সোমবার, ১ জুলাই, ২০১৯

সোনালি বেগম




গুহা


বিশ্বাস-অবিশ্বাসের গল্প নিয়ে উদ্বেলিত এই রূপকথা
আকাশ কখনও নীল কখনও কালো কখনও হয় লাল
হিসেব-নিকেশ ক্ষুদ্র অভিমান সরিয়ে গঙ্গাধার
অহংকার ঝড়ের দাপট জাপটে ধরে হাত।
মানুষ ক্ষুদ্র কখন হয়
আবর্তিত মশালের আগুন-দগ্ধ শরীর অনুসন্ধান।
আসা-যাওয়া পাহাড়ি পথ নদীর স্রোতের বাঁকে
স্বপ্নময় জীবন তো চব্বিশ ঘণ্টার গুণিতক।
মাটির গোপন সূত্রে রাতের নক্ষত্রপুঞ্জ
সাংঘাতিক সংসারী হওয়ার বাসনা নেই কোনো
পবিত্র সন্ধ্যাদীপ ধোয়া তুলসিপাতার ছোঁয়ায়।
ফালা ফালা শরীর রান্নার টেবিল ধারালো ছুরির তামাশা।
ব্যবহৃত হয়ে খুন হতে হল কত অসংখ্যবার!
ধ্যানস্থ হওয়ার চেষ্টায় রহস্যময় এ গুহা...



ছায়াপথ


মাতৃত্ব বাস্তবচিত্র পিতৃত্ব সমাজ জানতে চায়
পিতার খোঁজে ডি.এন.এ. টেস্ট জরুরি একটি দর্শন।
মানব-মানবী গড়ে তোলে ভালোবাসার উপাখ্যান
কার্ড টেডিবিয়ার ফুলের তোড়া সরগরম বাজারহাট
ভ্যালেন্টাইনস ডে উদযাপন জনপ্রিয় ক্রয়বিক্রয়।
তানপুরা হাতে প্রশান্তির ছায়াপথ –––
পণপ্রথার বিরুদ্ধে আওয়াজ একক শুভযাত্রা।
পরিবার স্বভাবগত শারীরিক-মানসিক নির্যাতন
দীর্ঘ ক্লান্ত মেয়েবেলা গোলক-রণক্ষেত্র।
ফিরে এসে পিতার গৃহে উচ্চারিত কণ্ঠস্বর –––
‘বধূ হয়ে আর জীবন নয়, এ কাজ পরিত্যাজ্য।’
‘ছিঃ ছিঃ, এ মেয়ে বংশের কালি –––
                    ফিরে যা নির্লজ্জ।’
বীজের পরতে শক্ত খোলায় রহস্য দাসত্ব বাঁচা...



কর্মক্ষেত্র


এক কাপ চায়ের মতো ধর্ষণ কত সাবলীল
বিচার চাই... চিৎকার শুনে কাঁপে দর্শক-রাজনীতি
প্রমাণপত্র সরিয়ে প্রশ্নপত্র তৈরি
ধর্ষিতার জবানবন্দি বারবার প্রতিধ্বনি।
ভানওয়ারি দেবী প্লাকার্ড হাতে দলিত দৃপ্ত নারী।
শারীরিক মানসিক অত্যাচারে ধ্বস্ত নারীচিত্র
কর্মক্ষেত্র উদার আকাশ, নয় রণক্ষেত্র!
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী-শিক্ষক কখনও খবর হয়
বন্যতার ইতিহাস ক্ষমতার অপব্যবহার প্রতিনিয়ত।
সমগ্র আইনকানুন ছেঁচে প্রশ্নচিহ্ন ভেসে যায়
পর্দার ঢেউ অবহেলিত সুর সভ্যসমাজ শোনায় –––
                      সুশীল-মেয়ে বাজারি-মেয়ের গল্প।
অনাথালয় হাতে নিয়ে ফুল স্বাগত শুভসকাল
পরিচ্ছন্ন বাতাসে দোল দেয় জুঁই মাধবীলতাকুঞ্জ...


       

  

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন