শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২০

প্রণব বসুরায়

 

কবিতার কালিমাটি ১০৪


তারা-কথা (১৬)

কুকুর ডাকলে আমি এখনও ভাবি সে বুঝি পেছনের রাস্তায়
অথচ নক্সা বদলে গেছে।
চতুর্দশপদীও কৌতুক বোঝেনি
মাধ্যাকর্ষের বাইরে দু'চার ফোঁটা জল ছড়াই, দেখি
সে-ও অনড়...
থাক সে কথা

এই গা ছমছম বন্যা প্রস্তাবে
আকাশের হাঁ-মুখ এতই বেড়েছে যে তার
হজমযন্ত্রের শেষ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে
চুপচুপে ভিজে পাখি দম্পতি (অথবা সম্পর্করহিত)
ভাসন্ত থার্মোকলের টুকরোয় চেপে
শেষ যাত্রায়
চলেছে সে যন্ত্রের অমোঘ জিভের নাগালে...

শীর্ষ ন্যায়ালয় বৈধ(!) বলাৎকারে মান্যতা দিলেও
জীবনের অধিকার সংক্রান্ত মামলায় শুনানির পরের তারিখ
এখনও কেউ সঠিক জানে না

 

রাত বিরেতে ঠান্ডা ফ্রাই  

এই যে বৃষ্টি পড়েই যাচ্ছে, আর আমি
বসে আছি সিগারেট জ্বালিয়ে--
এ কোন অঙ্কের ভগ্নাংশ নয়।
বরং এ পূর্ণ যাত্রার মর্যাদা পেতে পারে

এই যে আমি বসে বসে দুলছি, ঢুলছি
এও সেই মাখন মাখানো রুটি
দাঁত নেই বলে মাংসের বদলে
নরম সব্জী খেয়ে উদর ভরানো

ঘরের চাবিটা যেন কার কাছে,
লুকনো রয়েছে!
চাষি বৌয়ের শাড়ি যথেষ্ঠ জীর্ণ হলেও
কেন আসবে না ভর্তূকির রথ?

'
জিজ্ঞাসা', তুমি বারবার ঢুকে যাচ্ছো
আমার নিজস্ব কথপোকথনে,
তুমি যদি নারীই হও প্রকৃত প্রস্তাবে
আমার আঙুল তবে আঙুলেই ধরো

 

গূঢ় অভিজ্ঞান   

দুহাত তুলে সংকীর্তনের ঘোরে
ঢুকে যাচ্ছিলাম সংকীর্ণ গর্ভগৃহে,
সেখানে চন্দনের সঙ্গে লেবুপাতার চাপা গন্ধ
আমাকে ক্রমশ ব্যস্ত করে তুলছিলো
অথবা ব্যাপ্ত হয়ে যাচ্ছিলাম ক্ষিতির মহিমায়...
সেখানে ঘন্টার শব্দ নেই, চেনা আলো নেই
কোনও গুপ্ত পথে বাতাস ঢুকছে সেইখানে
সব কেমন নিঃশব্দে ভেঙে যাচ্ছে ওখানে তখন...

স্যাঁতসেঁতে, জল জল কোরকের মধ্যে
দুর্নিবার আকর্ষণে
একটু একটু করে লুপ্ত হতে থাকি,
ঠিক তখনই চারদিকে দিব্য বিভা, এবং
যেন হঠাৎই, অনন্তের সাক্ষাৎ পেয়ে যাই...

এই গূঢ় অভিজ্ঞান থেকে যাবে আমার কাছেই

 

 

 


1 টি মন্তব্য: