কবিতার কালিমাটি ১০৪ |
আমার শহর
চামড়ায় বলিষ্ঠ বলিরেখা স্পষ্ট,
দৃষ্টি ঝাপসা,
শরীর বয়স্ক!
সাদা-পাকা চুলে
অপরূপা,
তিলোত্তমা তুমি,
মহোময়ী অনন্যা।
স্মৃতি বোঝাই
কাঁধ আজ দর্পে সুউচ্চ!
খামখেয়ালী খুশির
জোয়ারে ভাসো-
হরদম বেপরোয়া,
নির্লিপ্ত।
কালো ধোঁয়ায়
বুকে আজ শতছিন্ন ছিদ্র,
চুল্লির হাঁপর
যেন, ধিকিধিকি শ্বাসযন্ত্র!
তবুও তুমি চঞ্চল,
প্রাণবন্ত!
সকলের ভালোলাগা,
ভালোবাসার শহর
নাগরিক সুখী
জীবনের চাবিকাঠি একমাত্র।
ঝড়ে পড়া পাতার শব্দে
কিছু ঝড়ে পড়া পাতার শব্দে
অনেকটা জমানো
অভিমানে
জং ধরা বন্ধ
আগলটা হঠাৎই খুলে দিয়েছি।
অথবা বলতে পারো,
কোন পথভোলা
পথিক দাঁড়িয়েছে
এসে অলক্ষ্যে, অজ্ঞানে!
আর আমি অনেকদিনের
অব্যবহিত ঐ লোহার শেকল খুলে দিয়েছি কিছুটা আনমনে।
সীমাহীন অস্থিরতায়
লেপ্টে থাকা
দূরত্বকে ক্রমশ
গ্রাস করে নিলো
পুরনো পাতার
শব্দ রিনরিনে!
স্থবির আমি
কিছুটা লজ্জায়, কিছুটা সম্মোহনে
আর বয়ে যায়
এ কালবেলা -- শূন্যে
অনন্ত নীলিমার
ভেজা স্যাঁতসেঁতে নীলে।
এই মাত্র
এই মাত্র জন্মালো ফুটফুটে দিনের আলো
ঠিক কালকের
রক্ত-মাংসের সদ্যোজাতের মতো
এখনও আড়মোড়া
ভাঙেনি মুখ-চোখে
নামকরণ হয়নি
--
শুধু একটা অদ্ভুত
গন্ধ ছড়ানো চারিদিকে
আর বিশ্বমায়ের
শরীর জুড়ে দেখা যাচ্ছে পূর্ণতার প্রশান্তি!
চুপ করে বসে
শুধু দেখছি
অপার আনন্দ
পাচ্ছি
মুগ্ধতা - আবেশ
- লাল নীল
কত রঙ, ফুল
- পাখি।
আমার বন্ধু
হবে
হবে কবির কবিতা
!
যদি হতে চাও
তবে দেখা হবে
আজ নয়, অন্য
আর এক ভোরে।
এখন শুধু মন
দিয়ে মন ছুঁয়ে যাও
চোখ রাখো, ঐ
মনের ঘরে।
ফিরে আসা
চলে যাওয়া সংসারের সিদ্ধতম নিয়ম
মানি, কিন্তু
ফিরে আসা,
ঠিক জানি না!
আমি ফিরেছি
কিছুটা বিরুদ্ধতায়
কিছুটা অস্থিরতায়।
মাথা গুঁজে
বসে থাকা সময়
মিহি মিহি বিষণ্নতা,
যেন চিনির দানা
ছড়িয়ে আছে মেঝেময়
কাল নীল - আজ
একাদশী
ফলাহার, কে
কবে রেখেছে খবর
বারোমাস্যা
ফুল্লোরার!
তবু মুহূর্তরা
মুহূর্তে বদলে যায় --
দেখিনি কখনও
ভাঁড়ভাঙা মাটির
টুকরোতে কেঁচোর
সংসার
চূর্ণ আলোয়
ঠোঁট লাগিয়ে কন্যাভ্রূণ
জীবন হাতড়ায়।
কথা দিয়েছিলে
ফিরে আসার
মনে হয় — ভুলেছো,
না হয় স্বপ্ন
ফিরিয়ে দেবে আবার তোমায়।
জন্মলগ্ন থেকেই
আমার ভিতর নিশ্চিন্ত এক কন্যারাশি ঘুমায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন