আকিরা
কুরোশাওয়া ও তাঁর অসাধারণ সৃষ্টি ‘রশোমন’
পিঁয়াজের খোসার মতো পরতে
পরতে আবিষ্ট হয়ে থাকা নিষ্কম্প সত্যকে উন্মুক্ত করার গল্প আকিরা কুরোশাওয়ার অনন্য
সিনামা ‘রশোমন’। রশোমন এমন এক আশ্চর্য ছবি
যা আজও আমাকে সত্যের প্রকৃতি সম্পর্কে ভাবতে বাধ্য করে। আমার বোধকে, আমার গভীর চেতনাকে এ ছবিটি
এমনভাবে নাড়িয়ে দিয়েছিলো যে আমি এখনো সত্য ও মিথ্যের মধ্যেকার ছলনা ও বিভেদ বুঝতে পারি না। আপাতদৃষ্টিতে রসোমনকে
খুব সাধারণ একটি গল্প মনে হলেও এর গভীরে রয়েছে মানব জীবনের সুন্দর ও সত্যের
শুদ্ধতম অনুসন্ধানের প্রচেষ্টা। জীবন যে শুধুই সরলতার প্রতিচ্ছবি নয় বরং আপাত
দৃশ্যমান সত্যের পিছনেও রয়েছে বস্তুগত সত্যের আপেক্ষিকতার অনুসন্ধান, আকিরা কুরোশাওয়া তাঁর কিংবদন্তীতুল্য চলচ্চিত্র রশোমন-এর মাধ্যমে আমাদের সেই
কথাই বুঝিয়ে দিয়েছেন। জাপানের এক নিভৃত বনের মধ্যে সংগঠিত একটি যৌন
অপরাধ ও খুন সম্বন্ধে চারজন ব্যক্তির পরস্পরবিরোধী কিন্তু এককভাবে বিশ্বাসযোগ্য
চারটি বিবৃতি নিয়ে তৈরি হয়েছে এই সিনেমা । কোন এক বিষণ্ণ দিনে
জাপানের প্রাচীন নগরী কিয়োটোতে অঝোর ধারায়
বৃষ্টি ঝরে চলেছে। একটি পুরনো মন্দিরের ভাঙা দরজা বা রশোমন দরজার কাছে একজন কাঠুরিয়া, একজন পুরোহিত এবং একজন
সাধারণ ব্যক্তি এসে বৃষ্টি থেকে বাঁচার আশায় আশ্রয় নেয়। বহুক্ষণ একসাথে সময় কাটাতে
হলে যা করে সবাই, এই তিন ব্যক্তিও তাই করে। সময় কাটাতে তারা নিজেদের মধ্যে নানা
বিষয়ে গালগল্প শুরু করে দেয়। এভাবেই একজন তার নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলতে
থাকে অন্য দুজনের কাছে। সে বলে যে, সে নিজেই একটি খুন ও ধর্ষণের বিচারের সাক্ষী
হয়েছিলো একসময়। জাপানের গহীন বনের মধ্যে এক দুর্ধর্ষ দস্যু তাজোমারুর কাছে একটি
নারী ধর্ষিত হয় এবং সেইসাথে তার সামুরাই স্বামীটিও খুন হয় । বিচার চলাকালীন সময়ে
অপরাধ সম্বন্ধে চারজন ব্যক্তি পরস্পরবিরোধী কিন্তু এককভাবে বিশ্বাসযোগ্য চারটি
বিবৃতি দেয়। ফলে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটন নিয়ে তীব্র দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। ঘটনার
সাথে জড়িত প্রত্যেক ব্যক্তির বর্ণনাকে সত্য বলে মনে হতে থাকে, অথচ তাদের প্রত্যেকের
ভাষ্যই আলাদা। ছবির প্রথম দৃশ্যই শুরু হয় কাঠুরিয়া কিকুরির প্রশ্নবোধক ভাষ্য
অনুযায়ী,
সে
যেন নিজেকেই প্রশ্ন করে এমনভাবে বলে, “আমি আসলে কিছুতেই বুঝতে পারছি না যে কেন তিনজন আসামীই
নিজেদেরকে খুনি হিসেবে প্রমাণ করতে চাইছে?” কাঠুরিয়া জানায় যে সে
তিনদিন আগে বাগানের ভিতর কাঠ খুঁজতে গিয়েছিলো এবং সেখানে সে একজন সামুরাই-এর মৃতদেহ দেখতে পায়। ফলে
সে আতঙ্কিত অবস্থায় কর্তৃপক্ষকে খবর দেয়। এদিকে পুরোহিত বলেন যে তিনি সামুরাইকে
তার স্ত্রীর সাথে খুন সংগঠিত হওয়ার দিনেই ঘুরে বেড়াতে দেখেছিলেন। দস্যু তাজোমারুর
ভাষ্য অনুযায়ী সে সামুরাইকে প্রাচীন একটি তালোয়ারের লোভ দেখিয়ে পর্বতের একপাশে
নিয়ে গিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রাখে এবং তার স্ত্রীকে সেখানে নিয়ে এসে ধর্ষণ করে।
এরপর তাজোমারু ফেরার পথে সামুরাইয়ের স্ত্রী তাকে অনুরোধ করে যেন সে তার স্বামীর
সাথে ডুয়েল লড়াই-এ লিপ্ত হয়, যাতে
সে বিজয়ীর সাথে চলে যেতে পারে। দস্যু তাজোমারু বলে যে সে সামুরাইকে হত্যা করার পর
দেখতে পায় যে সামুরাই-এর স্ত্রী সেখান থেকে পালিয়ে গেছে। কিন্তু সে সামুরাইয়ের স্ত্রীর
ব্যবহৃত দামি ছুরিটি আর সেখানে খুঁজে পায় না। এদিকে সামুরাই-এর স্ত্রী অন্য একটি
কাহিনী বলে। তার ভাষ্য অনুযায়ী দস্যু তাজোমারু তাকে ধর্ষণ করে পালিয়ে
যায়। এরপর সে স্বামীর কাছে গিয়ে ক্ষমা ভিক্ষা করে তাকে গ্রহণ করতে বলে, কিন্তু সামুরাই তার দিকে এমনই শীতল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে যে সে তার
স্বামীর হাতে ছুরি তুলে দেয় তাকে হত্যা করার জন্য। এরপর সে একসময় বেহুঁশ হয়ে পড়ে
এবং জেগে দেখে যে তার স্বামী সেই ছুরি দ্বারা খুন হয়েছে। সেও নিজেকে খুন করতে চায়,
কিন্তু পারে না। এদিকে সামুরাইয়ের
আত্মা আরেকজনের মাধ্যমে সাক্ষী দেয় যে দস্যু তাজোমারু তার স্ত্রীকে সাথে করে নিয়ে
যেতে চায়, কিন্তু তার স্ত্রী দস্যুকে পরামর্শ দেয় যাতে তাকে যাওয়ার আগে সে তার
স্বামীকে খুন করে। তখন দস্যু রেগে যায় এবং সামুরাইকে জিজ্ঞেস করে যে সে কি তার স্ত্রীকে
ছেড়ে দেবে নাকি মেরে ফেলবে! এরই মাঝে নারীটি পালিয়ে যায়। ফলে দস্যু যখন সামুরাইকে ছেড়ে দেয় তখন সে তার স্ত্রীর ছুরি দিয়ে নিজেই
আত্মহত্যা করে। কাঠুরিয়া কিকুরির ভাষ্য অনুযায়ী সে ধর্ষণ ও খুন নিজ চোখে প্রত্যক্ষ
করেছে। যদিও বা সে এসব ঘটনার সাথে নিজেকে জড়াতে চায়নি। সে দেখেছে যে দস্যু
তাজোমারু সামুরাইয়ের স্ত্রীকে ধর্ষণের পর তাকে বিয়ে করার জন্য নানাভাবে অনুনয় বিনয়
করতে থাকে, কিন্তু মহিলাটি তার স্বামীকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য তাকে বাধ্য
করে। দুর্ভাগ্যবশত সামুরাই তার
স্ত্রীকে পুনরায় গ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে সে দুজন পুরুষকে তিরস্কার করতে থাকে এবং
বাধ্য করে ডুয়েল লড়াইয়ে লিপ্ত হতে। এতে সামুরাই দস্যুর হাতে খুন হয় এবং তার স্ত্রী
সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
এভাবেই প্রত্যেকের বক্তব্য
ও দৃষ্টিভঙ্গি থেকে গল্পটি বর্ণনা করা হয় যদিওবা দর্শক শেষ পর্যন্ত বুঝতে পারে না যে আসলে কার বক্তব্য
সঠিক। গল্পের শেষ পর্যায়ে এসে একটি শিশুর কান্নার শব্দে ঘটনাটি অন্যদিকে মোড় নেয়।
এ পর্যায়ে এসে আমরা দেখি, তিনজনের মধ্যকার একজন সেই সাধারণ ব্যক্তিটি, যে কাঠুরিয়া ও পুরোহিতের
সাথে এতক্ষণ গল্পে মক্ত ছিল, সে পরিত্যাক্ত বাচ্চাটির কাছ থেকে কিমোনো নিয়ে নেয় বিক্রি করবে বলে। এ
ঘটনাতে কাঠুরিয়া বাধা দিলে সে বলতে থাকে যে দামী ছুটিটি আসলে কাঠুরিয়াই চুরি
করেছিলো, তাই সে বিচারের সাক্ষী হতে চায়নি। ফলে সে
কাঠুরিয়াকে চোর বলে সাব্যস্ত করে এবং কিমোনো ফিরত দিতে অস্বীকার জানায়। ব্যক্তিটি
রশোমন ত্যাগ করার সময় জানিয়ে যায় যে প্রত্যেকেই আসলে শুধু নিজের স্বার্থের দ্বারাই
পরিচালিত হয়। এভাবেই মানবতা ও প্রকৃত সত্যর স্বরূপ সন্ধানের গল্প রশোমন
দর্শককে এক গভীর মনস্তাত্ত্বিক ভাবনার মধ্যে ফেলে দেয়। আকিরা কুরোশাওয়া তাঁর আত্মজীবনীতে তাই বলেছেন, “মানুষ কখনো তার নিজের
সম্পর্কে নিজের সাথে সৎ হতে পারে না । নিজের সম্পর্কে বলতে
গিয়ে তার পক্ষে শোভাহীন, অলংকার বর্জিত কোন কথা বলা সম্ভব হয় না”। ১৯৫০ সালে
সৃষ্ট আকিরা কুরোশাওয়ার রশোমন এক অসাধারণ সৃষ্টি যার মাধ্যমে
পাশ্চাত্যের দর্শক জাপানী ছবির সাথে প্রথমবারের মতো এতো ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হতে পারলো।
ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে ১৯৫১ সালে এ ছবি শ্রেষ্ঠ পুরষ্কার ‘গোল্ডেন লায়ন’ জিতে নেয়, যার মাধ্যমে শুধু
কুরোশাওয়াই নন,
জাপানি
চলচ্চিত্র সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আর এরই মাধ্যমে শুরু হয় কুরোশাওয়ার মহৎ
জীবনের জয়যাত্রা। একদিকে ফ্ল্যাশব্যাকের যথার্থ ব্যবহার, অন্যদিকে ক্যামেরা ও
লাইটিংয়ের অনবদ্য ব্যবহার, গল্পের দারুণ বিন্যাস, অসাধারণ দৃশ্যরস, পরিবেশের অমোঘতা ও অভিনয়
শিল্পীদের বলিষ্ঠ অভিনয় এ ছবিটিকে অবিস্মরণীয় করে তুলেছে।
গহীন অরণ্যে সূর্যের আলোর সঙ্গে গাছের ছায়ার অদ্ভুত ব্যবহার দেখিয়ে এ ছবিতে
আলোছায়ার নৈপুণ্য দেখিয়েছেন কুরোশাওয়া। তিনি চাইতেন প্রাকৃতিক আলোতে শ্যুট করতে, কিন্তু বনের ভিতর
গাছপালার যে আলো আসতো তা চিত্রায়নের জন্য
ছিল দুর্বল, তাই তিনি এ সমস্যা সমাধানের জন্য এ ছবিতে বহু আয়নার ব্যবহার করেছিলেন। বিভিন্ন
দিক থেকে আয়নার আলো প্রতিফলিত হয়ে রিফ্লেক্টিং বোর্ডে ফেলা হতো। ফলে সূর্যের আলোতে
শ্যুটিং করা হলেও সে আলোকে এতোটা তীব্র মনে হয়নি।
শুধুমাত্র ছায়ার ক্রমাগত জোরালো হয়ে ওঠার শক্তি ব্যবহার করে, অসাধারণ ফ্রেমিংয়ে একটি
শক্তিমান স্টেজ পিকচার সৃষ্টির গভীরতর বোঝাপড়া হয়ে গিয়েছিলো তাঁর। এই ছবির মাধ্যমেই কুরোশাওয়ার নির্জল ভিজুয়াল স্কিল
অস্পষ্টভাবে হলেও ফুটে উঠেছিলো। কুরোশাওয়া তাঁর এ ছবিতে শব্দ ও সংগীত
প্রয়োগের ক্ষেত্রে দুটি বিষয়কে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেন। একটি হলো, সিকোয়েন্সের দৃশ্যকে
অর্থবহ করে তোলা ও তার গভীরতা ও গুরুত্বকে প্রয়োজনে অনেকগুন বাড়িয়ে তোলা। অপরটি
হলো,
দৃশ্যের
বিকল্পরূপ গড়ে তোলা এবং কোন কোন জায়গায় তার এফেক্ট বদলানো। নির্বাক ছবির ভীষণ ভক্ত
ছিলেন কুরোশাওয়া। তিনি মনে করতেন শব্দ চলচ্চিত্রের ভাষাকে আরও জটিল করে তোলে।
কুরোশাওয়া এ ছবিতে একাধিক ক্যামেরা ব্যবহার করেছিলেন। ছবিতে শ্যুটিং করার সময় তিনি সব অভিনেতাদের নিয়ে একসাথে থাকতেন যাতে তিনি
যখন খুশী অভিনয়ের ব্যপারে নানা নির্দেশনা দিতে পারেন। সেট তৈরির কাজের সময় সবাইকে
নিয়ে তিনি মারটিন এবং ওসা জনসনের একটি আফ্রিকান চলচ্চিত্র দেখতেন। ছবিটিতে সিংহের
গর্জন ও বন্যতা ছিল। ছবিটি তিনি প্রধান অভিনেতা তোশিরো মিফুনকে দেখতে বলতেন এবং
দস্যু চরিত্রে সিংহের মতো প্রবল হতে পরামর্শ দিতেন। সাদা-কালো ছবিতে স্বচ্ছ পানির
বৃষ্টি স্পষ্ট দেখা যায় না বলে বৃষ্টির পানির সাথে
এখানে কালো রঙ মেশানো হয়েছিলো। চলচ্চিত্রের প্রায় সব ক্রিটিকের বিবেচনাতেই
কুরোশাওয়ার রশোমন পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সিনেমা হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি
এমনই এক সিনেমা যা আমাদের নতুন জীবনবোধে ঋদ্ধ করে। এটি বস্তুসত্য বনাম
শিল্পসত্য তথা সত্যের আপেক্ষিকতা বিষয়ে প্রাজ্ঞ শিল্পীর এক দার্শনিক ভাষ্য। রশোমন
একদিকে কুরোশাওয়ার চিত্রশৈলীটিকে সুনিশ্চিতভাবে প্রতিষ্ঠিত করে, অন্যদিকে জাপানি চলচ্চিত্র
সম্বন্ধে সারা বিশ্বের আগ্রহ জাগ্রত করে দেয়। অনেকের মতে কুরোশাওয়ার জগতের ভারকেন্দ্রটি
ন্যস্ত এই ছবিটিতেই। আকিরা কুরোশাওয়া এমনই এক মহান চলচ্চিত্র স্রষ্টা যিনি
নির্দিষ্ট ভৌগোলিক সীমার তাবৎ স্বরূপকে বিশ্বজনীন করেছেন। সমগ্র বিশ্বকে তিনি
প্রতিফলিত করেছেন তাঁর কল্পনায়। কাবুকী নাটক, প্রাচীন জাপানি চিত্রকলা, লৌকিক উপকথা, দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, নন্দনতত্ত্ব কোনটাই তাঁর ছবিতে অনুপস্থিত নয়।
আত্মায় বিশিষ্ট জাপানি হয়েও দেশায়তনের বাইরে তাঁর বিশ্বচেতনাকে শিল্পের
দরবারে পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। তাঁর চলচ্চিত্রের আন্তর্জাতিকতার একটা বড়ো কারণ
মানবিকতায় তাঁর বিশ্বাস। তাঁর ছবিতে মানুষের দুর্বলতার মধ্যেই মানবিক
গুণের সন্ধান মেলে। তিনি কখনো মানবিকতায় আস্থা হারাননি। এবং তাঁর চলচ্চিত্রের বিশ্বজনীন
আবেদন এইখানেই। তাঁর বহু ছবিই মানুষের প্রত্যয় অর্জনের
শিল্পইতিহাস।
কুরোশাওয়াকে পৃথিবীর
ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফিল্মমেকারদের অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবু
এতো কিছুর পরও তিনি ৬১ বছর বয়সে একবার আত্মহত্মার চেষ্টা করেছিলেন। যে সংঘাতময় সময়ে
কুরোশাওয়া বেঁচে ছিলেন, সিনেমায় সেই ঐতিহাসিক অতীত
ও বর্তমানকে তিনি হাজির করেছেন অনবদ্যভাবে। আর সেটা করতে গিয়েই তাঁকে নিজের পাশাপাশি জাপানি সমাজের প্রতিও সজাগ দৃষ্টি রাখতে হয়েছে।
ফিল্মমেকার হিসেবে নিজেকে বিকশিত করার পথে কুরোশাওয়া কখনোই স্রেফ বিনোদন দেওয়ার
জন্য ক্যামেরায় চোখ রাখেননি। বরং বর্তমানকে সঠিকভাবে বোঝার জন্য ইতিহাসকে প্রশ্নের
সম্মুখীন করে কাহিনীর জাল বুনেছেন। কোন সুদীর্ঘ ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটকে একটি
সহজবোধ্য কাহিনীর মধ্যে আবদ্ধ করা ছিল তাঁর সবচেয়ে বোধগম্য
সম্পত্তির একটি। আর এটাই তাঁর বেশীরভাগ কাজকে করে তুলেছে উপভোগ্য। তাঁর সি্নেমার ন্যারেটিভ স্ট্রাকচার
ইতিহাসের একটি বিস্তৃত উপস্থাপনাকে উজ্জ্বলভাবে হাজির করে, ফলে এইসব শক্তিধর কাহিনী
দর্শকদের সমবেদনা অর্জন করতে পারে।
কুরোশাওয়ার ফিল্ম ক্যারিয়ার ছিল প্রায় ৫০ বছর ধরে। তিনি নির্মাণ করেছেন ৩০টি ফিল্ম
আর লিখেছেন ডজন ডজন স্ক্রিপ্ট। তিনি কাজের স্বীকৃতি হিসেবে জিতেছেনও বহু এওয়ার্ড।
১৯৯০ সালে তিনি জিতে নেন শ্রেষ্ঠ সম্মানজনক পুরস্কার ‘অস্কার’। সিনেমা জগতের এই কৃতিপুরুষ মহাকবি আকিরা কুরোশাওয়া ১৯৯৮ সালের ৬
সেপ্টেম্বর সেতাগায়া, টোকিও, জাপানে মৃত্যুবরণ করেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন