শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২০

শ্যামল শীল

 

কবিতার কালিমাটি ১০৪


একচক্ষু  হরিণেরা

একচক্ষু হরিণেরা বন ছেড়ে শহরে এসেছে

বহুতল ফ্ল্যাট কমপ্লেকসের প্রতিটি তলায়

তাদের পরিচিত কবুতরখানা

তলা অব্দি উঠে আপাতত থেমে আছে আকাঙ্ক্ষাগুলি

শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে বিরূপ মন্তব্যগুলি

অহরহ ওঠা নামা করে সুবেঅবয়বে

আশার ফানুস ওড়ে আকাশের সীমানা অবধি

অপূর্ণ ইচ্ছারা নির্বাধ অজস্র অশেষ, সংখ্যায় এতটাই     

গাছে যতগুলি পাতা আছে কম পড়ে যায়

 

দিনবদলের  কথা

পিথাগোরাসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী

ছোট বড় ত্রিভুজের মাপজোক করি

পুরনো স্বভাব পালটে

নতুনের দরজায় টোকা মেরে শুনি 

দিনবদলের কথা আগেই চর্চা হয়ে গেছে

ঘুমের ভিতর যাওয়া আসা লেগে আছে

ধৈর্যের পরীক্ষায় ইদানীং

পাশের হার খুব কমে গেছে

চিৎকার শুনে বাইরে বেরিয়ে দেখি

স্বভাব নিয়ে দু-পক্ষে তুমুল তর্ক বেধে গেছে

           

স্বভাবত

তর্জন গর্জন আর অযথা তর্ক শুনে

দেওয়ালে ফাটল ধরে গেছে

সীমা ছাড়িয়ে যাওয়া ভাল কাজ হয় নি মোটেই

অধিকাংশ ফোন থেকে আগুনের ফুলকি বেরয়

তুই মুই, আমি তুমি এই নিয়ে সারাদিন

তুমুল তর্জায় কেটে যায়

বারুদের স্তুপে বসে আখের গোছাবার খুঁজছি ফিকির

স্বভাবত তর্জনী তুলে বিশ্বকে শাসাই

          

স্বপ্ন

গনেশ উলটে যারা চলে গেল বনে

তাদের জন্য আজ চারিদিক শুনশান দুপুরবেলায়

ভাতঘুম দিচ্ছে শহরের প্রান্তে গাছগুলি

স্বপ্নের লাশ কাঁধে নিয়ে উড়ো খই

বসে আছি বিরহ-নদীর বালুচরে

ছুরি দিয়ে সময়কে কেটে

ছড়িয়ে দিচ্ছি আকীর্ণ জীবনের অঙ্গনে

একদিন ফিরে যাব সেই পথে

যে পথে এসেছি বিরহ-নদীর বালুচরে

স্বপ্ন সাজিয়ে রাখি প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলায়

          

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন