কেয়ার অফ্ ছেলেবেলা
গাট্টাগোট্টা একটা ছেলেবেলা শুরু হয়েছিল আগস্টের
কোনো এক দেরী করে আসা ক্লাসরুমে। একটা গোটা ঘর ভর্তি তুই তোকারির মাঝখানে, হাফ
সিরিয়াস হয়ে বসে থাকা
একটা বছর সতেরোর মেয়ের স্কুলব্যাগে ভুল করে চলে গেছিল স্বপ্ন নামের কয়েকটা
রাংতা। মেয়েটা বোঝেনি সেদিন।
ফার্স্ট বেঞ্চের যে কয়েকটা চকচকে চোখ তখন গিলে খেত ডায়ড-এর ফর্মুলা, তারা এখন
কোথায় গেল? ঠিক তেমন করেই কোথায় গেল জীবনে একটাই বার মাত্র ভালোবাসায় বিশ্বাসী বছর
আঠেরো? কোথায় গেল ক্রেয়ন হারিয়ে গেছে বলে পুরো সময়টাকেই ফ্যাকাসে দেখতে পাওয়া
চারটে চোখ? তারা আছে, তারা সবাই আছে। যেমন করে আছে, অটো ছেড়ে শুধু মাত্র প্রেমিকের
হাত ধরবে বলে কিলোমিটারের হিসেবে রাস্তা মাপা মেয়েটা।
ওরা সবাই এখন গাট্টাগোট্টা ছেলেবেলাকে বডি শেমিং-এর ক্লাস
করায়। যাতে করে তাদের জৌলুস বাড়ে। তবু রক্ষে এই যে মাঝে মাঝে এরা এদের হাওয়া
খাওয়াতে নিয়ে যায়। এদের
ছেলেবেলাগুলো কখনও কখনও বাগবাজার ঘাটে লেবু-চা খায়, আবার কখনও খায় দমবন্ধ কেতাবী জায়গায় অ্যান্টি
কোয়েটিক ব্লু। এদের ছেলেবেলাগুলোর ইদানিং আবার ভাতের প্রতি ঝোঁক বাড়ছে। বাড়ন্ত
বয়স কি না! তাই ভাতের জোগান দিতে এদিক ওদিক দৌড়ে বেড়াচ্ছে ওরা। আর হাঁপাতে হাঁপাতে
অবশেষে থামছে, মাই কম্পিউটারের লোকাল ডিস্ক-এ।
থামছে, হাঁপাচ্ছে, আবার শুরু হচ্ছে দৌড়। ছেলেবেলাদের পেট ভরানোর দৌড়। এবার
আর কোনো লোকাল ডিস্ক ফিস্ক না, এক্কেবারে থামছে তিন পয়েন্ট ফাইভ ল্যাখ পার অ্যানামে।
যে মেয়েটার ব্যাগে একদিন ভুল করে চলে গেছিল স্বপ্ন নামের
কয়েকটা রাংতা, সেই মেয়েটাই শুধুমাত্র ভুল করছে। সেই মেয়েটাই ভুল করে
দেখে ফেলছে ময়দানের চন্দ্রোদয়। ভুল করছে আর বাকীদের মতোই চেষ্টা করছে ছেলেবেলা
বাঁচানোর।
আর ওরা সবাই ন’টা ছ’টা ফ্রেমের
আদলে বাঁধিয়ে রাখছে পুরনো টিফিনবক্স।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন