সোমবার, ১৫ জুন, ২০২০

দেবলীনা চক্রবর্তী



কবিতার কালিমাটি ১০১



জীবন কলম করেছি

একটা নির্ঘুম রাত আর একটা গোটা দিন
স্যাঁতস্যেতে!
দুইয়ের সমার্থকতা এই যে দু’ক্ষেত্রেই একটা ক্লান্তিকর অবসাদ ঘিরে ধরে
অথচ প্রতিবার সে বিষাদকে কাঁচের বয়ানে যত্নে ভরে রাখি -
যেন পর্যাপ্ত আলো-হাওয়া-রোদে তারা জারিত হয়ে ওঠে।

এ ভরন্ত বিষাদে ,
ভাঙা ডালে, জীবন কলম করেছি -
হয়ত কিছুটা আবান্তর প্রত্যাশায়!

জানি জীবন দ্বিতীয় সুযোগ দেয় না
তবু —
জল ও তো থেমে থাকে না -
বাঁধ ভাঙে, আবার গড়ে।

এই কাঁপা কাঁপা মোমের অস্থির আলো
নিভে গেলে চারদিকে অন্ধকার হয় জানি
-ভয় নেই।

শুধু ভয়, গলায় আটকে থাকা
নীল বিষকাঁটা’য়!


ইচ্ছে করে

আকাশ আমার দু‘চোখে ছেয়ে আছে!
দু’তিনটে বিরামচিহ্ন মনের মধ্যে লুকিয়ে  যখন, তোমায় খুব বৃষ্টি বলে ডাকতে ইচ্ছে করে।

ডাকবো বলে যেই ভেবেছি -
ওমনি তুমি মুষলধারায় নামলে আমার একলা ঘরের শূন্য মনে!
তখন তোমায় পথভোলা এক পথিক বলে খুব ডাকতে ইচ্ছে করে।

আগলে রাখি, তোয়াজ করে যেই চলেছি
ওমনি তুমি জলের সাথে জল মিশিয়ে, আমার যত বর্ণমালা ভিজিয়ে দিয়ে ঝড়তে থাকো নিঃস্ব হয়ে!
তখন তোমায় বিষাদ বলেই শুধু ডাকতে ইচ্ছে করে।


ঘটনাবলী

এমন ঘটনা ঘটার তেমন কোন কারণ ছিল না,
ভোর আলো ঢাকলো, মেঘের পরে মেঘ সাজিয়ে
বৃষ্টি এলো, মাটির জন্য, বাতাস জানে!

নীল অর্কিড থেকে দু’এক ফোঁটা ছিটকে এলো পাথরকুচির পাতায় — দালান জানে!

আমিও কিছু সুর ছড়ালাম, ওদের ভালোবেসে
সে শুধু আমার আকাশ জানে!

"আজ সকালের আমন্ত্রণে"...


জ্যামিতিক জীবন

সরু সরু সরলরেখার মতো জীবন হেঁটে চলেছে, কখনো আলোয় - কখনো অন্ধকারে।

মাঝে মাঝে বৃত্ত হতে চায়, এঁকে বেঁকে -
দৈর্ঘ্য-প্রস্থ ছাড়াই, কেন্দ্রীভূত হয়
মন আর মগজের ঠিক মাঝখানে,
এক সরল উপপাদ্যে।

উপুড় করা হাঁড়ির নিচে চাপা পরে থাকা ইচ্ছেগুলো,
ঢাকনা খুলে দিলেই ভুরভুর করে ছড়িয়ে পরে
লাল-নীল হলুদ স্বপ্নিল গন্ধ
এমন গন্ধ সংকেতে, হতাশার কালো মেঘ উড়ে যায়
চকমকি আলোয় ভরা সূক্ষ্ম রেখাগুলো হেঁচকা দিয়ে টেনে আনে জীবনকে জ্যামিতিক বলয়ে।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন