কবিতার কালিমাটি ১০০ |
বেঁচে থাকার অন্ধকার
সাগরজলের আলো অপস্রিত হবার পর মনে হলো বেঁচে
থাকবার জন্য ব্রহ্মাণ্ড অন্ধকারকে জিইয়ে রাখে। অন্ধকার আছে বলে কিছু দার্শনিক
দারুচিনি পাতায় জীবাণুমানবের গতিচক্র আঁকে। আমিও এক খণ্ড অন্ধকারের পাশে লেকসজল
অরণ্যভূমি গড়ে তুলি। এ অন্ধকারে আলো দিকভ্রান্ত হয়ে শুধু শীর্ষপত্রে মধু ঢেলে দেয়।
লেকের মধ্যভাগে আমি বৃষ্টিপতন নিশ্চিত করি--পাখিদের বৃষ্টিখেলা শেষে লেকতীর
বিরামপুরের অমলতায় ভরে ওঠে।
তোমার কাছে যেতে
তোমার কাছে যেতে উড়তে হয় অনেক দূর। ওড়ার জন্য
কর্তৃপক্ষের আদেশ নিতে হয়, শরীর খুলে দেখাতে হয় বিশুদ্ধ পরিকল্পনা। আকাশকে স্বাধীন
মনে হয় না। আকাশ হয়ে ওঠে খণ্ডিত রাজতন্ত্র। আমি খণ্ড খণ্ড আকাশের সীমানা পেরিয়ে
যাই; বাতাসের শীতলতা আমার শ্বাসপ্রবাহে প্রভাব ফেলে। আমি আকাশে হাঁটতে থাকি;
যাত্রাপথ এক সেন্টিমিটারও কমে না। কখনো কখনো পরিভ্রমণের জন্য পায়ের কোনো ভূমিকা
থাকে না। বাধ্য হয়ে পা গুটিয়ে রাখি, আবার উড়তে থাকি। সময় জোন ভাঙতে ভাঙতে ক্লান্ত
হয়ে তোমার কাছে ফিরে আসি। তোমার কাছে আসতে আমার সবচে বেশি সময় লাগে।
পাখিসত্তার ক্রন্দন
পাখিসত্তার ক্রন্দন নিয়ে জেগে থাকি। ওয়েস্টবেরির
গৃহদৃশ্য থরথরিয়ে ওঠে, অনতিদূর পার্ক থেকে ভেসে আসে নিশ্বাসের উত্তাপ। বাস্তবতা
দৃশ্যকে প্রসারিত করে; কিছু দৃশ্য অধিবিদ্যক অর্বিট রচনা করে--সেখানে পাখিসত্তা ঘুরে
চলে, ডানাকেন্দ্রে কম্পন জাগিয়ে রাখে, গভীর চুমুকে তুলে নেয় অনিঃশেষ স্মুদি। তার
চোখের ভেতর অর্থময় হতে থাকে রাত্রির কথকতা--আকস্মিকভাবে সে হয়ে পড়ে চেতনাহীন।
রাতশেফালি ফুটে ওঠে, রাতের উদ্ভাসন পাখিসত্তার দৃষ্টিতে রেখে যেতে পারে না কোনো
গূঢ় প্রহর।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন