একটি আত্মকাহিনী
“আদর আর ভালোবাসার মধ্যে সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে। আদর করা মানেই যে তাকে তুমি মন-প্রাণ ঢেলে ভালোবেসে ফেলেছ, তা কিন্তু
নয়। এই যে, যেমন ধর, দিনের পর দিন তুমি আমি একসাথে শুই, তুমি আমাকে জড়িয়ে ধর, নইলে
তোমার ঘুম আসে না, তোমার শরীরের গন্ধ প্রতি রাতে এই যে আমার শরীরে মিলেমিশে যায়, সে কি তোমার ভালোবাসা? তা তো নয়! আমার
শরীরে একটু একটু করে ক্ষত চিহ্ন তৈরী হয়েছে... ছিঁড়ে খুঁড়ে বিষাক্ত হয়ে গিয়েছি শুধুমাত্র
তোমার বুকের ওমে, তোমার শরীরের গভীর ছোঁয়ায়। তাকেও তো কই ভালোবাসা বলতে পারি নি কোনদিন! আমি কিন্তু যন্ত্রণা নিয়েও আশ্লেষে ডুবিয়ে রেখেছি
তোমাকে সারারাত, আশ্রয় দিয়েছি, অবলম্বন দিয়েছি নিজের এই পোকাধরা
শরীরে। অথচ, কী আশ্চর্য দেখ, সকালে উঠে একটা দিনের জন্যও
ফিরে
তাকাওনি আমার দিকে, নিঃশব্দে উঠে গিয়েছ।
অবহেলা,
উপেক্ষা যে কী যন্ত্রণার, কী
কষ্টের, তা কোনোদিন বোঝনি তুমি... বোঝার মনটাই
নেই তোমার...”
ধড়ফড়
করে ঘুম ভেঙে ঋজু বিছানায় উঠে বসল। কপালে ফোঁটা ফোঁটা ঘাম… রীতিমত কষ্ট হচ্ছে নিশ্বাস
নিতে… “উফফ, কী ভয়ানক! স্বপ্ন এমনও হয়?”
তাড়াতাড়ি বাথরুমে গিয়ে ঘাড়ে মুখে জল দিয়ে ঋজু আবার
খাটে
এসে শুলো যখন, তখন মাঝরাত। পাশে তাকাতেই হাল্কা নীল রঙের নাইট ল্যাম্পের
আলোয় বুকের ভিতরটা ছ্যাঁত করে উঠল। বিছানার উপর রাখা রাত্তিরের নিত্যসঙ্গী কোলবালিশখানা…
ঘামে ভিজে নেতানো, চোপসানো, তেলচিটে একটা বস্তু, সেলাই খুলে তুলো বেরিয়ে পড়েছে ক’জায়গায়,
ওয়াড়খানাও ততধিক শতচ্ছিন্ন।
স্বপ্নের কথাগুলো হঠাৎ মনে
পড়ে গেল ওর। অন্ধকার থেকে বার বার কে যেন বলে চলেছে…
অবহেলা, উপেক্ষা যে কী যন্ত্রণার, কী
কষ্টের, তা কোনোদিন বোঝনি তুমি... বোঝার মনটাই নেই তোমার...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন