কবিতার কালিমাটি ১০০ |
কারেন্ট আফেয়ার্স
(২২)
কেউ
কি ডাকছে?
ডোরবেল বাজল না-তো!
খটখট শব্দও নয়,
কে
ডাকছে, কোত্থেকেই বা!
ডাকলে
সাড়া দিতে হয়
ভালোবাসা সে-কথাই বলে
পা স্থির, কণ্ঠে এক দলা কফ
সাড়া
না-পেয়ে চলে যেতে পারে বটগাছ
সঙ্গে প্রচুর অক্সিজেন এনেছিল
রেখে গেল হয়তো বা--
দুধওয়ালা
বাইরে থেকে, পত্রিকা নীচ থেকে,
সংস্পর্শের বাইরে থেকে যোগান
বাজার-ফেরত ছেলে সটান স্নানঘরের গান
বাঁচাচ্ছি লড়াই, বাঁচিয়ে রাখছি আয়ু
ঘুম
সাড়ে-তিন ঘণ্টা, জমিন সাড়ে-তিন হাত
কেউ
বলে যথেষ্ট; কেউ-- নিতান্তই কম,
আমি যে কী বলি! প্লিজ, শুনতে চেয়ো না
চাহিদা
কমে আসে, চাহিদা বেড়ে চলেছে জেনে—
ঘুমকে বড়ি খাওয়াতে ভুলে যাই
কত দিন ঘুমোয় না গণ-কোয়ারেন্টাইন
ব্যালকনি
থেকে দেখি, ঝুরি সমেত ফিরে যাচ্ছে বটগাছ
ফিরে ডাকতে ভুলে যাই যেমন, ভুলে যাই টাটা করতেও
বলতে পারতাম— বন্ধু হাসপাতালের দিকে
যাও
পা-দিয়ে
ঝুরি গভীরে, হাত থেকে ঝুরি মাটি-ছোঁওয়া, কণ্ঠের ঝুরি বাতাসে দুলছে
স্থির আমি, কেউ ডাকছে, আসতে বা যেতে বলতে
পারছি না…
(২৪)
শরীর,
পিত্ত-বায়ু-কফ মহম্মদ-আলি-বিন
প্রাবল্যের হেরফের, তো তুঘলক
রাজধানি বদল যখন-তখন
একে
রামে রক্ষা নেই সুগ্রীব দোসর
কফে জুড়েছে করোনার কলোশাস্
শ্লেষ্মা ফুলে-ফেঁপে বড়লোক
নাকি
চীন বাজার-দখলের দং
ভাইরাস পরিবেশন করেছে প্লেটে প্লেটে
হতেও পারে ধরে নিয়ে দৌড়োচ্ছে ইঁদুর
মারিকা-চেতাগ্নি কবেই বা যুদ্ধ খেলেনি!
সৎকারে
কেউ নেই, নিয়ম মেনে দাহ কিংবা দাফন
মুখাগ্নি নেই, মাটি দেওয়া নেই, ভিজতে পারত শুকনো
চোখের
উঁকি-ঝুকি নেই
শরীর-বিলাস বিনাশ
পিত্ত-নাশের
খাবার উড়ে যে কোথায়!
বায়ু-চাপ, বায়ু-বৃদ্ধি, বায়ু গড়ের মাঠ
কফ কিনেছে নতুন পোশাক
কণ্ঠে পেঁচানো শাড়ি
ফুসফুস হিপোপোটমাস
শরীর,
সুখে নেই তোমার রাজ্যপাট
মন্ত্রী-ঘোড়া-গজ, এমনকি নৌকোও বলে কত জল!
সান্ত্রীরা শুধু গুড়িগুড়ি পায়, একবার বেরোয়
একবার ঢোকে
নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস
শরীর, তুমি বেঁচে আছ
পিত্ত-বায়ু-কফের দোলনায়
শরীর, তুমি কার?
হয়তো আমার, হয়তো তোমার নিজেরই…
(২৫)
আজ
ভোর-বৃষ্টি
আজ একটা গ্রাফ আঁকব
দিন-সরণ
অনুভূমিক, লম্বে আক্রান্ত
এসব
নিয়েই আছি কত দিন যে!
ঘোরাতে চাই মন, ফেরে না
চুইন-গাম দাঁতে আটকে থাকে
টমেটোগুলো
বালতির জলে ডুবে-ভেসে আমাকে দ্যাখে
আমি ওদের।
ঘুমের মধ্যে ওদের আক্রান্ত হতে দেখি
আজ
বৃষ্টি-টা কন্টিনিউ করবে
আজ দাড়ি কাটব
আট দিন খুব একটা কম সময় নয়
আজ
দুধের প্যাকেট হাতে দরজার গোড়ায় দাঁড়াবে ফটিক
জিজ্ঞাসা করব এত ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে পড়ছে
না-তো!
রেন-কোট-টা গায়ে চাপানো উচিত ছিল
ভাবছি,
বৃষ্টিকেও জিজ্ঞাসা করব সে কিছুটা সুরাহা
করছে কি?
নাকি, পড়তে হয়, পড়ে যাচ্ছে
বোরো-ধান নষ্ট করছে মাঠে!
আজ
ভোর-বৃষ্টি
কনটিনিউ করবে
পাখিদের খাবার কমে আসছে
পারুলদের বাড়ি দানা আছে কিনা জানা নেই
আজ একটা গ্রাফ আঁকব
বাড়তে-থাকা
আক্রান্ত আড়ে, সংখ্যা-মৃত্যু লম্বে, খাড়াই…
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন