সাঁতার
রোজ সাঁতার দিতে দিতে ওপারের তীরের দিকে যাই
এই জলরাশি, এই ঢেউ কৌশল শেখায় রোজ
ভাসমান হয়ে থাকা এজীবন শুধুই স্মৃতির কাহিনি
কিছুটা যদিও ভুলে যাই, কিছুটা তবুও মনে রাখি
ওপারে কি সুখ আছে?
এপারের বিষণ্ণতা এসে আমাকে শুধায়
নির্বাক তবুও আমি বিস্ময় চিহ্নের মতো সচকিত হই
সাঁতার দিতে দিতে নির্ঘাত সাঁতারু
ডুব মারি, ভেসে উঠি, ক্লান্ত করে জলের উল্লাস
যাকে মনে রেখে রেখে ফুল ফোটাই
আমার বাঁচার বৃক্ষে আবার নতুন পাতা আসে
যাকে মনে রেখে রেখে আন্দোলিত শাখা-প্রশাখায়
এখনও বিলম্ব বসন্ত এসে হাসে
সে কি আমার স্মৃতির পথে আসে?
নিভৃত মুহূর্তগুলি যার স্পর্শে রঙিন
রঙিন চপ্পল তার এইখানে থেমে যায় এসে!
বরষার মেঘেরা সরে যায় একে একে
জল দিতে দিতে তাদের কলস শূন্য হয়
পাখিরা ডেকে ডেকে কত ডাক রেখে যায়
শূন্য ঘরের দরজা এখনও উন্মুখ জ্যোৎস্নায়
এখনও বাজেনি তার চুড়ি
অনন্ত বলয়ে এক সম্পর্ক বাঁধা আছে!
রাতের শেষ তারাটির মতো জেগে আছ
আমার ভ্রমণ শেষ হল—
নিপীড়িত পৃথিবীর পাদপীঠে
বড়ো একা মনে হল আজ
আরক্তিম যন্ত্রণায়
ঘিরে আছে রাতের সমাজ!
হাতের আঙুলগুলি গুনে গুনে দেখি
ঠিকঠাক আছে সব —
নখের চিহ্নে এখনো গোলাপি দাগ
বসন্তরশ্মির স্বরলিপি —
তুমি এসেছিলে নিশিপদ্ম বনে
হৃদয় পেয়েছে ধূম তাই জাগরণে।
আজ ভ্রমণ শেষ হল
ভোরের প্রলাপ নিয়ে
হেসে উঠুক সূর্য —
আমি ইতিহাসে ঢুকে যাওয়া যুগ....
মন শুধু পুড়তেই জানে
চোখের জলে চাঁদ ভাসিয়ে দিই
নিজেকে বসাই সহানুভূতির ঘরে
অরণ্যের পর অরণ্য জুড়ে
কত বাঘ সিংহ যায়
বাঘ সিংহরা অবিশ্বাস —
অবিশ্বাসদের রাখব কোথায়?
নষ্ট হতে হতে কষ্টের বারান্দায়
আজও কে ডাকতে আসে?
কে?
সমস্ত জীবনভর নিরুত্তর স্তব্ধতায়
ডাক বেজে ওঠে...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন