আহারের হাত
কলম ধরার আগে আহারের হাত
‘আসছি’ বলে ক্ষুধাকে বসিয়ে চলে যায়।
প্রকৃতির হৃদয় নিংড়ে অলৌকিক স্তনে
নিরন্নকে পুষ্টি দেবে বলে
সে কি মৌমাছির মতো উড়ে গেছে নন্দনকাননে?
পৃথিবী ঘুমোলে
আমিও সুড়ঙ্গ কেটে চলি, কেটে চলি
নিরন্ধ্র ধাতব আঁধার,
যদি এই দীর্ঘ টানেল অন্য এক আকাশ চেনায়।
প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কলম। সে বলেছে –
চুম্বনের ছলে জোঁক শুষে নেয় আত্মার নির্যাস।
তুমি ওই মরা পচা ডোবার আশ্রয় থেকে
উঠে এসো শব্দের পাখায়।
কবিকে তো এভাবেই নিজের ক্ষুধা ও দুঃখকে ঠেলে
উঠে আসতে হয়
কলমের পল্লবিত বোধিবৃক্ষের ছায়ায়।
কবি আর কতটুকু পারে
কবি কি একক শ্রমে গড়ে তোলে স্বপ্নের প্রাসাদ?
বাইরে দারোয়ান আর নেমপ্লেটে দাম্ভিক অক্ষর?
নাকি সে জীবনদায়ী ওষুধভাণ্ডার নিয়ে
দিনরাত খোলা রাখা বিনিদ্র দোকান!
মানুষের জ্বর শুষে নিতে
কবি কি ভিজিয়ে নেয় নিজের রুমাল,
ক্যাপসুলের খোলে স্বরচিত মন্ত্র ভরে দিয়ে
রুগীর শিয়রে সারারাত?
এর চেয়ে বেশি সে পারে না।
মশা মারতে গিয়ে দেখে বিষাক্ত ওষুধে
সে কেবল নিজেকেই বিপন্ন করেছে।
কবি আর কতটুকু পারে? সে শুধু চেয়েছে –
শব্দের যথার্থ নির্যাসে যেন
মানুষের হৃদয়ের অন্ধকার সরে।
আতঙ্ক
ভিতরে আসতে গিয়ে সৌন্দর্য এখন
পাপোশে পা রেখে দূরে দাঁড়িয়ে পড়েছে!
এতো অন্ধকার আর বিশৃঙ্খল কেন ঘরের ভিতর!
তোমার ভিতরও কি এরকম বিশ্রী এলোমেলো?
শব্দ সাজাও আর কেটে নোংরা করো?
সুন্দর এসে তবে বসবে কোথায়?
প্রণাম করতে এসে কেউ যাতে তলপেট চেপে
আত্মঘাতী বিস্ফোরণ না ঘটাতে পারে
তার জন্য এতো সতর্কতা। আমি প্রতিটি শব্দের
দেহ তল্লাশি করে সম্ভাব্য নাশকতা এড়াতে চেয়েছি।
দেবী, তুমি এসে বসবে বলে
সুগন্ধি ধূপকাঠি এনে গুছিয়ে রেখেছি । কিন্তু
জ্বালবো কী ভাবে? ভাবি, দেশলাই যদি
শান্ত ও নিরীহর ছদ্মবেশে এসে
সহসা ঘাতক হয়ে ওঠে!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন