পান্ডুলিপি
(১)
তারপর আবার প্রেমের কথা বলব আমরা প্রেমের
কবিতা লিখব আবার স্কুলে যাওয়ার মেঠো রাস্তা থেকে ধুলো কুড়বো... মোজা থেকে খুলে নৌকো
বানিয়ে জুতোদের ছেড়ে দেব বৃষ্টির জলে যেখানে যাবে যাক তারপর আবার একদিন খোঁজ নেব কী
কথা বলেছি প্রথম দিন খোঁজ নেব ঠিক কত হাজার পাতা সেদিন ঝরেছিল ঝরা বাদলের দেশে এমনই
এক নাজুক সময়ে কে যেন বলল, 'আসুন, আপনার পান্ডুলিপি জমা দিয়ে যান... দেখি কী করা যায়' আমি
তো জন্মলাজুক পান্ডুলিপি জমা দিয়ে বসে থাকি চুপ ধুলো কুড়তে নামি মাঠে নৌকো বানিয়ে
জলে ভাসাতে থাকি জুতো শুধোতে পারি না 'দেখেছেন ওটা? কাজ কদ্দূর হল? ' স্মৃতি হাতড়াই নিজেকে খুঁজতে
খুঁজতে নেমে যাই বাক্সের ভিতর ঘুপচি অন্ধকারে বিড়বিড় করি তবু জিজ্ঞেস করতে ভুলে
যাই পান্ডুলিপি আমার বেঁচে আছে কিনা?
(২)
একবার সন্দেহ হল প্রবল বোধহয় চিনে
ফেলেছি আমাকে ছ্যাঁকা দিতেই সব সন্দেহ শেষ বড় বড় ফোস্কায় স্পষ্ট দেখলাম দুটো চোখ নারী
বা পুরুষ বোঝা যাচ্ছে না অন্ধকার দুটো গর্তে মুখ লুকিয়ে বারবার বলছে মাটি দিয়ে
বানানো দুনিয়ায় সবচেয়ে হিংস্র প্রাণটিও ভেঙে খান খান হয়ে যেতে পারে
(৩)
হাওয়ায় উড়ে এসে পড়ল প্রজাপতি প্রাণ
নেই তবু ডানাদুটি কাঁপছে মৃদু মৃদু খয়েরী-বাদামী ডানা উড়ে যাবে কিনা ভাবতে ভাবতে
কাঁপছিল মৃত্যুর ভারে দেহ তখন ভারি ডানা যদিবা উড়ে যেতে পারে দেহ তো যাবে না এখানে
এই বইপত্রের ভিড়ে ঠাসা ঘরে মৃত্যুর বোঝা ঘাড়ে থেকে যেতে হবে অকৃতজ্ঞ হব না আমরা যদি
একজন ছেড়ে যাই মরদেহ অন্যজনও সহমৃত হবে জীবিত সময়ে এ কথাই ঠিক করা ছিল মৃত্যুর চাপ
এত দুরূহ বোঝা যায় নি তখন ডানাদুটি কাঁপছিল না আর মৃত্যুর এই বিরামহীন স্তব্ধতা
ক্রমশ তাদের শান্ত করে তুলছিল স্থির হচ্ছিল ভালোবাসা একজন মরে গেলে মৃতের সম্মানে
অন্যজনের জীবিত থাকা প্রয়োজন এ কথা ভাবতে ভাবতে শক্তি নিংড়ে নিচ্ছিল শবের নিথর
থেকে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন