অর্ধসত্যে কামাচ্ছন্ন হে সুন্দর - ১
"With fire and sword, with crowbars
and axes, they carried on day after day their work of destruction. Never
perhaps in the history of the world has such havoc been wrought, and wrought so
suddenly, on so splendid a city; teeming with a wealthy and industrious
population in the full plenitude of prosperity one day, and on the next seized,
pillaged, and reduced to ruins, amid scenes of savage massacre and horrors
beggaring description." (The Forgotten Empire: Robert Sewell)
১৫৬৫ সালের ২৩শে জানুয়ারি তালিকোটের রণক্ষেত্রে যা হয়েছিলো, ভারতবর্ষের ইতিহাসকে তা স্থায়ীভাবে পালটে দেয়। বিজয়নগরের প্রতাপী রাজা আলিয়া রামরাওয়ের পতন মধ্য ও দক্ষিণ ভারতের বস্তুস্থিতি বদলে দিয়েছিলো। দক্কনের সুলতানদের মিলিত বাহিনীর কাছে হেরে গিয়েছিলেন রাজা আলিয়া রামরাও। রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, হতে থাকে। কিন্তু আমরা শিহরিত হয়ে তাকিয়ে থাকি ইতিহাসের দিকে। রবার্ট সিউয়েল সাহেবের কিংবদন্তি গ্রন্থ The Forgotten Empire পড়তে গেলে সেই শিহরণ জাগে অন্তঃকরণ জুড়ে। বিজয়নগরের সমৃদ্ধি, সম্ভ্রম, সম্মান, সভ্যতা ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলো কিছু ঘাতকের অস্ত্র আর আগুনে। সেসব নিয়ে ভারি ভারি বই লিখেছেন পণ্ডিতেরা। আমরা শুধু পড়তে জানি।
আলিয়া রামারাও যখন সিংহাসনে আসেন, তখন তাঁর চারপ্রান্তের সব রাজত্ব বহিরাগত ইরানি ও তুর্কি যুদ্ধব্যবসায়ীরা দখল করে নিয়েছিলো। আহমদনগরের বুরহান নিজাম শাহ, বিজাপুরের আদিল শাহী আর গোলকোণ্ডার কুতব শাহী সুলতানরা প্রত্যেকেই চাইতেন বিজয়নগর সাম্রাজ্য দখল করতে। বিজয়নগরের ধনসম্পত্তি আর প্রতিপত্তি ছিলো এদেশের শীর্ষস্থানে। সারা পৃথিবীতে বিজয়নগরের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো বাগদাদ। আকবর তাঁর রাজধানী আগ্রা শহরের সদ্য গোড়াপত্তন করতে শুরু করেছেন। আহমদনগর, বিজাপুর বা গোলকোণ্ডা, বিজয়নগরের সমৃদ্ধির সামনে একেবারে অনুল্লেখ্য ছিলো। রামারাও ছিলেন কূটনীতিতে দক্ষ। তিনি তিনটি বহিরাগত রাজশক্তিকে পরস্পরের বিরুদ্ধে প্ররোচিত করতেন। আদিল শাহীদের সঙ্গে তাঁর সখ্য ছিলো। তাঁদের সাহায্য নিয়ে রামারাও নিজাম শাহী সুলতানকে পর্যুদস্ত করেছিলেন। কিন্তু স্বভাবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত দাম্ভিক। আজকের ভাষায় যাকে ‘মেগালোম্যানিয়াক’ বলা হয়। স্বার্থের খাতিরে এই তিন সুলতান নিজেদের মধ্যে আপোশে বোঝাপড়া করে ফেলেন। ক্রমশ পরস্পরকে বেঁধে ফেলেন বৈবাহিক সূত্রে। ক্ষমতার দম্ভে অন্ধ আলিয়া রামারাও এই আঁতাতটিকে গুরুত্ব দেননি। শেষপর্যন্ত তিন সুলতানের মিলিত বাহিনী বিজয়নগরের রাজশক্তিকে চ্যালেঞ্জ জানায় তালিকোটার রণাঙ্গনে।
তুঙ্গভদ্রা
নদীর পূর্বতীরে ছিলো বিজয়নগর সাম্রাজ্যের রাজধানী। লোককথা অনুযায়ী নদীর পশ্চিম পারে
কিস্কিন্ধ্যা পাহাড় আর পম্পা সরোবর। বালী, সুগ্রীব, হনুমানের রাজ্যপাট। হনুমানের মাতা
অঞ্জনার নামে অঞ্জনেয়াদ্রি পাহাড় আর হনুমানমন্দির। বিজয়নগর সাম্রাজ্য সেই হরিহর-বুক্কের
সময় থেকে হাতবদল হয়েছে নানা রাজপুরুষের মধ্যে। পনেরো শতকের শেষে ষোলো শতকের শুরুতে
তুলুভা বংশের রাজত্ব আর রাজার নাম কৃষ্ণদেবরায়। ১৫০৯ থেকে ১৫২৯, মাত্র বিশ বছরের শাসনকাল,
কিন্তু শুধু দাক্ষিণাত্যে নয় সারা ভারতের ইতিহাসে এক প্রবাদপ্রতিম নৃপতি ছিলেন এই রাজা।
পরাজিত করেছিলেন বাহমনি বিজাপুর ও গোলকোণ্ডার কুতুব শাহি সুলতানদের এবং পরাক্রান্ত
কলিঙ্গসাম্রাজ্য অধিপতি গজপতি প্রতাপরুদ্রদেবকে। প্রথমবার হিন্দোস্তান আক্রমণের আগে
মহম্মদ জহিরুদ্দিন শাহ বাবর কৃষ্ণদেবরায়কেই একমাত্র সক্ষম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে চিনতে
পেরেছিলেন।
তীর্থবিট্ঠল, ক্ষেত্রবিট্ঠল
কৃষ্ণদেবরায়ের গুরুর নাম ছিলো ব্যাসতীর্থ।
ব্যাসতীর্থ কর্ণাটকের হরিদাস সম্প্রদায়ের সাধক। মহারাষ্ট্রে যেমন বিট্ঠলের পূজকরা ছিলেন
ওয়রকরি সম্প্রদায়ের, কর্ণাটকে তেমনই ছিলো হরিদাস সম্প্রদায়। রাজগুরু ব্যাসতীর্থের অনুপ্রেরণায়
রাজা কৃষ্ণদেবরায়ের দরবারে বিট্ঠলরাজ দেবতার সম্মান লাভ করেন। কলিঙ্গসাম্রাজ্য জয় উদযাপন
করার আনন্দে কৃষ্ণদেবরায় প্রথমে কৃষ্ণমন্দির ও তারপর বিট্ঠলমন্দির নির্মাণ করেন। বিট্ঠল
মন্দিরের আমৃত্যু জীবিত বিগ্রহ ছিলেন কর্ণাটক সঙ্গীতের পিতৃপ্রতিম গুরু পুরন্দরদাস
বিট্ঠল (১৮৮৪-১৫৬৪)। দাক্ষিণাত্যের ইতিহাসে
প্রবল পরাক্রান্ত রাজন্যবর্গের অভাব নেই। কিন্তু তার মধ্যেও থঞ্জভুরের রাজেন্দ্রচোল-১
এবং হাম্পির কৃষ্ণদেবরায়ের নাম সবার শিখরে থাকে। এহেন রাজা কৃষ্ণদেবরায়ের কীর্তির অভাব
নেই হাম্পিতে। বিরূপাক্ষমন্দির, প্রসন্নবিরূপাক্ষ, বালকৃষ্ণ, হাজাররাম, রঙ্গমন্দির,
মহানবমীডিব্বা, কতো আর নাম নেওয়া যায়? তার মধ্যেও সেরা কীর্তি, হাম্পির বিট্ঠলমন্দির।
বিট্ঠল বা পাণ্ডুরঙ্গ বিঠোবা নামের দেবতাকে
নিয়ে আমার কোনও আগ্রহ ছিলো না কখনও। শুধু আমচি মুম্বাইতে পুলুশ মানেই পাণ্ডু হাওলদার
কেন হয়, সেই নিয়ে কিঞ্চিৎ কৌতূহল বোধ করতুম। তাঁকে নিয়ে প্রথম আগ্রহ বোধ জাগে, আমার
দেবতা ভীমসেন জোশির অতি বিখ্যাত আহির ভৈরবে বাঁধা সন্তনাম দেবের অভঙ্গটি যখন প্রথম
শুনি। একদিন সেই গানটি স্থায়ীভাবে বুকের ভিতর কোথাও আস্তানা তৈরি করে নিয়েছিলো। জানি
না, তার মধ্যে গানটি না বিট্ঠলের ভূমিকা, কোনটি প্রাসঙ্গিক ছিলো।
বিট্ঠল দেবতার বিশদ বৃত্তান্ত নিয়ে তখন
থেকেই আরো একটা খোঁজের জন্ম হলো। সেভাবেই খুঁজতে খুঁজতে একদিন পৌঁছে যাওয়া। বিজয়নগর
সাম্রাজ্যের শীর্ষ গৌরবের দিনগুলির সেই নির্মাণ, হাম্পির বিজয় বিট্ঠল মন্দির। বহু কিছুই
রয়েছে সেখানে। যে কোনও একটা নিয়ে লিখতে গেলেই তো মহাভারত।
তারিখ-ই-শিরাজি
রফিউদ্দিন শিরাজি ছিলেন আদিল শাহি সেনাবাহিনীর
খান-এ-সালার (সেনাধ্যক্ষ) এবং তহবিলদার (হিসেবরক্ষক)। তার সঙ্গে তিনি ছিলেন একজন দক্ষ
লিখিয়ে। আদিল শাহীদের ইতিহাস তাঁরই লেখা। 'তাজকিরাতুল-মুল্ক' নামে তাঁর একটা দারুণ
ঐতিহাসিক দলিল আছে। তিনি ছিলেন ইরানের লোক। ১৫৬০ সালে বিজাপুর এসেছিলেন। দক্কনের মিলিত
সুলতানবাহিনী ও আলিয়া রামারাওয়ের সৈন্যদের মধ্যে তালিকোটায় যে যুদ্ধ হয়েছিলো, তার বিশদ
বিবরণ তাঁর লেখায় পাওয়া যায়।
আহমদ নগরের নিজাম শাহ ছিলেন চরম রামারাও
বিদ্বেষী। বিজাপুরের সুলতানের সাহায্যে আলিয়া রামারাও তাঁকে যেরকম অপমানজনকভাবে পরাজিত
করেছিলেন, সেটা তিনি কখনও ভুলতে পারেননি। তিনি বুঝেছিলেন যদি সুলতানরা সঙ্ঘবদ্ধ না হন, তবে বিজয়নগর অধিকার
করা যাবে না। সেই লক্ষে তিনি ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছিলেন। গোলকোণ্ডা ও বিজাপুরের সুলতানদের
সঙ্গে তিনি বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। যদিও ইব্রাহিম আদিল শাহকে আলিয়া রামারাও পালিত
পুত্রের মর্যাদা দিয়েছিলেন, কিন্তু রামারাওয়ের দম্ভ সম্পর্কটিকে লালন পালন করেনি। কৃষ্ণা
নদীর তীরে তিন সুলতান মিলে সেনা সমাবেশ করলেও রামারাও সব জেনে তাঁদের উপেক্ষা করাই
শ্রেয় মনে করছিলেন।
যুদ্ধ করতে এসে সুলতানি সৈন্যরা কৃষ্ণা
নদী পেরোনোর একটা জায়গা খুঁজে বার করলো। শীতকাল। যদিও এসব জায়গায় শীত বলে কিছু নেই।
কিন্তু নদীতে জলধারা স্তিমিত। নদী পেরিয়ে এই সৈন্যরা পশ্চিমদিকে কুচকাওয়াজ শুরু করলো।
তালিকোটা যেতে গেলে সোজা উত্তরে যেতে হতো। এটা ছিলো সুলতানি ফৌজের বিজয়নগরের সৈন্যদের
বিভ্রান্ত করার চাল। রাত নামতে চাঁদের আলোয় আরেকটা সৈন্যদল নদী পেরিয়ে সোজা রামারাওয়ের
শিবিরে পৌঁছে যাবে। বিজয়নগরের সৈন্যরা তখন নৈশভোজের পর ফুর্তি করছে। গায়ের উপর সুলতানি
সৈন্য পৌঁছে যেতে তারা একেবারে অপ্রস্তুত। আসলে ভারতবর্ষে সেই মহাভারতের সময় থেকে রাতের
বেলা যুদ্ধবিরতি মেনে চলা হয়। এদেশে যুদ্ধ করতে গিয়ে বারবার এই প্রথাটার সুযোগ নিয়েছে
তুর্কি আর ইংরেজরা।
রামারাওয়ের সৈন্যরা প্রস্তুত হবার আগেই
বাঁদিক থেকে নিজাম শাহ আর মাঝখান থেকে কুতব শাহের বাহিনী আক্রমণ করতে শুরু করে দিলো।
রামারাও তখন ডানদিকে তাঁর ভাই থিম্মারাওকে আদিল শাহী সৈন্যদের মোকাবিলায় পাঠিয়ে নিজে
কুতব শাহীদের সঙ্গে লড়ে যেতে চাইলেন। যেসব সৈন্যরা লড়ে যাচ্ছিলো, তাদের নানা মণিরত্নই
নাম দেওয়াও চলছিলো সঙ্গে সঙ্গে। রামারাও তখন নব্বই বছর বয়স পেরিয়ে গেছেন। কিন্তু বিক্রম
ফুরোয়নি একেবারে। অন্য সেনাধ্যক্ষরা তাঁকে অনুরোধ করছেন হাতির থেকে নেমে ঘোড়ায় সওয়ার
হতে। যাতে বিপদ বুঝলে তিনি রণক্ষেত্র ত্যাগ করতে পারেন। কিন্তু তিনি রাজি ন'ন। রাজার
বীরত্ব দেখে বিজয়নগরের সৈন্যরা নতুন উদ্যমে আক্রমণ করা শুরু করলো। নিজাম শাহ প্রমাদ
গুনলেন। মোটামুটিভাবে তিনি যখন নিরাশ হয়ে পড়েছেন, তখন অপ্রত্যাশিতভাবে তাঁর এক তুর্কি
সেনাপতি রূমী খান, গোলন্দাজদের দায়িত্ব নিয়ে
ঝাঁপিয়ে পড়লেন। দুটো বড়ো কামানে তামার মুদ্রা আর বারুদ ভরে মাঝখান থেকে রাজার সেনাদের
উপর গোলাবর্ষণে রাজার সৈন্যরা হতচকিত। এমন কামান বিজয়নগরের ফৌজ আগে দেখেনি। গুছিয়ে
ওঠার আগেই পিছন থেকে রূমী খানের নেতৃত্বে হাতিসওয়ার নিজাম শাহী সৈন্যরা তাঁদের আক্রমণ
করতে এগিয়ে এলো।
ঐতিহাসিক ফেরিশতা লিখেছেন, তখনও সেনাপতিরা
বারবার রামারাওকে অনুরোধ করছেন হাতি থেকে নেমে ঘোড়ায়সওয়ারি হবার জন্য। আলিয়া রামারাও
তখনও বলছেন, ওরে কে আছিস? নিজাম শাহ আর আদিল শাহের মাথাগুলো কেটে নিয়ে আয়। তাঁর প্রবাদিত
দর্পের স্পষ্ট নমুনা। ততোক্ষণে রূমী খান ঘোড়সওয়ারদের নিয়ে পৌঁছে গেছেন খোদ রামারাওয়ের
হাতির কাছে। চারদিক দিয়ে হাতিকে আক্রমণ করায় হাতিটি, নাম হাসান মিয়াঁ, ঝটকা মেরে রাজাকে
ভূপাতিত করে দিলো। রূমী খান তখনও জানেন না, লোকটি কে? কিন্তু যখন তিনি দেখলেন প্রধানমন্ত্রী
দলপৎ রায় নিজে ঐ ব্যক্তিটিকে আড়াল করে যুদ্ধ করে যাচ্ছেন, তখন রূমী বুঝতে পারলেন ভূপাতিত
ব্যক্তিটির পরিচয়।
রূমী খান রাজা আলিয়া রামারাওকে বেঁধে
একটি হাতির পিঠে চড়িয়ে নিয়ে এলেন তাঁর মালিক নিজাম শাহেরকাছে।
রামারাওয়ের রেলা
রফিউদ্দিন শিরাজির বর্ণনা থেকে আমরা
আলিয়া রামারাওয়ের শেষ প্রহরের কথা জানতে পারি। নিজাম শাহের সামনে শৃঙ্খলিত রামারাও
দাঁড়িয়ে আছেন। নিজাম শাহ প্রশ্ন করলেন,
-আপনি ভালো আছেন?
রামারাও মুখে কিছু বললেন না। হাতের আঙুল
কপালে ঠেকালেন। বলতে চাইলেন তাঁর নিয়তি নির্দিষ্ট হয়ে গেছে।
হঠাৎ একজন দূত এসে জানালো রামারাওয়ের
ধরা পড়ার খবর পেয়ে ইব্রাহিম আদিল শাহ দ্রুত ছুটে আসছেন। এটা সবাই জানতো ইব্রাহিম আদিল
শাহ, আলিয়া রামারাওয়ের ঘনিষ্টজন। একবছর আগেই
যখন স্বয়ং রাজা ও মহারানি সবার সামনে তাঁকে 'পুত্র' বলে
সম্বোধন করেছিলেন। চুক্তি হয়েছিলো বিজয়নগর ও বিজাপুর একসঙ্গে নিজাম শাহী ও কুতব শাহীর
বিরুদ্ধে লড়বে। কিন্তু রাজনীতি অতো সোজা রাস্তায় চলে না। আদিল শাহ সুলতানি বাহিনীর
সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন। তবুও রামারাওয়ের প্রতি আদিল শাহের আনুগত্য নিয়ে নিজাম শাহ সন্দিহান
ছিলেন।
ইব্রাহিম আদিল শাহের দ্রুত নিজাম শাহের
দরবারে আসার খবর শুনে তাঁদের সন্দেহ বেড়ে গেলো। নিজাম শাহের একজন আমির কাশিম বেগ হাকিম
সুলতানকে বললেন এখন রাজার সঙ্গে আলোচনার সময় নয়। আদিল শাহ প্রায় পৌঁছে গেছেন। এখুনি
সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সন্দিগ্ধ নিজাম শাহ রাজা আলিয়া রামারাওয়ের শিরচ্ছেদের আদেশ দিলেন।
রাজা আলিয়া রামারাওয়ের ছিন্নমুণ্ড একটি বর্শাফলকে গেঁথে নিজাম শাহী সৈন্যদের মিছিল
দেখে বিজয়নগরের বাকি সৈন্যরা রণক্ষেত্র ত্যাগ করলো। অস্তে গেলা দিনমণি। ভারতবর্ষের
শেষ হিন্দু সাম্রাজ্যের গৌরবগাথা এখানেই শেষ।
'...যুদ্ধ
শেষ হ’য়ে গেলে নতুন যুদ্ধের নান্দীরোল;
মানুষের
লালসার শেষ নেই;
উত্তেজনা
ছাড়া কোনোদিন ঋতুক্ষণ
অবৈধ
সংগম ছাড়া সুখ
অপরের
মুখ ম্লান ক’রে দেওয়া ছাড়া প্রিয় সাধ
নেই...'
শুরু
হলো হাম্পির নেমেসিসের কাহিনী।
(ক্রমশ)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন