রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

বর্ণশ্রী বক্সী



মনখারাপ 

কোন কোন সময় মনখারাপি বেলা
প্রিয়জনের হৃদয়ের কষ্ট আচ্ছন্ন করে
ব্যস্ততার সারাদিন পার হয়ে 
নিঃস্তব্ধ রাত্রি জাগিয়ে রাখে ঘুমহীন

এক একদিন ছিন্ন বীণার তারে সুর বাজে
মনের মাটিতে বৃষ্টি ঝরায়
কি এক অজানা কিংবা জানা দুঃখ 
মেঘাক্লান্ত প্রকৃতির মত একঘেয়ে লাগে!

পথ চলি ছড়ানো বকুল ফুলের ঘ্রাণ নিয়ে 
চেতনায় ডুবে যাওয়া নাবিকের মায়াবী 
দৃষ্টি প্রতিহত ঢেউয়ের সীমায়
নবীন ভাবনার পাখা মেলে দেওয়া 
নীল আকাশে


চেয়ার 

প্রতিদিন কর্মসূচি নির্ধারিত হয় কেন্দ্রবিন্দুতে
মিউজিক্যাল চেয়ারের খেলা চলে সর্বস্তরে
দৌড়ানো শেষ হলে ধপ করে বসে যাওয়া 
আর প্রতিবারেই ছিটকে যায় 
এক একটা নক্ষত্র কাল্পনিক আকাশ থেকে
উঁচু থেকে গড়িয়ে নামা পাথরের ঘর্ষণে
লেখা হয়  ইতিহাসের কাহিনি, 
সুখী মানুষের চোখের তারায় আঁকা বৈশাখী ভোর, 
হাওয়া বদলের লগ্নে কিছুটা মুঠো ভরা
ভালো লাগা থেকে যায় 
আকন্ঠ মহুয়া মদে টলমল পা খুঁজে নেয় 
চেয়ার আর গদির কোমল কোল
বদলের নেশা লেগে থাকে জাগতিক ঠোঁটে।


সত্য  বাস্তবতা 

কঠিন সময়ের বুকে পা রাখা
কোমলতা আজ দূর অস্তগামী 
অন্ধকার যুগ পার হয়ে আলো 
জ্বলেছিল,
তবু ও সুখের মায়া জড়িয়ে ধরতে 
গিয়ে থমকে দাঁড়ায়!

জাগতিক দুঃখ ছুঁয়ে যায় মন
আস্ত লোহার বিম
খুবলে আনে আত্মার টুকরো, 
রক্ত ঝরে তবু অদৃশ্য 
দৃষ্টি বিনিময় অদৃশ্য শোকেসের 
সাজানো বাক্সে সংরক্ষণের,
অদৃশ্য রেখারা আঁকে
বিমূর্ত পুরাণ!


নিশাচর 

কিছুটা সময় হাতে নিয়ে 
বইয়েদের কাছে বসা-
ঘন সুনিবদ্ধ ভাবনাকে ছড়িয়ে দেওয়া 
অক্ষরের পাতায় পাতায়, 
ভাবনার বুদবুদ ঘর গড়ে।

সমস্ত দিনের শেষে রাত্রি নামলে 
আমরাও ডানা মেলি
দীক্ষা গৃহীত হয় সাদা কাগজের পাতা
কলমের আঁচড়ে ভরিয়ে তোলার!

ব্যাকরণ মেনে কিংবা না মেনেই
সেজে ওঠে সাহিত্যের সংসার, 
নীলচে কোলাহল দূরে ঠেলে 
নিরালম্ব শান্তি খোঁজে মন।

কলমদানি ভরে ওঠে নানা রঙে 
আলতো টানে বিমূর্ত অবয়ব 
রিলের জীবন ঘুরে ফিরে আসে বারবার 
বাস্তবের কর্ষিত ভুবনে


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন