কালিমাটির ঝুরোগল্প ৮৭ |
ব্যতিক্রমী ফোনালাপ
অর্ণা বলল, তুমি সত্যি আসছো?
আমি বললাম, হ্যাঁ, আমি আসছি।
-কেন আসবে?
-তোমার কাছে থাকতে চাই।
-আমার ভয় লাগছে, জানো! মা এখন লাইফ সাপোর্টে।
-আমি আসছি এক্ষুনি। এই আর বিশ মিনিট।
-কালও এসেছিলে। হাসপাতালের নিচে বসেছিলে।
-হ্যাঁ, তা ছিলাম। ওদের ক্যান্টিনের চা খুব বাজে।
সিগারেট খেতে পারিনি। মুখ আঁশটে হয়ে গিয়েছিল।
-আবার সিগারেট?
-তুমিই তো সিগারেট!
-মানে?
-আমি সিগারেট টানতে গেলে ভাবি, ফিল্টারটা হল তোমার
ঠোঁট। তোমাকে চুমু খাচ্ছি।
-তুমি খুব অসভ্য! কিন্তু তাও কেন তোমাকে ভালো লাগে?
-আমিও ঠিক বুঝতে পারছি না। এর পিছনে হয়ত ধর্মের
হাত আছে! তোমার আমলনামায় হয়ত আমার নাম লেখা!
-এই! ধর্মের কথা বলবে না। আমি দোযখের বর্ণনা সহ্য
করতে পারি না।
-বেশ, বলব না।
-আমি আর পারছি না। বাবা খুব কাঁদছেন। অথচ জানো,
বাবা মাকে খুব মারতেন। মার শরীরটাকে ব্যবহার করতেন আমের খোসার মতো।
-আনন্দ হয়ত সেখানেই!
-কী বললে?
-বললাম, আনন্দ হয়ত সেখানেই!
-চুপ করো, স্টুপিড!
-অর্ণা, আমি ভালোবাসি তোমাকে। তুমিও আমার কাছে আম।
তবে আমি তোমাকে খোসা নয়, আমের মাংসের মতো খাব।
-প্লিজ থামো! আমি পারছি না আর। চারদিকে এত
চেঁচামেচি কেন?
-আমি এসে গেছি অর্ণা। এই শুধু ফুটপাত পার হয়ে
রাস্তা ক্রস করব।
-তুমি কেন ভালোবাসো আমাকে?
-খাওয়ার সময়ে কানে কানে বলব।
-চুপ!
-আচ্ছা।
-এই না, চুপ করবে না! যা বলছিলে, বলো!
-তোমার শরীরে যে আবেদন আছে, তা অন্য কারোর শরীরে
আমি পাইনি।
-এজন্য ভালোবাসো?
-না, আরেকটা কারণও আছে। তোমার কানের লতিটা খুব
মোটা। কামড়িয়ে মজা পাওয়া যাবে।
-(ফোঁপাতে ফোঁপাতে) মা এইমাত্র মারা গেছেন। বাবা
মেঝেতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছেন।
আমি ফোন কেটে দিয়ে হাসপাতালে ঢুকে গেলাম।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন