সমকালীন ছোটগল্প |
বোম্বে টোস্ট
দোকানের সামনে আসতেই অস্বাভাবিক দৃশ্যটা চোখে পড়েছিল। গাড়ির
লাইন ওঁদের গলি ছাড়িয়ে আমাদের গলিতেও ঢুকে পড়েছে। সাত সকালে কী ব্যাপার! দোকানদার ছেলেটাই জানালো, ‘ভোর রাতে চলে
গেছেন’। ও জানে আমরা ও বাড়ির আত্মীয়। ভুগছিলেন অনেকদিন। সম্পর্কে বাবার আপন জ্যাঠতুতো ভাই তিনি। আমরা বলি ও
বাড়ির জ্যাঠা-জ্যাঠিমা।
ছেলেটাকে আমি আগুন চোখে ভস্ম করি। কী দরকার ছিল জানানোর?
ঘুম থেকে উঠেই পাউরুটি কিনতে এসেছিলাম। বোম্বে টোস্ট হবে আজ। বৌদি নিজে থেকেই
বলেছে বানাবে নইলে ছুটির দিনে স্বয়ং ভগবান নামলেও দশটার আগে বিছানা ছাড়তাম না; এখন সব কেমন কেঁচে গেল! রাগে আমার গা জ্বলতে থাকে। কোন মানে হয়?
মাত্র মাস দুয়েক আগে বোম্বে টোস্ট ফের আমাদের বাড়িতে পাত পেড়েছে, এখনো গেড়ে বসেনি।
কারণ বোম্বে টোস্টের প্রস্তুতকারিণী আমার একমাত্র বৌদি’র মনমেজাজের পারদের সূচক কোন নিয়মের তোয়াক্কা করছে না
আজকাল। এই আলো
তো পরক্ষণেই অমাবস্যা। সাত মাস চলছে বৌদির। চুলোর ধারে গেলেই নাকি গা গুলায়। কাল রাতে ভাতের টেবিলে হঠাৎ নিজেই কাব্য করে বললো,
‘প্রাতরাশে বোম্বে টোস্ট দেবো তোমাদের’। ‘সকালে ভাজাভুজি?’ মা চোখ কুঁচকেছিল। দাদা আশ্বস্ত করলো,
‘ছুটির দিনে ‘অম্ল নাস্তি’, ভাজাভুজি কেন নিরেট লোহাও হজম হয়’। কিন্তু বাড়িতে
পাউরুটিই নেই। ‘তবে আর কী? স্বপ্নে খাও আমি ছুটির দিনে দোকানে যাচ্ছি না’, দাদা
এঁটো হাত ধুতে ধুতে বলেছিল। আমিই আগ বাড়িয়ে দায় নিয়েছিলাম। আর এখন তীরে এসে তরী ডুবছে! বোম্বে টোস্টকে
ঘিরে আবার হাঙ্গামা! এবার বাড়তি যোগ- এগারো দিনের অশৌচ! মানে নিরামিষ!
বোম্বে টোস্টের ওপর অলিখিত সেই নিষেধাজ্ঞা ওঠাতে প্রায় এক
বছর লেগেছে। বাবার খুব প্রিয় ছিল এই বস্তুটি। আমাদের দুই ভায়েরও। অফিস থেকে ফেরার পথে প্রতি বৃহস্পতিবারে
ডায়মন্ড থেকে কিনে আনতেন বাবা। মা কোনোমতেই এই টোস্ট ঠিকঠাক বানাতে পারতো না; হয় কড়া করে
ফেলতো নইলে ল্যাতপ্যাতে। সেবার কনে দেখতে গিয়ে বৌদির হাতের বোম্বে টোস্ট খেয়ে বাবা
মেয়ে না দেখেই পাকাকথা দিয়ে ফেলেছিল। এ নিয়ে বাবা মায়ের মন কষাকষি চরমে উঠেছিল।
যৌতুক ফৌতুক নয়, মায়ের একটাই দাবী ছিলো কনের রঙ কিছুতেই কালো
হওয়া চলবে না।
মেয়ে দেখতে যাবার দিন দুপুরে মায়ের হাতে গরম দুধ উথলে পড়লো।
অনেকখানি পুড়ে গিয়েছিল। দাদা বার্নল লেপে দিয়েছিল, তাও ফোস্কা পড়লো। মা বললো,
‘সুবোধ কাকাকে ফোন করে জানিয়ে দে আজ যাচ্ছি না আমরা’। বাবা হা হা করে উঠলো,
‘ওরা নিশ্চয় আয়োজন করে ফেলেছে। এটা ঠিক দেখায় না’। অতএব সন্ধ্যে বসার আগেই মা’কে ছাড়াই দাদা, বাবা সঙ্গে আমাদের বিল্ডিঙের
অনিমা মাসি আর মেসো মেয়ে দেখতে গিয়েছিলেন। আমি যাইনি। সুবোধ কাকা আর কাকিমা আগেই
চলে গিয়েছিলেন । সুবোধ কাকাই প্রস্তাবটা এনেছিলেন। বৌদি সম্পর্কে সুবোধ কাকার বোনের মেয়ে।
মেয়ের বাড়ি থেকে ফিরে বাবা, দাদা দুজনেই খুশি, ‘কী চমৎকার
বোম্বে টোস্ট বানিয়েছে মেয়ে!’ পরদিন অনিমা মাসিই মাকে বিশদ জানিয়েছিলেন। বৌদি
মোটেও ফটোর মত নয়। বেশ কালো। তবে চেহারার ছাপ ভালো। এক ঢাল চুল। বাবা তখনও উচ্ছ্বসিত, ‘শান্ত,
ভদ্র’। মা চেঁচাচ্ছিল, ‘তুমি কীভাবে
জানো? একবার দেখেই বুঝে
গেলে?’ এরপরেই গুমর ফাঁস হলো, বাবা মেয়ে দেখার আগেই মেয়ের হাতের বোম্বে টোস্ট
খেয়েই সাতপাঁচ না ভেবেই পাকা কথা দিয়ে দিয়েছেন। মা আঁতকে উঠেছিল। হাতে আরও দু দু’টো সম্বন্ধ আছে, তাদের না
দেখেই এমন অর্বাচীনের মত কাজ কেউ করে! অশান্তি যখন চরমে তখনই দাদা জানালো, ‘এই
মেয়ে ছাড়া আমি বিয়ে করবো না’।
মায়ের বদ্ধ ধারণা দাদার এ সিদ্ধান্তে বাবার হাত ছিলো।
আশীর্বাদের দিন আমরা
সবাই দেখলাম বৌদি আসলেই রবি ঠাকুরের কৃষ্ণকলির জ্যান্ত র্যাপ্লিকা। ওবাড়ির জ্যাঠিমা তো মাকে জিজ্ঞেস করেই বসলেন, ‘অমির কি
পছন্দের বিয়ে?’ আশীর্বাদ অনুষ্ঠানের পুরোটা সময় মা গুম ধরে বসে ছিল। বাড়ি ফিরেই ইচ্ছেমত ঝেড়েছিল
বাবাকে। সুবোধ কাকাকেও ফোন দিয়ে এক হাত নিয়েছিল। সুবোধ কাকারা দাদার বিয়ে কিংবা বৌভাতে
আসেননি। আর বাবা বৌদির কালো রঙের দায়ের প্রায়শ্চিত্তের কারণে কিনা জানি না বেঁচে থাকাকালীন সময়ে আর কখনো বোম্বে টোস্টের নাম মুখেও আনেননি।
দাদার বিয়ের মাস তিনেকের মাথায়
বাবা চলে গেলেন। ডায়াবেটিস ছিল। হাইপোগ্লাইসিমিয়া। জ্ঞান ফেরেনি আর। সেদিন বাবার মরদেহে চন্দনকাঠের আঁচ লাগার আগেই আমাদের
স্বজনেরা আড়েঠাড়ে নতুন বৌয়ের সঙ্গে
ভাগ্যলক্ষ্মীর চপলতার সুলুক সন্ধানে ব্যস্ত হয়ে গিয়েছিল। ভাগ্যিস দাদার এই লম্বা
বেতনের চাকরিটা হলো নইলে বৌদিকে নিয়ে কানাঘুষা সহজে থামতো না। বিশাল মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানির এক্সিকিউটিভ
এখন দাদা। আগের চাকরির চেয়ে ঢের বেশি বেতন।
সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপারটি ঘটলো দাদা বেতন পাওয়ার দিনে।
মিষ্টি কিংবা চাইনিজ নয়, দাদা সেদিন পাউরুটির প্যাকেট হাতে বাড়ি ফিরেছিল।
এরপর মায়ের সামনেই বৌদিকে ডেকে বললো, ‘মিনু সেদিন তোমাদের বাড়িতে যে বোম্বে টোস্ট
খাইয়েছিলে ঐরকম করে বানাও তো’। সামনেই আমার নির্বাচনী পরীক্ষা। ডাইনিং টেবিলে বসে অংক
কষছিলাম। সন্ধ্যা নামতেই মশাদের উৎপাত শুরু হয়ে যায়। মা মশা তাড়াতে ধুনো দিচ্ছিলো।
দাদা ‘বোম্বে টোস্ট’ শব্দটা এমন কেটে কেটে বললো যে আমি আর মা
দু’জনই চমকে তাকালাম। বৌদির মুখের রঙ আরও গাঢ় হলো। বোম্বে টোস্টের
সঙ্গে ওর ভাগ্যের যোগটি আমরা কেউ মুখে না বললেও ও জানে। মা আমার পাশে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়েছিল। হাতে ধরা
ধুনুচি থেকে পাক খেয়ে ধোঁয়া উঠছিল খুব। চোখ জ্বলছিল। একটু পরেই আমাদের অবাক করে মা
বললো, ‘যাও বৌমা বানিয়ে আনো। আমি তো আর খেতে পারবো না, দেখি শমিক কী রায় দেয়?’ শমিক মানে আমি। সেদিন সন্ধ্যায় বৌদির
করা সেই বোম্বে টোস্ট খেয়ে আমিও বাবার মতই উচ্ছ্বসিত হয়েছিলাম। আসলেই অমৃত সমান।
খাবারের স্বাদে এতই বিভোর ছিলাম যে মা কখন সরে গেছেন বুঝিনি। একটু পরে বৌদিই
জানালো বাবার ছবির সামনে দাঁড়িয়ে মা কাঁদছে সমানে। আমাদের কী করা উচিত বুঝতে
পারছিলাম না। আধঘন্টা পরে মা নিজেই এলো। বউদিকে বললো, ‘এখন থেকে প্রতি বৃহস্পতিবার
ওদের জন্যে বোম্বে টোস্ট বানিও’। সেই থেকে বোম্বে টোস্ট প্রায় প্রতি বৃহস্পতিবার বিকেলের
জলখাবারের নিত্য অনুষঙ্গ হয়ে গিয়েছিল।
কিন্তু এখন এটা সামলাবো কীভাবে? বাবা চলে যাওয়ার পরে ওবাড়ির
সঙ্গে খাই-খাতিরও ঢিলে হয়ে গেছে। টাকাওয়ালা মানুষেরা নিজেদের বৈভব দেখাতে সাধারণত
কমজোরী আত্মীয়দেরই বেছে নেয়। আর নিজেদের ব্যবহৃত হবার সম্ভাবনা দেখা দিলেই নিরাপদ
দূরত্বে সটকে পড়ে। বাবার হঠাৎ
চলে যাওয়ায় আমরা বেশ বেকায়দায় পড়ে গিয়েছিলাম। দাদার তখনকার চাকরির টাকায় সংসারের
খরচ সামলাতে কষ্ট হচ্ছিলো। এক দুপুরে ওঁর স্ত্রী মানে জ্যাঠিমা এসেছিলেন ফল-মিষ্টি
নিয়ে। মা কেঁদে কেঁদে এইসব দুর্দশার কাসুন্দি শোনালো। উনি কী বুঝলেন কে জানে, সেই যে চলে গেলেন
আর কখনই আমাদের বাড়িমুখো হননি। আমি অবশ্য পাঁচ বছর আগের সেই ঘটনার পর আর ওদের বাড়ির চৌহদ্দিতে পা
রাখিনি। সম্পর্ক নামকাওয়াস্তে হলে কি? রক্তের দায়। অশৌচ এড়ানো যাবে না। মা মানিয়ে
ছাড়বে। আমার মুখ ভর্তি করে থুথ জমে। মাথার ভেতর জিভ নড়ে, ‘শালার বুইড়া
মরবার জন্য আর দিন পেলো না!’। মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিই, এই সংবাদ এখুনি বাড়ি যাচ্ছে না।
ছেলেটার হাত থেকে খুচরোগুলো প্রায় ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত বাড়ির
পথ ধরি। দুই
তিন সিঁড়ি টপকে উঠি। দরোজাটা খোলাই। বৌদি রান্নাঘরে। বুক ঢিপঢিপ করতে থাকে আমার। রান্নাঘরের জানালা দিয়ে ওঁদের
গলির কিছুটা দেখা যায়। গাড়ির বহর দেখতে পেলে বৌদিরও কৌতূহল হবেই। পাউরুটিটা বৌদির হাতে দিয়েই জানালা আড়াল করে দাঁড়াই আমি,
‘তাড়াতাড়ি করো খিদেয় পেট চোঁ চোঁ করছে’।
শরীর ভারী হওয়ার পর থেকেই অদ্ভুতভাবে হাঁসের মত পা ছড়িয়ে
হাঁটে বৌদি। ঠোঁটের কোণে, চোখের কোণে, সারাক্ষণ বিরক্তি এঁটে থাকে। মনে
মনে কপালে হাত ঠেকাই আমি, হে ভগবান দয়া কর! বৌদি ধীরেসুস্থে ফ্রিজ থেকে ডিম বার
করে। বিরক্ত চোখে দেখে আমাকে। ‘পাঁচমিনিট দাও। এখানে ভিড় করে দাঁড়ালে তো তাড়াতাড়ি
হবে না’। অন্যদিন হলে আমিও চোখা কিছু একটা বলতাম, কিন্তু আজ যেতে দিই। মুখে হাসি রেখে বলি, ‘পেটে ছুঁচো দৌড়াচ্ছে যে’। বৌদি পাউরুটির
ধারগুলো ছুরি দিয়ে জ্যামিতি মেনে কাটতে থাকে। মুখ না তুলেই বলে, ‘টেবিলে গিয়ে বসো,
আনছি আমি’। আমি অনিচ্ছাসত্ত্বেও সরে আসি।
ডাইনিঙে বসতেই সেই পুরনো রাগটা মাথার ভেতরে সলতে পাকায়। আমি তখন ক্লাস
সেভেনে পড়ি। সুবীরদা’র বিয়েতে আমরা সবাই বস্ত্রালঙ্কারে গিয়েছিলাম। সুবীর দা’ ওঁর
ছোটছেলে। টেনে টুনে বি-এ পাশ, কিন্তু ঝাঁ চকচকে টয়োটা প্রিমিও চালায়। সুবীরদা’র বিয়েতে খুব ঘটা হয়েছিল। আমাদের সবাইকে জামাকাপড় দিয়েছিলেন ওঁরা। বাড়ির শেষ
বিয়ে বলে কথা! বাবা গদগদ হয়ে বলেছিলেন, ‘শত হলেও রক্তের টান’। আমি জীবনে এত নতুন
কাপড় একসঙ্গে পাইনি! কী সুন্দর সব পাঞ্জাবি-কুর্তা! এক একদিনের উৎসবে এক এক রঙের
পোশাক। বস্ত্রালঙ্কারের দিন আগুন রঙের নকশা তোলা পাঞ্জাবি আর সাদা চোস্ত পরেছিলাম
সব ছেলেরা। মেয়েরা একই রঙের শাড়িতে সাদা নকশার পাড়। তত্ত্বগুলো কী সুন্দর সাজানো হয়েছিল! গাড়িতে
আমি সুবীরদা’র মামাতো ভাই অর্ঘ্যের পাশে বসেছিলাম। ও ফড়ফড় করে ইংরেজি বলে। নামী
স্কুলে পড়ে। শুরুতে আমি একটু আড়ষ্ঠ থাকলেও মিনিট দশেকের মধ্যে বন্ধু হয়ে গিয়েছিলাম
আমরা। পাশাপাশি বসেছিলাম খেতে। মা, বাবা, দাদা-- ওরা ওদের মত
অন্য কোথাও আর আমি অর্ঘ্যের সঙ্গে। কনের বাড়ির একজন সবাইকে পোলাউ রোস্ট বেড়ে দিচ্ছিলেন। আমার
প্লেটেও এই দিলো বলে! হঠাৎ কোথা থেকে উনি
উদয় হলেন। বিশিষ্ট কেউ জায়গা পায়নি তাকে বসাতে আমাকে তুলে দিলেন। বললেন, ‘পরের
ব্যাচে খাবি’। অপমানে আমার চোখ ফেটে জল আসছিল। কী ভাবলো অর্ঘ্য? আমার আর খাওয়া হয়নি সেদিন। পরের দিন পেট
ব্যথার ছুতোয় বিয়েতে যাইনি। পাশের বাড়ির মণি মাসির কাছে আমাকে রেখে মা, বাবা, দাদা বিয়েতে গিয়েছিল। মা’কে সেদিন কী যে সুন্দর লাগছিল! ও বাড়িতে কিংবা ওদের কোন অনুষ্ঠানে আমি আর
কখনোই যাইনি।
পুজোঘরে ঘন্টি বাজিয়ে মা ভগবানের কান ঝালাপালা করছেন সেই
কবে থেকে! আজ ছুটির দিন বলেই বাঁচোয়া। বুয়া আসবে বেলা করে। বুয়াকে ওদের বাড়ি পার
হয়েই আসতে হবে এবং অন্য কেউ জানুক না জানুক বুয়া নির্ঘাত জানবে। কথাটা মনে হতেই ফের বুক ঢিপঢিপ করতে থাকে আমার।
আনমনা ছিলাম হয়তো, বৌদির ডাক শুনতে পাইনি। টোস্ট ভর্তি
প্লেটটা আমার মুখের সামনে বেশ জোরে রাখে বৌদি, গলায় ঝাঁঝ তুলে বলে, ‘সেই কবে থেকে
ডাকছি’! আমি হুমড়ি খেয়ে পড়ি খাবারের ওপর। বৌদি টিপ্পনী কাটে, ‘আস্তে খাও গলায়
গেঁথে মরবে তো!’ আমি গা করি না। শেষ টুকরোটা মুখের ভেতর মিলিয়ে যেতেই
কলবেলটা হাওয়া কেটে বেজে ওঠে। আমি হাঁফ ছাড়ি। মাকে দেখি প্রসাদের থালা হাতেই
যাচ্ছে দরোজা খুলতে। বুয়াই।
হঠাৎ আমার পেট গুলিয়ে ওঠে। মনে হয় গলা ঠেলে সব বেরিয়ে আসবে এখুনি। চেয়ার ঠেলে প্রাণপণে বাথরুমের দিকে ছুটি। বেসিনের সামনে
দাঁড়াতেই সত্যিই সব বেরিয়ে আসে পেট ঘেঁটে। কেন যেন বাবার জন্যে বুক ভেঙে কান্না আসে
আমার! দরোজার ওপার থেকে আবছা শুনি মা, বৌদি আমার নাম ধরে ডাকছে উৎকণ্ঠায়। সারা শরীর
মুচড়ে আমি আবার ওয়াক তুলি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন