শুক্রবার, ১৪ আগস্ট, ২০২০

বিশ্বজিৎ দাস

 

কবিতার কালিমাটি ১০৩


বাঁশ

(১)


'বাঁশ' এই শব্দটি শুনলেই
            মনে ভাসে সুদৃশ্য কালোহাড়ি,
                ধবধবে সাদাও হতে পারে!

আদুরে নিয়তি অনুযায়ী,
কপালের দু'ইঞ্চিতে যেভাবে উঁকি দেয়
         জন্মপ্রাপ্ত প্রক্ষোভগুলি
          মৃত্যুপ্রাপ্ত উদাসীনতা

ঠিক সেভাবে অনেকেই এমন
কাষ্ঠল হৃদয়ে চিরহরিৎ হওয়ার
             বাসনা রাখে একত্রে বহুবছর!

(২)


বস্তির মেয়ে সুইটির অলক্ষ্যে
একদল উদ্যত কর্কশ পাতা
                            ঢুকে পড়ে বিছানায়

জেগে থাকে থ্যাঁতলানো মুখে, কয়েকটি
নিরীহ বাঁশ

অন্তর্গত গিট, শরীর খোলে কালো বৃষ্টি
হাতে ওঠে, মন ভাঙনের এক স্বতন্ত্র তাস...

(৩)


অনেক ভেবেছে ওপাড়ার বৌদি ঝুমা
অনেক বলেছে কিছুই হয়নি সুরাহা

এইবার, এই জন্মরতিচিহ্ন ফেলে
ছুটে গেছে, বাঁশের কাছে; বিশ্বাস করে

ঝুলছে এই বলে, ফাগুনের রাত কত দূরে?
দেখা হয়নি, আড়চোখে চারমাথা

ঝরে পড়া অভিমান দোলায় চড়ে
চলে যাচ্ছে অশুভ ভাতের দিকে...

(৪)


জসীমউদ্দীন সাহেবে'র বাঁশবন!
যতীন্দ্রমোহন বাগচী'র বাঁশ বাগান

এখন নেই। তিতুমীরও সেই কবে
মুছে গেছে, এখন তো প্রিন্টেড ঘাস!

নৌকার কাছে শুয়ে থাকা
                     আধো চাঁদ,

আর কখনো না ভাসে যদি
ওরাও জন্মনিয়ন্ত্রক জল খেয়ে খেয়ে

একদিন
হয়ে উঠবে স্পর্শপ্রিয় সুরাপাত্রের নদী

(৫)


মুলিবাঁশ এক মেয়ে চলে যাচ্ছে
পৃথিবীর দীর্ঘতম কঙ্কালে

জাতিস্মর হয়ে দেখবে, জননের আবদার
আরও আনুষাঙ্গিক ফুল কাঙালিনীর খোঁপায়

বাঁশবনে তারই ছায়া পড়ে থাকে,
        দুনিয়ার ছোঁয়াহীন বিশুদ্ধ নৃতত্ত্বশালায়!



 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন