কবিতার কালিমাটি ১০২ |
অরণ্যকথা
সবুজ বনানীর কাছে চেয়ে নিয়েছি এক টুকরো বন্ধুত্ব
সোনাখালি অরণ্যের ভেতরে একদিন গিয়েছিলাম
ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক, বনজ ঘ্রাণ আর রহস্যময়ী প্রকৃতি,
সেই বাল্যকালে আমার সঙ্গে পাতিয়েছিল সবুজসই!
বামনের মাকে যে রাত্রিতে গণেশবাবা পা দিয়ে পিষে গেল
তারপর ভয়ের আবহাওয়া আর বনদেবতার জপ
পবিত্রকাকু, নিতাইকাকুরা বাঁশের আগায় লাগিয়েছিল
বড় আলো ,তাকে ভয় দেখাতে ...
তখনো মানুষ অতটা নিষ্ঠুর হয়ে ওঠেনি বোধহয়
অরণ্য আমায় বলেছে ওর মনের ব্যথা, অসহনীয় কষ্ট
মানুষের লোভ কীভাবে তিলে তিলে ধ্বংস করলো প্রকৃতি
তাই আজ অণুজীবের হাতে ক্রীড়নক !
দূরে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নেমে যাওয়া বৃক্ষের সারি
চোখের গোলকে মায়া তারুণ্যে পূর্ণ হয়ে ওঠে
আমার অন্তরে বেজে ওঠে নিসর্গের গান ...
উবুন্টু
'এ আমির আবরণ 'ভেদ করে আলো প্রবিষ্ট হয়
সেই বোধের অপূর্ব জাগরণের রূপকার হয়তো
সে যাঁকে ঈশ্বর বলি , এভাবেই আমি আমরা হই,
একা এই পৃথিবীতে দুব্বোঘাসের মত পদদলিত
মাথা তোলার ব্যর্থ প্রচেষ্টায় কেবলই ডগ্নপ্রাচীর
গাত্রে নির্নিমেষ দাঁড়িয়ে থাকা জলহীন, সঙ্গহীন!
তোমরা আছো বলেই আমার এই প্রাণের দাম
বেঁচে থাকার প্রবল বাসনায় উদ্বেল হিয়া...
আয়না বিহীন প্রতিচ্ছবির আপাত শূন্যতার পানসে
জীবন আর প্রেমের প্রতিফলন না থাকা হৃদয় জানে
একা একা আর যাই হোক জেতা যায় না জিয়নকাঠি
উবুন্টু মানে শুধু সম্মিলিত আমাদের কথা, একার
কাহিনি মুছে ফেলে সূর্যোদয়ের দিকে এগিয়ে যাওয়া
মানসভ্রমণ
মনে মনে
ঘুরে আসি একদা ফেলে আসা চারণভূমি
রাখালিয়া
বাঁশিতে ফুঁ দিতে
গিয়ে সুর ভুল
সমুদ্রের
বেলাভূমি ছুঁয়ে ঢেউয়ের সঙ্গে প্রণয়,
ঝিনুকের
খোলে মুক্ত খুঁজি সাদা ঘিয়ে গোলাপি!
বরফের
চূড়ায় লুটোপুটি খেয়ে গড়ানো আমোদ
শীতের
প্রাখর্যে উষ্ণ কফির কাপে চুমুক দেওয়া
আনন্দে
দৃষ্টি ছুড়ে দেওয়া দূরে বালিকার খেয়ালি
খেলার
সাথী হয়ে ...
নিঃসঙ্গ
রাতের তারার সংলাপ আর তুষারপাত
নান্দনিক
আবহে মন মেতে ওঠে!
আমি রুদ্র
প্রকৃতির নাউয়ে মন পবনের পাল তুলে
ভেসে যাই
গঙ্গা কিংবা বরাকের জলে পরিযায়ী
প্রব্রাজিকার
অভিযানে নতুন
মসনদে মরমি কথা
লিখে
রাখবো বলে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন