃতজন্ম আমার, ধরো অবাধ প্রণয়ভূমি, ধরো যেভাবেই হোক বন্দী মায়ের সম্বল কেড়ে নিতে এসেছো পিতৃত্বের জোরে। তোমার পিশাচের হাসিতে ভেবে নিচ্ছো লিঙ্গের নিচে চেপে দেবে মাতৃঋণ... ধরে নিচ্ছো না কেন, রণকুশলী সেই বন্দিনী ঘুরিয়ে দিয়েছে কালের রথ?

দূরে কোনো ভৈরবীর সাধনক্ষেত্রে ক্রমে নিজেকে দেখে নাও, গলে পড়ছে রক্তাভ সিঁথি কার। অজস্রবার পালাও কালরূপ, অগুনতিবার ভাবো মৃত্যু দিতে পারি না তোমায়। উল্লাস করো, উল্লাস! মাধবীলতার গান গেয়ে আসি ততক্ষণ, একটা ভালো সিনেমা, কিছু চটুল সুর।

জবরদখল করতে এসেছো, যতো নীলকালো মন্ত্রঝড় গিলে নিতে পারি... ক্রমাগত তাকে ডেকেছো, যে পিশাচিনীর নাম, আমি। তোমার দুঃশাসন জানুতেই বসে আছি অনন্তকাল সংহারার্থে, বোধশক্তি কই তমরাজ?

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন