সোমবার, ১ জুলাই, ২০১৯

অমর্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায়




জন্মদিন

চোখে চোখ রেখেই,
ইতিহাস গড়তে পেরেছি,
চোখে চোখ রেখেই,
পাঠিয়েছি আত্মবিশ্বাসের কড়া ইস্তেহার,
যে পৃথিবীতে গতমাস ছিলো ভারমিলিয়নের,
 মাসে সেখানেই,
তোমার জন্মদিন,
কুয়াশার কলকাতায়,
স্বপ্নে দেখা দার্জিলিং পাহাড়ের মতো,
সেখানে ঝর্ণা হয়েই বা কোথাও,
নিঃসাড়ে বয়ে গেছো তুমি,
ঝোপ হয়ে ফুটে থাকা,
কথাদের মতো 

তুমি ফুল হয়ো, পাখি হয়ো,
লাল রঙে নুড়ি হয়ো,
টুংটাং শব্দেরা নদী হয়ে, জল হয়ে - বয়ে গেছে,
জমে থাকা অবিরাম, শিশিরের ফোঁটা দেখি,
নুড়ি-পথে ঝরে আছে,
আমি ফের শ্বাস নেবো,
জলে ভরা দুটি চোখে,
খুঁজে নেবো, শুধু খুঁজে নেবো,
একফোঁটা শুধু সেই ভালোবাসাটুকু 



রেখা-ঘর

তুমি কথা দিলে,
ঈশ্বর হবে আমার,
দু’চোখের চাহনিতেই,
সকলের সমস্ত বাসনার খবর,
জানা হবে তোমার,
তুমি কথা দিলে,
ঈশ্বর হবে আমার 
আমাদের ঈশ্বর তুমি 

আমি স্নেহভরে হেসে উঠি,
গাছ বেয়ে ফুল হয়ে ঝরে পড়ি,
শুকনোতে ফাঁপা হয়ে,
মাটিদের মতো,
ঘাসে ঝরা সোনা-রোদ,
পাকাবাড়ি, কাঁচাপথ,
দিগন্তে পাখি হয়ে,
কারা যেন উড়ে গেছে,
হাতটুকু ছোঁবো শুধু,
মেঘনার জলে দেখি,
কালবোস ঘাই মারে,
জাল ফেলে মাঝি দেখে,
রূপোলী সে শস্যের ফাঁকে,
নারীদেহ দেবী হয়ে ফুটে ওঠে,
স্বর্ণের কানপাশা যেন 

তুমি ঝড় হয়ে, বয়ে যেয়ো,
ঈশ্বরী পাটনীর মতো,
ছোট ছোট রেখা টানা,
নদীদের মতো 


স্রোত

অবাক হয়ে দেখেছিলেম,
মনে হয়েছিলো পৃথিবীটা সীমাবদ্ধ,
কেবল তোমার আর আমার দৃষ্টিতেই,
দু’এক কুচি শিশিরের মতো,
স্তব্ধ হয়ে থাকা কাচের ফোঁটাগুলোও,
চোখ বেয়ে আনাগোনা করে,
একুশ কি একত্রিশ বছর পর,
যখন হাতিবাগানে আসবো ফের,
আমার মনে পড়বে তখন,
ট্রামলাইনের বেলোয়ারি সুর,
কফি হাউসের প্রাণখোলা গান,
আর অনাদিতে মোগলাইয়ের খবর,
আমরা যে নস্টালজিয়াতেই,
ডুবে থেকে যাবো,
দু’চোখের পাতাটুকুও পড়তে পারবে না ...

সহজিয়া সাধকের মতো, ভালোবাসি,
চাঁদনির গলিগুলো মনে পড়ে,
ব্যারাকের লাল রঙা - কার্ণিশ ভেঙে যাওয়া,
বাড়িগুলো মনে পড়ে,
যেখানে বৃষ্টির মতো, ঝরে আছো তুমি,
পদ্মবনের বুকে স্ফটিকের মতো...

শহরের মায়া বাড়ে,
শহরের কথা শুনি,
আলো-জ্বলা চলভাষে, হাতে হাতে ছেপে চলি,
অপেক্ষা বেড়ে গেছে,
আমি জল হয়ে মেঘ হয়ে উঠি,
একদিন স্রোত হয়ে ভেসে যাবো বলে 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন